পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : বিকল্প প্রস্তাব না থাকায় ভোট ছাড়াই ভিসি প্যানেল নির্বাচিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে, যে সভা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল।
শিক্ষকদের মধ্যে বিএনপি সমর্থকদের বর্জন এবং সরকার সমর্থকদের একাংশের আপত্তি এবং শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে শনিবার ভিসি প্যানেল মনোনয়নে সিনেটের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বর্তমান ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও নীল দলের আহ্বায়ক আবদুল আজিজের প্যানেল পাস হয় বলে সিনেট সদস্য শফিউল আলম ভূইয়া জানিয়েছেন।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবায়েতুল ইসলাম প্যানেলটি প্রস্তাব করেন। তা সমর্থন করেন আইন অনুষদের ডিন মো. রহমত উল্লাহ।
শফিউল আলম বলেন, নাম প্রস্তাবের পর বিকল্প কোনো প্যানেল না থাকায় সর্বসম্মতিক্রমে পাস করা হয়েছে, কোনো নির্বাচনে যেতে হয়নি।
এই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতেও গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক, তাতে হাই কোর্ট সিনেটের এই অধিবেশন স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু হাই কোর্টের আদেশ আপিল বিভাগ স্থগিত করার পর এই নির্বাচনের বাধা কেটে যায়।
এখন সিনেটে মনোনীত তিনজনের নাম যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের কাছে। তার মধ্য থেকে একজনকে ভিসি পদে নিয়োগ দেবেন তিনি। ভোটাভুটি হলে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া তিনজনের নামের প্রস্তাব যেত প্রেসিডেন্টের কাছে।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের বর্তমান মেয়াদ শেষের (২৪ অগাস্ট) আগে সিনেটে ভিসি প্যানেল নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কিন্তু রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্ধারণ না করে সিনেটে ভিসি প্যানেল মনোনয়নের এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকেই।
কয়েকজন শিক্ষকসহ ১৫ জন রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট এই সভা আটকাতে হাই কোর্টে রিট আবেদন করে স্থগিতাদেশও পেয়েছিলেন। কিন্তু আপিল বিভাগের আদেশে সভার পথ খুলে যায়।
১০৫ সদস্যের সিনেটের অর্ধেকের মতো সদস্য শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ভবনে সভায় বসেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, দুজন প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, সরকার মনোনীত পাঁচজন সরকারি কর্মকর্তা, স্পিকার মনোনীত পাঁচজন সংসদ সদস্য, চ্যান্সেলর মনোনীত পাঁচজন শিক্ষাবিদ, সিন্ডিকেট মনোনীত গবেষণা সংস্থার পাঁচজন প্রতিনিধি, অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঁচজন অধ্যক্ষ, ১০ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি ও পাঁচজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকেন সিনেটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, বর্তমানে ৫০ জন সিনেট সদস্য নেই।
সিন্ডিকেট মনোনীত গবেষণা সংস্থার পাঁচজন প্রতিনিধি, অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঁচজন অধ্যক্ষ ও ১০ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি ও পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি বর্তমান সিনেটে নেই। একে ‘খন্ডিত সিনেট’ আখ্যায়িত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নীল দলের সাদেকা হালিম, যিনি রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট হিসেবে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন।
সাদেকা হালিম বলেন, এতে গণতান্ত্রিক চর্চার ব্যত্যয় ঘটেছে। এই ভিসি তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন। সিনেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের পর রেজিস্ট্রার গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন দিতে পারতেন? তিনি দেননি, কারণ তিনি আবার ভিসি পদে বহাল থাকতে চাচ্ছেন।
নীল দলের সাবেক আহŸায়ক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, অসম্পূর্ণ সিনেটের মধ্য দিয়ে ভিসি প্যানেল মনোনয়ন করা হলে সেটি কখনোই বৈধ হবে না। এ নির্বাচন জাতির পিতার দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন।
এজন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নেতা সামাদ, যিনিও রিট আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন।
নীল দলের শিক্ষকদের মধ্যে বিরোধে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সাদেকা হালিম বলেন, এই মতবিরোধ হয়ত থাকবে কেটে যাবে। আমরা নিজের ঘরের মধ্যে নিজের পরিষ্কার করতে চাচ্ছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে পারি না।
২৫ জন নির্বাচিত গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিসহ ৫০ জন প্রতিনিধি না থাকায় ভিসি প্যানেল মনোনয়নে সিনেট অধিবেশন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের সাদা দল।
সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন খান বলেন, যথাসময়ে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন না করে এবং অন্যান্য সদস্য পদ খালি রেখে সিনেটকে অনেকাংশেই অকার্যকর করে ফেলা হয়েছে। ফলে এ অকার্যকর সিনেট দিয়ে ভিসি প্যানেল নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া সিনেট অধিবেশনের বিরোধিতা করে আসছেন। ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নির্ধারণ করে সিনেটে ভিসি প্যানেল মনোনয়নের দাবিতে শনিবার সিনেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আরেফিন সিদ্দিক জানান, ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুসারেই সিনেটে ভিসি প্যানেল মনোনয়নের অধিবেশন ডাকা হয়।
খন্ডিত সিনেটের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের মতো আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, কিছু সদস্য চলে গেলেও সিনেট চলমান থাকে।
অর্থাৎ সিনেটের কোনো ক্যাটাগরি অসম্পূর্ণ থাকলেও পুরো সিনেট অকার্যকর হবে, এমন নয়। সিনেট সব সময় কার্যকর থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।