Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্লিজ ফুটবলকে বাঁচান’

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : প্রখ্যাত ক্রীড়া সংগঠক, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদেরের জোরাল আহŸান, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্লিজ ফুটবলকে বাঁচান।’
‘বাঁচাও ফুটবল’ ¯েøাগান নিয়ে দেশের মৃতপ্রায় ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে গতকাল একমঞ্চে হাজির হয়েছিলেন স্বনামধন্য সাবেক তারকা ফুটবলার, সংগঠক ও ক্লাব কর্মকর্তারা। রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মনজুর কাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশের ফুটবলকে বাঁচানোর জন্য জোরালো আহŸান জানান। অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে প্রত্যাখ্যানের আহŸান জানিয়ে বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটিতে পরিবর্তন আনার দাবি তোলেন। তারা বলেন, ‘কাজী সালাউদ্দিনের দায়িত্বকালে গত আট বছরে দেশের ফুটবল ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এই সময়ে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বাফুফেজুড়ে। এখনো সময় আছে সালাউদ্দিনের হাত থেকে দেশের ফুটবলকে রক্ষা করার।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপস্থিত সাবেক খ্যাতিমান ফুটবলার ও সংগঠকরা মঞ্চে সমবেত হয়ে ‘বাঁচাও ফুটবল’ ¯েøাগান দেন। সাবেক ফুটবলারদের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু, প্রতাপ শঙ্কর হাজরা, গোলাম সারওয়ার টিপু, শামসুল আলম মঞ্জু, মঈন আহমেদ, আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, কোহিনুর রহমান, আবদুল গাফফার, মোহাম্মদ মহসিন, শেখ মোহাম্মদ আসলাম, মোশারফ বাদল, খন্দকার ওয়াসিম ইকবাল, কায়সার হামিদ, শফিকুল ইসলাম মানিক, সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, মাসুদ রানা, মোহাম্মদ আলমগীর, ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব, মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, সাইফুর রহমান মনি, মিজানুর রহমান ডন, মুরাদ আহমেদ মিলন, বখতিয়ার উদ্দিন, রিয়াদ ও জালাল উদ্দিন। সংগঠকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মনজুর কাদের, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, মনজুর হোসেন মালু, মোস্তাকুর রহমান, নিসার উদ্দিন আহমেদ কাজল, একেএম মুমিনুল হক সাঈদ, আবু হাসেন চৌধুরী প্রিন্স, আশফারুজ্জামান সোহরাব, নাসিরুল ইসলাম মল্লিক পিন্টু, গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর, মবিনুল ইসলাম, আবদুর রব মাহবুব, আনোয়ারুল করিম হেলাল, এজাজ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, মোস্তাফিজুর রহমান ও আবদুল মান্নান।
অনুষ্ঠানে সাবেক ফুটবলার ও সংগঠকরা মনজুর কাদেরকে বাফুফের আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচন করতে আহŸান জানান। কিন্তু এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক সম্মতি দেননি মনজুর কাদের। তিনি বলেন, ‘অতীতের মতো আমি সব সময় ফুটবলের জন্য কাজ করে যাবো। বাফুফে সারাদেশে জেলা ফুটবল আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে। কাজী সালাউদ্দিনের কমিটি গত আট বছরেও একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা দাঁড় করাতে পারেনি। তাদের ব্যর্থতা দেশের ফুটবলকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ফুটবল উন্নয়নের জন্য বাফুফের বর্তমান কমিটির কর্তাদের প্রত্যাখান করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বাফুফেকে একটি ফুটবল একাডেমী দিয়েছেন। কিন্তু কি হয়েছে। মাঠ থেকে ফুটবল এখন টেবিলে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বিগত দু’আসরে নিš§মানের বিদেশী দল এনে জাতির জনকের নামকে অপমান করা হয়েছে।’ মনজুর কাদের আরো বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো যে, উনার নাম ভাঙিয়ে আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে যেন কেউ কোন সুবিধা নিতে না পারে। তিনি যেন এ ব্যাপারে সতর্ক থাকেন।’
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু বলেন, ‘বাফুফের কর্মকর্তাদের দশা এখন বানর নাচের মতো। বানর নাচ দেখলে যেমন হাসি পায়, ঠিক তেমনি তাদের অবস্থা দেখলেও হাসি আসে। বাফুফের আগামী সভাপতি পদে যোগ্য ব্যক্তিকে আমরা দেখতে চাই। সংগঠনের নেতৃত্ব যদি হয় দুর্বল, তাহলে সেটা সচল থাকে না। বাফুফের বর্তমান নেতৃত্ব দুর্বল, তাই তাদের কাজে গতি নেই।’ প্রতাপ শংকর হাজরা বলেন, ‘বাফুফের সর্বশেষ নির্বাচনে যে ধারায় আরেক সভাপতি প্রার্থীকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এবার যেন তা না হয়।’ গোলাম সারওয়ার টিপুর কথা, ‘ছাত্র ভালো হলেই যে তিনি শিক্ষক হিসেবে সুনাম কুড়াবেন, এমনটা নয়। সালাউদ্দিনের দশা হয়েছে তাই। খেলোয়াড়ী জীবনে ভালো ফুটবলার ছিলেন বলেই সংগঠক হিসেবে যে তিনি ভালো হবেন-তা ভাবা বোকামি।’ শামসুল আলম মঞ্জু বলেন, ‘ফিফা সভাপতি সেপ বø্যাটারকে একদিনের জন্য ঢাকায় এনে সালাউদ্দিন ব্যয় দেখিয়েছেন ৯২ লাখ টাকা। আসলে এই টাকা কোথায় গেছে? তা খতিয়ে দেখলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
শেখ আসলামের কথা, ‘এখন ফুটবলের নামে কি হচ্ছে? ফুটবলের সর্বনাশই এখন আমাদের দেখতে হচ্ছে।’ কায়সার হামিদ বলেন, ‘সালাউদ্দিনের এরকম বহুরূপী কীর্তিকলাপ আমরা দেখেছি। মিডিয়াতেও ফলাও করে প্রচার হয়েছে তার ৫২ কোটি টাকা গড়মিলের খবর। আসুন আমরা সবাই মিলে ফুটবলকে বাঁচাই।’ আবদুল গাফফারের কথা, ‘কেন ফুটবল হারিয়ে গেছে? আসলে গত আট বছরে বাফুফের বর্তমান কমিটি কিছুই করতে পারেনি। ’৭০, ’৮০ এবং ’৯০ দশকের সেই ফুটবল আজ মৃত প্রায়। কিভাবে এই মৃতপ্রায় ফুটবলকে টেনে তুলতে হবে, তাই এখন আমাদের ভাবতে হবে। সে সময় এসে গেছে।’
সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির বলেন, ‘সালাউদ্দিনের পদত্যাগ করা উচিত। আট বছরে তার কি অর্জন? আসলে তার লজ্জা নেই। আবারও নাকি তিনি নিজের আসনে থাকতে চান। ফুটবলের নয়, নিজের উন্নতি করার জন্যই তিনি বার বার আসেন দায়িত্বে।’ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘বাফুফেতে নতুন নেতৃত্ব সময়ের দাবি। বর্তমান নেতৃত্ব ফুটবলকে শুধু পেছনে ঠেলে দিয়েছে। তাছাড়া সালাউদ্দিন ভাই এদেশের কোচদের সম্মান করেন না। যার প্রমাণ ১৯৮৪ সালে কোচ মরহুম আলী ইমামকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়া।’
বাফুফের সাবেক সহ-সভাপতি মনজুর হোসেন মালু বলেন, ‘আমরা সালাউদ্দিনকে যে দৃষ্টিকোণ থেকে বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত করেছিলাম পরবর্তীতে তা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তিনি নানা বিতর্কের জš§ দিয়েছেন, অনিয়ম করেছেন। বাফুফের অর্থ লুটপাট করেছেন।’ আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি ও ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘ক্লাবগুলোকে হত্যা করার জন্যই বাফুফের বর্তমান কমিটি কাজ করছে। যখন প্রিমিয়ার লিগের ১১টি দলই ঢাকার, তখন কোন স্বার্থে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) চট্টগ্রামে হলো। আমার বিশ্বাস, আমরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে এবার বাঁচবে ফুটবল।’ বাড্ডা জাগরণীর সংসদের সহ-সভাপতি আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্সের কথা, ‘নানারকম জালিয়াতি চলছে বাফুফে নির্বাচনকে ঘিরে। বিতর্কিত মাহফুজা আক্তার কিরণ অবৈধ ভাবে বাড্ডা জাগরণীর কাউন্সিলরশিপ নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ক্লাব ব্যবস্থা নেবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্লিজ ফুটবলকে বাঁচান’
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ