পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : কমলাপুরে মানুষ আর মানুষ। লম্বা লাইন স্টেশনের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। ২৩ টি কাউন্টার থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। প্রতিটি কাউন্টারের লাইনে শত শত মানুষ। রেল কর্মচারীদের মতে, এর আগে কখনও এতো মানুষ দেখা যায় নি। অন্যদিকে, বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দিনে গতকাল সকালের দিকে গাবতলীতে ভিড় ছিল। অন্যান্য বারের মতো কাউন্টার খুলতে না খুলতেই টিকিট শেষ! মহাখালী, সায়েদাবাদ ও ফুলবাড়ীয়া টার্মিনালে অগ্রিম টিকিটের জন্য ভিড় ছিল না বললেই চলে। এ হিসাবই বলে দিচ্ছে আসন্ন ঈদে ট্রেনের উপর ঘরমুখি মানুষের চাপ আগের তুলনায় অনেক বাড়বে।
কমলাপুরে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বিক্রি করা হয়েছে আগামী ২৭ আগস্ট ভ্রমণের টিকিট। ওই দিন আবার ঢাকা-রাজশাহী রেলপথের সিল্কসিটি এবং ঢাকা-রংপুরের রংপুর এক্সপ্রেসের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন। সে কারণে এই দুই ট্রেনের অগ্রিম টিকিট দেয়া হয় নি। এরপরেও বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছে টিকিটের জন্য। ভোরে এই লাইন দীর্ঘ হতে হতে স্টেশনের সীমা ছাড়িয়ে যায়। রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেসের টিকিটের জন্য লাইনে অপেক্ষমান বেসরকারি চাকরিজীবী মাহমুদ হোসেন বলেন, প্রতিবার বাসেই যাই। এবার মহাসড়কের অবস্থা দেখে ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টিকিট পাবো কি না জানি না। পেলে ভালো লাগবে। দিনাজপুরের যাত্রী সোহরাব হোসেন বলেন, গতবারেও প্রথম দিনে এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে চারটি টিকিট পেয়েছিলাম। তিনি বলেন, ট্রেনে যাওয়া নিরাপদ ও আরামদায়ক। তাছাড়া এবার সড়ক-মহাসড়কের অবস্থাও ভালো না। সে কারণেই কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, আজ যারা লাইনে আছেন, আশা করছি সবাই টিকিট পাবেন। তিনি জানান, কমলাপুর থেকে প্রতিদিন ৩১টি ট্রেনের ২২ হাজার ৪৯৬টি টিকিট বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ অনলাইনে, ৫ শতাংশ ভিআইপি, ৫ শতাংশ রেলওয়ে কর্মকর্মতা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ। বাকি ৬৫ শতাংশ টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। এবার ট্রেনে চাপ একটু বেশি বলে জানান তিনি। গতকাল বিকালে কমলাপুর স্টেশনে ঘুরে গত ঈদের তুলনায় অনেক বেশি টিকিট প্রত্যাশি দেখা গেছে। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত দুটি লাইনেও ছিল উপচে পরা ভিড়। মহিলাদের লাইনে আগের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক টিকিট প্রত্যাশি রয়েছেন বলে কর্তব্যরত রেল কর্মচারিরা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, গতকাল থেকে দুরপাল্লার বাসেরও অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। চাহিদা মতো টিকিট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অনেকে আগের দিন বৃহস্পতিবার রাত থেকে কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে টিকিট দেয়া শুরু হলে রাতে অপেক্ষমানরা টিকিট পেয়েছেন। বাকিরা পাননি। রাজিব নামে এক যাত্রী জানান, তিনি আগের দিন রাত ১০টা থেকে লাইনে ;াঁড়িয়ে ছিলেন। সে কারনে টিকিট পেয়েছেন। সকালে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে থেকে কিছু যাত্রী টিকিট পেলেও বাকিরা পায় নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাস ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের এক নেতা বলেন, অনেক কোম্পানী অনলাইনে টিকিট ছেড়েছে। আবার কয়েকটি কোম্পানীর সাথে এজেন্টদের চুক্তি থাকায় কাউন্টার থেকে সব টিকিট দেয়া সম্ভব হয়নি। বাস মালিকরা জানান, বেশিরভাগ যাত্রীই ৩০ এবং ৩১ আগস্টের টিকিট চান। এই দুই দিনের বাইরে তেমন চাহিদা নেই। হানিফ এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সামাদ বলেন, ২ সেপ্টেম্বরকে ঈদ ধরে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছি। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চাপ রয়েছে ৩০ ও ৩১ আগস্ট। এই দুই দিনে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়বেন বলে মনে হচ্ছে। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস হচ্ছে ৩১ আগস্ট। বাস মালিকরা জানান, দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারনে সড়ক-মহাসড়কের বেহাল দশার কারনে অনেকেই এবার বাসে ভ্রমণ করবেন না। তারা ঝুঁকছেন ট্রেনের দিকে। আবার মহাসড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় অনেক মালিকও উত্তরাঞ্চলে বাস চালাতে চাচ্ছেন না।
অপরদিকে, ফুলবাড়ীয়া, সায়েদাবাদ ও মহাখালী টার্মিনালে অগ্রিম টিকিটের জন্য তেমন কোনো ভিড় ছিল না প্রথম দিনে। ফুলবাড়ীয়া টার্মিনালে টিকিট কিনতে আসা একজন যাত্রী বলেন, পিরোজপুরের নাজিরপুগামী দোলা পরিবহনের টিকিট নিতে আসলাম। আগামী ৩১ আগস্টের তিনটি টিকিট সংগ্রহ করেছি। এবারের মত ফাঁকা কখনো দেখিনি। দোলা পরিবহনের বিক্রয়কর্মী নুর হোসেন বলেন, প্রথমদিন কাউন্টারে বিক্রির জন্য রাখা ৫০০ টিকিটের মধ্যে বিক্রি হয়েছে ৫০টি টিকিট। সায়েদাবাদ টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, সায়েদাবাদে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় না। যাত্রার আগে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করে থাকে। মহাখালী টার্মিনালের এক মালিক জানান, প্রথম দিনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হলেও গতবারের মতো চাপ নেই। তিনি বলেন, এবার যাত্রী চাপ অনেক কম হবে বলেই মনে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।