রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আমিনুল হক, মীরসরাই ( চট্টগ্রাম) থেকে : এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। এ সময় মীরসরাই উপজেলার হাটবাজারে ইলিশে ভরা থাকার কথা। কিন্তু তবু ও ইলিশের দেখা মিলছে না। নামে মাত্র সামান্য ছোট ইলিশ দেখা গেলে অপ্রতুলতার জন্য আকাশ ছোঁয়া দাম। তাই কিনতে পারছে না সাধারন মানুষরা। আবার ভরা মৌসুমেও এ হাহাকার বিপদে ফেলেছে জেলেদের। ঋণ করে ইলিশ শিকার ও ব্যবসায় যারা নেমেছেন, তাদের দিন দিন সুদ বাড়ছে। অন্যদিকে বাকিতে রসদ কিনে সময়মতো শোধ করতে না পেরে দেনায় ডুবছেন জেলেরা। অবশ্য এ নিয়ে জেলেদের বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে মৎস্য বিভাগ। কর্মকর্তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের মৌসুম কিছুটা পিছিয়ে গেছে। আরো কয়েক দিন পর নদীতে ইলিশের পরিমাণ বাড়তে পারে। জুলাই ও আগস্টই মূলত ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু চলতি মৌসুমে সেই পরিমাণ ইলিশ দেখা যাচ্ছে না। দিনভর নদীতে জাল ফেলে আশানুরূপ মাছ পাচ্ছেন না অধিকাংশ জেলে। বঙ্গোপসাগরের মীরসরাই উপজেলার সাহেরখালী ঘাট ইলিশের জন্য বিখ্যাত।
সীতাকুন্ডের কুমিরা আর মীরসরাইয়ের সাহেরখালীর ইলিশে সয়লাব থাকে মীরসরাই, বারইয়ারহাট, জোরারগঞ্জ, বড়দারোগারহাট, আবুরহাট, আবুতোরাব, করেরহাট সহ বিভিন্ন হাটবাজার। কিন্তু এবার কোন কোন বাজারে ২-১ খাচা মাছ ও দেখা যাচ্ছে না। কোন হাটে সামান্য ইলিশ নিয়ে জেলে পৌঁছালে ও চড়া দাম স্বত্বেও ছোঁ মেরে নিয়ে যাচ্ছে সামর্থবান ক্রেতারা।
এদিকে মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে অনেকেই অলস সময় পার করছেন বলে জানায় উপক‚লের কয়েকজন জেলে। কেউ পুরনো জাল ও নৌকা মেরামত করছেন। কেউবা আড্ডায় মেতেছেন, কেউ কেউ নৌকা ঘাটে ভিড়িয়ে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েছেন। যেখানে এ সময়টিতে তাদের সারা দিন নদীতে কাটানোর কথা। কেউ বা অন্য কোন মাছ পাওয়া যায় কিনা তার চেষ্টা করছে। একই অবস্থা মাছঘাটগুলোর ব্যবসায়ীদেরও। তারা বলছেন, গত বছরের এ সময় ইলিশের পরিমাণ কিছুটা কম থাকলেও এখনকার মতো এত কম নয়। গত বছর নদীতে গিয়ে কোনো জেলেকেই খালি হাতে ফিরতে হয়নি। আর এখন সারা দিনে এক হালি-দেড় হালি মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে খালি হাতে ফিরছেন। উপজেলার সাহেরখালী ইলিশ ঘাট এলাকায় নিমাই চরন, অনিমেশ জলদাস বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, এই সময়ে ছোট পুঁজির জেলেদের ও এরই মধ্যে ২০-২৫ হাজার টাকা দেনা হয়ে গেছে। ইলিশ পাওয়ার আশায় প্রতিদিন ধারদেনা করে নদীতে যাচ্ছেন তারা। ফলে দেনার পরিমাণ বাড়ছেই। আবার অনেকে সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা বা জাল কিনেছেন। প্রতি মাসে কিস্তি রয়েছে। সমিতিকে প্রতি ১০ হাজার টাকায় মাসে ২ হাজার টাকা সুদ দিতে হয়। মহিউদ্দিন মহাজন বলেন, জেলেদের কাছ থেকে দু-একটা করে ইলিশ নিয়ে দিন শেষে আধা ঝুড়িও হয় না। তাই মাছগুলো বরফ দিয়ে রেখে দিতে হয়। এখন এক ঝুড়ি ইলিশ মেলানোই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
ভরা মৌসুমে ইলিশের পরিমাণ এত কম হওয়ার কারণে জানতে চাইলে জেলে বা ব্যবসায়ীরা কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকেই দায়ী মনে করছে উপজেলা মৎস্য বিভাগ। তাছাড়া নদীর বিভিন্ন স্থানে পলি জমে দেখা দিয়েছে নাব্য সঙ্কট, ডুবোচর, কমে গেছে পানির প্রবাহ, ময়লা-আবর্জনায় নদী দূষণসহ নানা কারণে ইলিশের বিচরণক্ষেত্র সঙ্কুচিত হয়ে আসছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। মীরসরাই উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান বলেন, ইলিশ হচ্ছে গভীর জলের মাছ। নদীর বিভিন্ন স্থানে ইলিশের অভয়াশ্রমগুলোয় চর জেগে ওঠায় ইলিশ চলে যাচ্ছে সাগরে। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রবাহে ইলিশের সময়টা অনেক পিছিয়ে গেছে। তবে আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের দিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।