মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। সামরিক সরকার প্রণীত সংবিধান অনুসারে এনএলডির নেত্রী অং সান সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় দলটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে থিন কিয়াও প্রায় নিশ্চিতভাবে জয়ী হতে যাচ্ছেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। তিনি সু চির ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্তজন হিসেবে পরিচিত। সংসদে এনএলডির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। অক্সফোর্ড গ্রাজুয়েট থিন কিয়াও সংসদ সদস্য নন। তিনি সু চির মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত দা খিন চি ফাউন্ডেশন নামের একটি দাতব্য সংস্থা প্রধান, যেটি দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সু চি প্রতিষ্ঠা করেন। মিয়ানমারের সংবিধান অনুসারে দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষ একজন, নিম্নকক্ষ একজন এবং সামরিক বাহিনী একজনসহ মোট তিন জনকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন দেবে। সংসদের এক চতুর্থাংশ আসন সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত। থিন কিয়াও নিম্নকক্ষের প্রার্থী। আগামী সপ্তাহে সংসদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। পরাজিত দুই প্রার্থী হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে এনএলডির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের প্রার্থীই জয়ী হবেন, অন্তত সবকিছু যদি ঠিকঠাক এগোয়। কিন্তু সেনাবাহিনী-সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি) সাবেক সদস্য উইন উ বললেন, এনএলডি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে এখন একটা ঠা-া যুদ্ধ চলছে। যে তিনজনের নাম প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হিসেবে উঠছে, এর মধ্যে এনএলডির প্রার্থী বিজয়ী হবে তা নিশ্চিত। হেরে যাওয়া দুই প্রার্থী দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন। তবে এনএলডির পার্লামেন্ট সদস্য তিন্ত সোয়ে বলেন, সু চির ভবিষ্যৎ যে ভালো হবে তা মনে হয় না। কেননা এটি নিশ্চিত, সেনাবাহিনী তাকে সহযোগিতা করবে না। এ পরিস্থিতি সত্যিই দুঃখজনক। এর আগে এক খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দ্বন্দ্ব বাড়ছে।
গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ভোটে বিজয়ের পর সবে শুরু হয়েছে গণতন্ত্রের পথে অভিযাত্রা। কিন্তু এরই মধ্যে প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে এ দ্বন্দ্ব। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে গণতান্ত্রিক সরকারের সাফল্য হুমকির মুখে পড়েছে। অপরদিকে, এনএলডি তার পুরোনো শত্রু সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছেÑ এমন একটা ধারণা গড়ে তোলার চেষ্টার কমতি নেই। তবে মিয়ানমারের রাজনীতিক এবং সরকারি স্তরের নেতৃস্থানীয়রা বলছেন, সেই প্রচেষ্টা অনেকটাই মøান হয়ে পড়েছে সাম্প্রতিক নানা ঘটনায়। মিয়ানমারের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের এনএলডি দলীয় এক সদস্য বলেন, নির্বাচনে বিজয়ের পর সু চি ভেবেছিলেন, তিনি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ভালোভাবেই কাজ করতে পারবেন। কিন্তু সেনাপ্রধানের সঙ্গে সর্বশেষ যে আলোচনা হলো এরপর বুঝতে পেরেছেন, তাদের সঙ্গে কাজ তিনি করতে পারবেন না।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের নির্বাচনের পরপরই দেশটির প্রবল ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর সঙ্গে সু চির আলোচনা শুরু হয়। এনএলডি সূত্র জানায়, প্রথমে ওই আলোচনা ভালোভাবে এগোলেও সেনাবাহিনীর অনমনীয় আচরণের জন্য সু চি কিছুদিনের মধ্যেই হতাশ হয়ে পড়েন। মিয়ানমারের রাজনীতিতে তাদের বড় একটি ভূমিকা আছে, এটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে দেশটির সেনাবাহিনী। অন্তত যত দিন পর্যন্ত গণতন্ত্র সুসংহত না হচ্ছে। তারা এও মনে করে, সংবিধানের দ্রুত সংশোধন দেশে একটি ক্ষতিকর দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। দীর্ঘদিনের শাসনের পর ২০১১ সালে একটি আধাসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেও সু চি যাতে প্রেসিডেন্ট না হতে পারেন, সংবিধানে সে ব্যবস্থা করে যায় সেনাবাহিনী। সু চির দুই সন্তান আর প্রয়াত স্বামী বিদেশি নাগরিক। সংবিধান অনুযায়ী স্বামী বা স্ত্রী বা সন্তান বিদেশি হলে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হওয়া যাবে না।
সংবিধানের এখন যে কাঠামো তাতে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বেসামরিক আমলাতন্ত্রের ওপর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থাকবেই। এর ফলে এনএলডি সরকারকেও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করতেই হবে। কিন্তু এর ফল যে ভালো হবে না, সাম্প্রতিক নানা ঘটনা তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সপ্তাহ দু-এক আগে পার্লামেন্টে এনএলডির এমপিরা কয়েকটি প্রকল্পে সাবেক প্রশাসনের দুর্নীতির বিষয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে একযোগে দাঁড়িয়ে পড়েন সেনাবাহিনীর মনোনীত এমপিরা। বিবিসি, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।