Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দেশেই তৈরী হবে রেলকোচ

সৈয়দপুর ও রাজবাড়ীতে হচ্ছে দুটি ওয়ার্কশপ

| প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নূরুল ইসলাম : দেশেই তৈরী হবে রেলের যাত্রীবাহী কোচ ও মালবাহী ওয়াগন। এজন্য ফরিদপুরের রাজবাড়ীতে একটি নতুন ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে বিদ্যমান মেরামত ওয়ার্কশপের সাথে নতুন করে কোচ-ওয়াগন তৈরীর ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হবে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে এজন্য একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ভারতের ঋণে (এলওসি) সম্ভাব্যতা যাচাইসহ সৈয়দপুরের ওয়ার্কশপটি তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার বা ৬৯৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ৫৮৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে ভারত।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের অক্টোবরে রেলপথ মন্ত্রণালয় পরির্দশন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় তিনি রেলওয়ের কোচ ও ওয়াগন নির্মাণ ও মেরামতের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এসময় তিনি কোচ ও ওয়াগন তৈরিতে রেলওয়েকে নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ‘দক্ষিণাঞ্চলে নতুন ক্যারেজ এবং ওয়াগন কারখানা নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে। চলতি বছর শুরু হওয়া প্রকল্পটি আগামী ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন ওয়ার্কশপ নির্মাণ প্রকল্পটি চূড়ান্ত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান। ডিপিপিতে বলা হয়েছে, সৈয়দপুর ওয়ার্কশপের বছরে ৫৭০টি মিটারগেজ ও ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ ও ৪৩০টি পণ্যবাহী ওয়াগন মেরামতের সক্ষমতা রয়েছে। তবে কোচ-ওয়াগন বাড়ায় ওয়ার্কশপটির মেরামত সক্ষমতা ছাড়িয়ে গেছে। মেরামতের অপেক্ষায় থাকা কোচ-ওয়াগনের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ ওয়ার্কশপের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও প্ল্যান্টের সক্ষমতা কমছে। সূত্র জানায়, চাহিদা বাড়ায় গত তিন বছরে ভারত থেকে ২২০টি মিটার গেজ পণ্যবাহী ওয়াগন কেনা হয়েছে। আর ভারত থেকে ১২০টি ব্রডগেজ এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে ১০০টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ কোচ কেনা হয়েছে। আরও ৪০০টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ কোচ কেনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে আরও অনেক কোচ-ওয়াগন তৈরি ও মেরামত করা যাবে- ইত্যাদি বিষয় সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় উঠে আসবে। পাশাপাশি ওয়ার্কশপে বিস্তারিত নকশা ও আউটলেটও প্রণয়ন করা হবে।
অন্যদিকে, সৈয়দপুরে বিদ্যমান ওয়ার্কশপের ভেতরে পতিত জমিতে প্রস্তাবিত ওয়ার্কশপে বছরে ৬০টি কোচ তৈরি করা যাবে। এর মধ্যে রয়েছে ৪০টি মিটারগেজ ও ২০টি ব্রডগেজ কোচ। পরে এ সক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে। সূত্র জানায়, এরই মধ্যে প্রকল্পটির বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে ভারত। বর্তমানে এর ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের আমলে রেলওয়ের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য গত কয়েক বছরে ট্রেনের চাহিদা অনেক বেড়েছে। নতুন বেশকিছু রেলপথও নির্মাণ করা হচ্ছে। রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক বলেছেন, মানুষ এখন ট্রেনকে সবচেয়ে নিরাপদ ও সাশ্রয়ি যান মনে করেন। এজন্য দিন দিন ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভবিষ্যতে রেলকে গণমানুষের পরিবহন করার জন্য কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলের বেশ কিছু প্রকল্প চলমান আছে। দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে পরিবহন খাতে রেলের উন্নয়ন দৃশ্যমান হবে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ভবিষ্যতে রেলকে গতিশীল করার জন্য আরও অনেক বেশি কোচ-ওয়াগন প্রয়োজন হবে। এ চাহিদা মেটাতে দুটি ওয়ার্কশপ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতের ঋণে সৈয়দপুরে ওয়ার্কশপ নির্মাণে অতিরিক্ত কোনো জমি লাগবে না। তবে রাজবাড়ীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত সমীক্ষা করতে হবে। প্রকল্প দুটির বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে আর কোচ আমদানির পরিমাণ অনেক কমে যাবে।
১৮৭০ সালে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে ২২২ একর জমির মধ্যে ১১০ একর জমির ওপর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ প্রতিষ্ঠা করে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। সেখানে ২৬টি শপ রয়েছে- যেগুলোতে কোচের বেশকিছু সরঞ্জাম তৈরি করা হয়। ওয়ার্কশপের ভেতর আরও ১১২ একর জমি পতিত অবস্থায় রয়েছে। স্বাধীনতার আগে মেরামতের পাশাপাশি সীমিত ও পরে কিছু কোচ তৈরি করা হয় সৈয়দপুরের ওয়ার্কশপে। তবে ১৯৯৩ সালে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে আরেকটি ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হয়। দুটি ওয়ার্কশপেই কোচ ও ওয়াগনের মেরামতের কাজ চলে বলে চাহিদা মেটাতে আমদানিই একমাত্র ভরসা রেলওয়ের।



 

Show all comments
  • জমির উদ্দিন ২৫ জুলাই, ২০১৭, ২:৪১ এএম says : 0
    এর তত্তাবধায়ন সেনাবাহিনীকে দেয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Horairah ২৫ জুলাই, ২০১৭, ১১:২৩ এএম says : 0
    Pasha pashi Pahartoli Chittagong e j workshop royeche seta k o kaje Lagan:Nahayet joruri mone na korle Rajbari ta Norman na kore Pahartoli o Syedpur ta extension kore kaj kora jay ki na jachai bachai kore dekha jete pare.
    Total Reply(0) Reply
  • Shourab Khan ২৫ জুলাই, ২০১৭, ১১:২৩ এএম says : 0
    Good news
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেল

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ