Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

টানা বর্ষণে কুষ্টিয়ার মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার বিধ্বস্ত

| প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম


এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে : মাত্র কদিনের টানা বর্ষণে কুষ্টিয়ায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার বিধ্বস্ত হয়েছে। কাজের গুনগত মান খারাপের কারণে হাজারও খানাখন্দ আর বড় বড় গর্তে ছেয়ে গেছে এ দুটি সড়ক। শত শত যানবাহন প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এ সড়কে। সড়ক বিভাগের হিসেবে দুই সড়কে ক্ষতির পরিমান প্রায় ৪০ কোটি টাকার বেশি। এ সড়ক সংস্কারের নামে অর্থ লোপাটের অভিযোগও আছে।
জানা যায়, দেশের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ৩২ জেলায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগের একমাত্র পথ এই মহাসড়ক। সড়ক বিভাগের হিসেব মতে এই মহাসড়কে প্রতিদিন ১১ হাজারেও বেশী যানবাহন চলাচল করে। এ কারণে এ মহাসড়ক দুই বঙ্গের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক কুষ্টিয়া অংশ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের বুক জুড়ে শুধু বড় বড় গর্ত খানাখন্দ। বিশেষ করে কুষ্টিয়া শহরের বারখাদা ত্রিমহোনী থেকে শুরু করে ভেড়ামারা ১১মাইল পর্যন্ত এবং শহরের মজমপুর গেইট থেকে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। এসব এলাকায় সড়কের প্রায় বেশিরভাগ কার্পেটিং উঠে গেছে। এতে রাস্তায় সৃষ্ট গর্তে বৃষ্টির পানি জমে যান চলাচলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রাণের ভয় উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করছে এই সড়কে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানী।
স্থানীয় পরিবহন চালকেরা জানান, এসব রাস্তা নামেই জাতীয় মহাসড়ক, আসলে এই রাস্তার কোন মা-বাপ নেই। সকালে গাড়ী নিয়ে বের হয়, রাস্তার যে অবস্থা দিন শেষে বাড়ি ফিরবো কিনা ঠিক নেই। জীবন হাতে করে গাড়ী চালাতে হয়। এই রাস্তায় গাড়ী চালানো খুব ঝুঁকিপূর্ণ। ভাঙা রাস্তার কারণে গাড়ীর খুব ক্ষতি হচ্ছে, ভাড়া মেরে যা পাওয়া যায় তার বেশির ভাগই গাড়ী মেরামতে খরচ হয়ে যাচ্ছে।
আর সাধারণ মানুষের অভিযোগ প্রতি বছরই ছোট বড় সংস্কার কাজ করা হয়। মাত্র মাস খানেক আগে সড়কের বিভিন্ন অংশে সিলকোড দেয়া হয়। এখন তার কোন চিহৃ নেই। এসব কাজেও প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তারা। গত কিছু দিন যাবত বিধস্ত সড়ক মেরামতে নামে কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বড় বড় গর্তে ইট বালু ফেলে ঢাকার চেষ্টা করা হয়। বড় গর্তগুলোতে ইট বালু ফেললেও ছোট গর্ত গুলো সেভাবেই থেকে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে যানবাহনের চাকার আঘাতে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হতে সময় লাগবে না বলে জানান সড়ক বিভাগের কর্মচারীরা। কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা সড়ক বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংস্কার কাজ করে সড়ক ভাল রাখা যাচ্ছে না। বড় বড় ভারি যানবাহন চলায় সড়ক লোড নিতে পারছে না। বৃষ্টিতে চাকার আঘাতে সড়কে বড় বড় গর্ত হয়ে যাচ্ছে। আপাতত আমরা ইট বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করছি। আবহাওয়া ভাল হলে সংস্কার কাজ করা হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে গত ২ বছরে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক সংস্কারে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। সর্বশেষ গত কয়েক মাস আগেও এ দুটি মহাসড়ক সংস্কার করা হয়। এছাড়া জরুরী মেরামতের কাজতো সারা বছর লেগেই আছেকুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, অতি বৃষ্টিতে সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সংস্কার কাজ চলছে। আবহাওয়া ভাল হলে আমরা সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলো যান চলাচলের উপযোগী করতে কাজ করবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ