Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বসংস্থার সর্বোচ্চ পদে এই প্রথম প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন নারীরা

এবার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের মহাসচিব বাছাই

প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : জাতিসংঘ মহাসচিব বাছাই প্রক্রিয়ায় এই প্রথমবারের মতো পরিবর্তন আসছে। এবার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বেছে নেয়া হবে জাতিসংঘ মহাসচিব। নতুন প্রক্রিয়ায় প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে ওই পদের প্রত্যেক প্রার্থীর সঙ্গে দুই ঘণ্টা ধরে কথাবার্তা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব চালাতে পারবেন জাতিসংঘের সদস্য সব দেশের প্রতিনিধিরা। তারই ভিত্তিতে বেছে নেয়া হবে বান কি-মুনের উত্তরসূরিকে। উল্লেখ্য, বর্তমান মহাসচিবের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরই। অপরদিকে, এবারই প্রথম মহাসচিব পদে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন নারীরাও।
জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর পার হয়ে গেছে ৭০ বছর। তারপরও গণতন্ত্র আসেনি জাতিসংঘের মহাসচিব (সেক্রেটারি জেনারেল) পদের বাছাই প্রক্রিয়ায়। বিগত ৮ জন মহাসচিব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকেই চূড়ান্ত ব্যক্তিকে বাছাই করা হতো। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থার প্রচলিত এই নিয়মের বিরোধিতা করে আসছিল বেশ কিছু দেশ। তাই সেই রীতিই এবার বাতিল হতে যাচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিকে পর্যায়ক্রমে মহাসচিব হিসেবে বেছে নেয়ার রীতি ১৯৬১ সাল থেকে রয়েছে জাতিসংঘে। এশিয়ার বান কি-মুনের পর এবার পূর্ব ইউরোপের (বিশেষ করে বুলগেরিয়া) কারো পালা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে (জেনারেল অ্যাসেম্বলি) প্রেসিডেন্ট মোজেন্স লিকেটফট ক’দিন আগে এই নতুন নিয়ম ঘোষণা করেন। এই পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক ও পটপরিবর্তনকারী আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে প্রার্থী হিসেবে যারা নাম জমা দেবেন তাদের সবার সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই ব্যক্তিগতভাবে কথা বলবেন তিনি। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকৃত নামগুলোও ভোটাভুটির মাধ্যমে বাতিল করা যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না পরিষদ নিজেদের পছন্দের লোকের নাম ঘোষণা করে। তবে নিরাপত্তা পরিষদের এ রকম ভেটো দেয়ার পরিস্থিতি উদ্ভব হবে না বলেই আশা মোজেন্সের। তিনি জানান, সব সদস্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাউকে বেছে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদও বিনা আপত্তিতে সেই নামটি গ্রহণ করবে। ওই পদে থাকার মেয়াদ পাঁচ বছর। তবে সদস্যরা দাবি করলে তা বাড়ানো যেতে পারে।
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, আন্তর্জাতিক নাগরিক সংগঠনগুলোর চাপের ফলে এবার হয়তো কোনো নারী বসতে যাচ্ছেন জাতিসংঘের ওই সর্বোচ্চ পদে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়া ছয়জনের মধ্যে তিনজন নারী হলেনÑ ইরিনা বোকোভা (বুলগেরিয়ান, ইউনেস্কো প্রধান), ভেসনা পিউসিক (ক্রোয়েশিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী), নাটালিয়া ঘারম্যান (মালদোভার কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী)। পুরুষ প্রার্থীরা হলেন এস কেরিম (মেসিডোনিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী), ইগর লাকসিক (মন্টেনিগ্রোর সাবেক প্রধানমন্ত্রী) এবং দানিলো টার্ক (সেøাভেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট)।
জাতিসংঘের মহাসচিব সংস্থাটির সচিবালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি জাতিসংঘের প্রধান মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেন।
১৯৪৫ সালে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর সর্বোচ্চ পদ হলো মহাসচিব। সংস্থাটির বর্তমান মহাসচিব হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক বান কি-মুন ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে কোনো বিরোধিতা না আসায় ২০১১ সালের ২১ জুন তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। মুন জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব। তিনি দ্বিতীয় এশীয় নাগরিক, যিনি জাতিসংঘের মহাসচিব হয়েছেন। এর আগে মিয়ানমারের উ থান্ট ১৯৬১ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংস্থাটির মহাসচিব ছিলেন। ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর গ্ল্যাডওয়েন জেব, ট্রিগভে হাভডেন লি, ড্যাগ হামারশোল্ড, উ থান্ট, কুর্ট ওয়ার্ল্ডহেইম, জ্যাভিয়ার পেরেজ দ্য কুয়েলার, বুট্রোস বুট্রোস ঘালি, কফি আনান এবং বর্তমানে মুন এই পদ অলঙ্কৃত করেছেন। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বসংস্থার সর্বোচ্চ পদে এই প্রথম প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন নারীরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ