পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা আনতে এবয় অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকাতে দেশের ৩৬ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন গণশুনানির আওতায় আসছে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা আসবে, অন্যদিকে ঠেকানো যাবে অনিয়ম-দুর্নীতি, ভর্তি জালিয়াতি, ভুয়া সনদের চাকরি পাওয়ার ঘটনা। এই শুনানিতে শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক প্রতিনিধি, গর্ভনিং কমিটির সদস্যসহ ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সবার মতামত নেয়া হবে। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের উপস্থিতি, ক্লাস রুম ও শিক্ষার পরিবেশ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমের অবস্থা, ল্যাবের অবস্থাও আসবে লাইভে সম্প্রচার হওয়া গণশুনানিতে। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছে। আজ দেশের ১১টি জেলায় ১১০টি শিক্ষাú্রতিষ্ঠানের ডিভিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানির উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
ডিআইএ সূত্রে জানা গেছে, আজ নোয়াখালীর চাটখিল, কক্সবাজারে চকোরিয়া, বরিশাল সদর, টাঙ্গাইল সদর, খুলনা সদর, যশোর সদর, ঢাকায় দোহার উপজেলা, সিলেট সদর, গোপালগঞ্জ কোটালিপাড়া, নীলফামারি সৈয়দপুর ও চাপাইনবাবগঞ্জ সদর এই ১১টি জায়গায় এই কার্যক্রমের উদ্ধোধন হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে চলবে এ ডিজিটাল গুণশুনানি।
ডিআইএ কর্মকর্তারা বলছেন, পরিদর্শন ও মনিটরিং কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত দেয়ার সুযোগ দেয়ায় গণশুনানির অন্যতম উদ্দেশ্য। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা, অনিয়ম-দুর্নীতি, ভর্তি জালিয়াতি, ভুয়া সনদের চাকরি ঠেকানো যাবে এ গণশুনানির মাধ্যমে। গণশুনারি ব্যাখ্যা দিয়ে ডিআইএ যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, দেশের ১১টি উপজেলায় আমাদের একাধিক পরিদর্শক ১১০টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন। তারাই এখন সেখানেই অবস্থান করছেন। তাদের সঙ্গে একটি ডিভাইস দেয়া আছে। যে কাউকে বলা হবে ডিভাইস খোলা জন্য। তারপর আমরা শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের কথা শুনবো ও মতামত চাওয়া হবে। প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় কোন অভিযোগ বা সমস্যা থাকলেও তা শোনা হবে। এগুলো অডিট রিপোর্টে আসবে। মোট কথা ওই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রম এখন অনলাইন মনিটরিং এ আওতায় আসবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আগামী ডিসেম্বরে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান যাচাই ও বার্ষিক নিরীক্ষা নতুন পদ্ধতি পিয়ার ইন্সপেকশন চালু হচ্ছে। তার আগে এ অনলাইন গণশুনানি চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মতামত, অভিযোগ সরাসরি শোনা হবে। এছাড়া পরিদর্শন করতে যাওয়া কর্মকর্তাদের ব্যাপারে ধারণা নেয়া হবে লাইভ স¤প্রচারের মাধ্যমে। এই শুনানির ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার পাশাপাশি জবাবদিহি বাড়বে। দুদক যেমন বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ভুক্তভোগীর মতামত, অভিযোগ শোনেন। ডিআইএ গণশুনানির মাধ্যমে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মতামত ও অভিযোগ শুনবে। তবে এই গণশুনানির ধরণটা হবে একটু ভিন্ন। এই শুনানিতে যারা প্রতিষ্ঠান পরির্দশন করতে যাবেন তাদের মনিটরিং এবং পারফর্মেন্স শিক্ষকদের কাছে জানতে চাওয়া হবে, যা লাইভ স¤প্রচারে ঢাকা থেকে শোনা যাবে। ডিআইএ’র পরিদর্শকরা যখন সরেজমিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যাবেন তখন শুনানি ডিআইএর অফিস থেকে অনলাইনে লাইভ স¤প্রচার করা হবে। গণশুনানিতে শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নিবেন। তাদের মতামতসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে স্বচ্চতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সুপারিশ আমলে নেয়া হবে। কোনো অভিযোগ থাকলে তাও খতিয়ে দেখা হবে। এতে করে এমপিওভুক্ত ও পাঠদানের অনুমতিপ্রাপ্ত সারা দেশের ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাব দিহিতা নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে ডিআইএ কর্মকর্তাদের সম্পর্কেও সবার ইতিবাচক ধারণা স্পষ্ট হবে। ডিআইএ কর্মকর্তারা জানান, এ বছর তারা ২৯শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন। ৩৬ হাজার প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের জন্য মাত্র ২৪ জন পরিদর্শন কর্মকর্তা ও চারজন অডিট কর্মকর্তা রয়েছেন। জনবল সংকট থাকলেও তারা রাতদিন অমানবিক পরিশ্রম করে স্বচ্ছতার সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। গত দুই বছরে চূড়ান্তভাবে ৫৩১জন শিক্ষকের ভুয়া সনদ চিহ্নিত করেছেন। তাদের এমপিও বাতিলসহ গ্রহণকৃত সরকারি বেতন-ভাতা ফেরত দিতে মন্ত্রণালয়ে সুুপারিশ করেছেন। ডিআইএর প্রতিবেদনের আলোকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। আরো ১৩১জন শিক্ষকের ভুয়া সনদ চিহ্নিত হয়েছে।
ডিআইএ কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ডিসেম্বরে চালু হওয়া পিয়ার ইন্সপেকশন বা সমজাতীয় পরিদর্শন চালুর পর এ শুনানি চালু অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। কারণ পিয়ার ইন্সপেকশনে ১১৪টি বিষয়ে মনিটরিং করা হবে অনলাইনে একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে আরো জানা যাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের পেশাদারিত্ব শ্রেণি পাঠদান মূল্যায়ন, শিক্ষকের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য (এসিআর), প্রতিষ্ঠানপ্রধানের একাডেমিক কার্যক্রম মূল্যায়ন, শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব মূল্যায়ন, ক্লাস রুটিন পর্যালোচনা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সমাবেশ ও শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ। এ ছাড়াও স্যানিটেশন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ, শিক্ষার্থীর আসন ব্যবস্থা, মিলনায়তন, পাঠাগার, বিজ্ঞানাগার, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাবের তথ্য, শিক্ষার্থীর ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা যাচাই, আয়-ব্যয় বিবরণী, সহশিক্ষা কার্যক্রম ও অভিভাবক-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।