Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আবারো কারাগারে কক্সবাজারের সাবেক ডিসি ও এডিসি

মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতি

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কক্সবাজার ব্যুরো : মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ আত্মসাত মামলায় আবারো কারাগারে গেলেন কক্সাবজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন ও সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাফর আলম। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্প কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন ও সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ জাফর আলমকে ফের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
গতকাল সোমবার বেলা পৌনে ১টার দিকে এ আদেশ দেন কক্সবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ তৌফিক আজিজ। একই মামলায় গত রোববার কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রূহুল আমিনের জামিন বাতিল করে তাকেও কারাগারে পাঠিয়েছে একই আদালত। কক্সবাজারে নিয়োজিত দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম জানান, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চিংড়ি খাতের ক্ষতিপূরণ প্রল্পে ভুয়া লোকজনের নামে প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের মামলায় হাইকোর্ট সাবেক ডিসি রুহুল আমিন ও সাবেক এডিসি জাফর আলমকে জামিন দিয়েছিল। এর বিরুদ্ধে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে জামিন বাতিল করে তাদেরকে নিম্ন আদালতে আতœসমর্পনের আদেশ দেন বিচারক। উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিম্নআদালতে আত্মসমর্পন করে পৃথক পৃথকভাবে জামিন প্রার্থনা করলে আবেদন নামঞ্জুর করে সাবেক ডিসি রুহুল আমিন ও সাবেক এডিসি জাফরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাফর আলমসহ ৩৬ জনের নামে মামলা করেন কক্সবাজারের সাবেক ভ‚মি হুকুম দখল কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান। স্পেশাল আদালতের এ মামলায় গত ৮ মে ঢাকার সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে এডিসি জাফর আলমকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ৬ মাসের জামিন লাভ করেন তিনি। পরে দুদকের আপিলের কারণে ১০ জুলাই জামিন বাতিল করে নিম্নআদালতে আত্মসমর্পনের আদেশ দেয় আদালত। এ মামলায় গত ৩ এপ্রিল দুদক টিম কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার সাবেক উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার, অ্যাডভোকেট নুর মোহাম্মদ সিকদার ও কক্সবাজারের সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির বিপরীতে ভুয়া মালিকানা তৈরি করে ক্ষতিপূরণের প্রায় ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযেগে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাফর আলম, সার্ভেয়ার কানুনগোসহ ১৩ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ২৩ জন স্থানীয় বাসিন্দাসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
মহেশখালী মাতারবড়ির কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় অধিগ্রহণ করা জমির বিপরীতে ২৩৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়। এর মাঝে ২৫টি অস্তিত্বহীন চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ৪৬ কোটি ২৪ লাখ ৩ হাজার ৩২০ টাকা ক্ষতিপূরণ নিজেদের করায়ত্তে নেয় কক্সবাজার ভ‚মি অধিগ্রহণ শাখার উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদারের নেতৃত্বে ৩৬ জনের একটি সিন্ডিকেট। কৌশলে তারা ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা তুলে নেয়। বাকি টাকার জন্য ইস্যু করা হয়েছিল আরও পাঁচটি চেক। তবে অভিযোগ উঠার পর পাঁচটি চেকের আওতায় নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের বাকি টাকা আটকে দেয়া হয়।
সুত্র জানায়, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। এতে জাপানের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা জাইকা ২৮ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা রয়েছে। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে ৭ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। বাকি তিন হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড যোগান দেবার কথা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ