পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দর-এর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে দুটি পাইলট ভ্যাসেল ও ২টি হেভি ডিউটি স্পীড বোট নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা হচ্ছে আজ। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রায় ১১৫ কোটি টাকার তহবিলে এ ৪টি অত্যাধুনিক নৌযানের ‘কিল-লে’র মাধ্যমে নির্মাণ কাজের সূচনা করবেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী মোঃ শাজাহান খান। আজ (শনিবার) বিকেলে খুলনা শিপইয়ার্ডে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আশোক মাধব রায় ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর জাহাঙ্গীর আলম-বিএন। খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর আনিসুর রহমান মোল্লা বিএন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উচ্চ পর্যায়ের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
পায়রা সমুদ্র বন্দর এলাকায় দেশী-বিদেশী পণ্য ও কন্টেইনারবাহী নৌযান সমূহের নিরাপদ চলাচলসহ দিক নির্দেশনার লক্ষ্যে পাইলট সার্ভিস প্রদান ছাড়াও নিরাপত্তা টহল কাজে এসব নৌযান ব্যাবহার করা হবে। আগামী ২০ মাসের মধ্যে খুলনা শিপইয়ার্ড নৌযানগুলোর নির্মাণ শেষে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ভিয়েতনামের একটি বিখ্যাত ডিজাইন হাউজ-এর নকশায় ঢাকার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সহযোগিতায় নির্মিতব্য দুটি পাইলট ভ্যাসেল দেশের সমুদ্র বন্দর ও পোতাশ্রয় সংলগ্ন এলাকায় এক নাগাড়ে দীর্ঘ সময় পাইলটিং কর্মকাÐ সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ এসব নৌযানের দৈর্ঘ প্রায় ১২০ ফুট, প্রস্থ ২৫ ফুট। গভীরতা প্রায় সাড়ে ১২ ফুট এবং ড্রাফট সোয়া ৫ ফুট। ১৪১ মেট্রিক টন পানি অপসারণ করে ঘন্টায় ২৪ নট বেগে এসব পাইলট ভ্যাসেল একনাগাড়ে প্রায় ১২শ’ মাইল নৌপথে পাইলট সার্ভিসসহ জরিপ পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।
স্পেনের ‘গসকর’ ব্রান্ডের ১৮শ’ অশ্ব শক্তির ২টি করে ইঞ্জিন সমৃদ্ধ নৌযানগুলোতে আমেরিকার ‘ক্যাটারপীলার’ ব্রান্ডের দুটি জেনারেটর সংযোজন করা হবে। ফ্রান্সের ‘ব্যুরো অব ভেরিটাস’ নৌযানগুলোর নির্মাণ কাজের জরিপ ও সম্পূর্ণ তদারকি করবে। পাইলট ভ্যসেলগুলোতে স্থায়ী ১৪ জন জনবল ছাড়াও ১২ জন পাইলট বহন করবে। নৌযানগুলোতে অত্যাধুনিক ‘ইকো সাউন্ডার’ ছাড়াও ‘ডিজিপিএস রিসিভার’ এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক পাইলট সরঞ্জামাদী সংযোজন করা হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার একটি আধুনিক ডিজাইন হাউজ-এর নকশায় ঢাকার একটি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় পায়রা বন্দরের জন্য একই সাথে দুটি হেভী ডিউটি স্পীড বোট নির্মাণ কাজেরও সূচনা হচ্ছে আজ। উপকূলীয় এলাকায় টহল ও পোতাশ্রয় এলাকায় নিরাপত্তা বিধানসহ সব ধরনের সন্ত্রাস ও চোরাচালান বিরোধী কর্মকাÐে অংশ নেবে দ্রæত গতিসম্পন্ন এসব হেভী ডিউটি স্পীড বোট। এসব নৌযান বন্দর উপকূল এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পায়রা সমুদ্র বন্দরকে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বন্দরের স্বাভাবিক ও নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি তা আরো গতিশীল করতে দুটি পাইলট ভ্যাসেল ও দুটি হেভী ডিউটি স্পীড বোট কার্যকরি ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাাখবে এগুলো। এসব হেভী ডিউটি স্পীড বোটের দৈর্ঘ ১১৫ ফুট, প্রস্থ ২২.৬৫ ফুট, গভীরতা প্রায় ১২ ফুট এবং ড্রাফট প্রায় সাড়ে ৬ ফুট। প্রায় ১৮৭ মেট্রিক টন পানি অপসারণ করে ঘন্টায় ২৫ নট বেগে স্পীড বোটগুলো একনাগাড়ে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রম ও টহলদানে সক্ষম হবে। আামেরিকার ‘কামিনস’ ব্রান্ডের আড়াই হাজার অশ্বশক্তির ২টি করে ইঞ্জিন ও ১৩৯ কিলোওয়াট ক্ষমতার দুটি জেনারেটর এসব স্পীডবোটে সংযোজন করা হবে। ২১ জনবল সমৃদ্ধ নৌযান দুটি একনাগাড়ে দেড় হাজার কিলোমিটার নৌপথে টহল প্রদানে সক্ষম। এসব স্পীডবোটে অত্যাধুনিক যোগাযোগ রক্ষায় ‘ভিঅইচএফ’ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়াও ‘ডিজিপিএস’ রিসিভার থাকছে।
এসব বিশেষায়িত নৌযান নির্মাণের মাধ্যমে খুলনা শিপইয়ার্ড দেশের নৌ নির্মাণ শিল্পকে এক ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কারিগরি ও অর্থনৈতিকভাবে খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক মাপকাঠি অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থ বছরে এযাবতকালের সর্বোচ্চ প্রায় ৭০ কোটি টাকা মুনফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে ‘পায়রা বন্দর’-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৩-এর ১৯ নভেম্বর। গতবছর ১৩ আগস্ট বন্দরটির বাণিজ্যিক পরিচালন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পায়রা বন্দর সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের আর্থÑসামাজিক ব্যবস্থায়ও ধীরে ধীরে বিশেষ অবদান রাখতে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।