পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘ভাতে মাছে বাঙালি’ প্রবাদটি যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং মাছের আকালে মানুষের পাতে ভাতের সঙ্গে মাছ রাখা কঠিন হয়ে গেছে। জাতীয় মাছ ইলিশ যে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে কিনে খাবেন সে উপায়ও নেই। সাগরের গহিনে নিরাপত্তার অভাবে ভারত ও মিয়ানমারের দিকে মৎস্যসম্পদ চলে যায়। আবার দেশে যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে তার কিছু অংশ পুঁজার উপহার হিসেবে ভারতে পাঠানো হয়। এতে করে দেশের সাধারণ মানুষের ভাতের প্লেটে ইলিশ দূরহ হয়ে পড়ে। কিন্তু মৎস্যবিজ্ঞানীদের সুপারিশ অনুযায়ী ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে সরকারের ‘প্রজননের সময় ইলিশ ধরা’ নিষিদ্ধ উদ্যোগে সফলতা এসেছে। ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করায় এবার ডিম ছেড়েছে ৮৪ শতাংশ মা ইলিশ। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চলতি বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক মা ইলিশ নদীতে ডিম ছেড়েছে। বলা যায় ইলিশ উৎপাদনে এবার বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে।
জানা যায়, নির্বিঘ্ন প্রজনন নিশ্চিত করায় উপকূলের ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে প্রায় ৮৪ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। এরমধ্যে ৫২ ভাগ মা ইলিশ ২২ দিনের মূল প্রজননকালীন সময়ে সম্পূর্ণ ডিম ছাড়ে। পরবর্তী ৭ দিনে বাকি ৩২ শতাংশ ডিম ছেড়েছে। বিভিন্ন নদ-নদীতে তিনটি ধাপে চালানো গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ ফলাফল পেয়েছে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। এদিকে জেলে ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী জাটকা রক্ষার অভয়াশ্রম কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে এবার ইলিশ উৎপাদনে এক বিপ্লব ঘটবে। গবেষকেরা বলছেন, ইলিশে আবার সুদিন ফিরছে। মৎস্যবিজ্ঞানীদের দেওয়া সুপারিশ অনুযায়ী ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করায় এবার কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন সম্ভব হবে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) এক গবেষণায় বলা হয়, বলেশ্বর নদ দেশের ইলিশের বড় উৎস। সেখান থেকে বছরে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত ইলিশ আহরণ করা সম্ভব। বলেশ্বর নদের মোহনায় বিষখালী, পায়রা, আন্ধারমানিক ও লতাচাপলী নদ-নদী এসে মিশেছে। ওই পথ দিয়ে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ বঙ্গোপসাগর থেকে নদের উজানে প্রবেশ করে। বলেশ্বর নদের সঙ্গে পূর্ব সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খাল যেমন ভোলা নদী, বেতমোরী গাঙ, সুপতি খাল, দুধমুখী খাল ও ছোট কটকা খাল এসব সংযুক্ত। বলেশ্বর নদ হয়ে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ এসব খাল ও নদ-নদীতে প্রবেশ করে।
দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সঠিক সময়ে মা মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞায় কার্যকর ফল পাওয়া যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, সব নদ-নদীতে ইলিশ এক সময় ডিম পাড়ে না। একেক নদীতে ইলিশ একেক সময় ডিম পাড়ে। ফলে যখন ইলিশ যে নদীতে ডিম পাড়বে, সেই নদীতে তখন তা ধরার নিষেধাজ্ঞা দিতে হয়। এতে ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানীদের মতানুসারে এ অঞ্চলে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে প্রতিবছর অক্টোবরে ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। এ বছরও এ সময় ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলে। এর ফলে ৫২ শতাংশের বেশি মা ইলিশ তাদের ডিম ছেড়েছে। পরবর্তী ৭দিনে আরও ৩২ শতাংশ ইলিম ডিম ছেড়েছে। যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এই নিষেধাজ্ঞায় শুধু বিপুল পরিমাণ ইলিশ নয় অন্যান্য মাছের পোনাও দেশের মৎস্যসম্পদে যুক্ত হবে। এতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মৎস্য জীববৈচিত্র্যও সংরক্ষিত হচ্ছে।
মৎস্য অধিদফতরের দেয়া তথ্যমতে, দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল ৩.৮৮ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩.৯৫ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪.৯৭ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫.১৭ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫.৩৩ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৫.৫ লাখ মেট্রিক টন এবং গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৫.৬৫ লাখ মেট্রিক টন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ইনকিলাবকে বলেন, সরকারের চমৎকার ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন এখন বিশ্বের বিস্ময়। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জোরালো অবস্থান নিয়েছে। মা ইলিশ ও জাটকা আহরণ বন্ধ করতে আমাদের কঠোর অবস্থান। আকাশপথে মনিটরিং করে ইলিশ রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে ইলিশ উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে সরকারের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
বরিশাল থেকে নাছিম উল আলম জানান, নির্বিঘ্ন প্রজনন নিশ্চিত করায় এবার প্রজননকালে প্রায় ৮ লাখ ৫ হাজার কেজি ডিম ছেড়েছে মা ইলিশ। যার প্রস্ফুটনে দেশে এবার ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি জাটকা ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে বলে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানিয়েছেন। ফলে চলতি অর্থ বছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন প্রায় ৬ লাখ টনে পৌঁছতে পারে বলে আশাবাদী মৎস্য বিজ্ঞানীগণ। এবার ২২ দিনের মূল প্রজননকালীন সময়ে যে ৮৪ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে, তার ৩৪ শতাংশই ছিল বড় সাইজের। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের নমুনায়ন ও জরিপে দেশে বড় সাইজের ইলিশের সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন মহাপরিচালক ড. মাহমুদ।
প্রতি বছরই আশি^নের বড় পূর্ণিমার আগে পরে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উপকূলে ছুটে এসে ডিম ছেড়ে আবার সাগরে ফিরে যায়। আমাদের মৎস্য বিজ্ঞানীগণ ভোলার পশ্চিম আউলিয়া পয়েন্টÑ তজুমদ্দিন, মনপুরা দ্বীপ, পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লতাচাপলি পয়েন্টের ধলচর দ্বীপ, মৌলভীরচর দ্বীপ, কালিরচর দ্বীপ এবং মায়ানী পয়েন্টÑ মীরসরাই ছাড়াও কুতুবদিয়া পয়েন্ট এলাকায় মা ইলিশের অত্যাধিক প্রাচুর্য লক্ষ্য করে ওই ৭ হাজার বর্গকিলোমিটারকে ‘প্রধান প্রজননস্থল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ বিবেচনায় গত ৬ অক্টোবর রাতের প্রথম প্রহর থেকে ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত ২২ দিন মূল প্রজনন এলকায় সব ধরনের মৎস্য আহরণসহ সারা দেশেই ইলিশ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল।
মৎস্য অধিদফতরের মতে, দেশে উৎপাদিত ইলিশের ৬৮-৭০ ভাগই দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও উপকূলীয় এলাকায় উৎপাদন ও আহরিত হয়। দেশের মৎস্য সেক্টরে ইলিশের একক অবদান ১২ ভাগেরও বেশি।
মৎস্য অধিদফতরের মতে, ২০১৮-এর ৭-২৮ অক্টোবর আহরণ বন্ধকালে উপকূলের প্রজননস্থলসহ অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে ৪৮ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ার সুযোগ পায়। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর মতে প্রজননক্ষম মা ইলিশের হার ২০১৭ সালে ৭৩ শতাংশ থেকে ২০১৮ সালে ৯৩ শতাংশে উন্নীত হয়। পাশাপাশি এসময়ে প্রজনন সাফল্য ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়। যা এবার ৮৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৯ সালে মূল প্রজনকালীন সময়ে দেশের প্রধান প্রজনন ক্ষেত্রসমূহে পরীক্ষামূলক নমুনায়নে ৮৩ শতাংশ ইলিশের রেণুর পাশাপাশি ১৭ শতাংশ অন্যান্য মাছেরও রেণু পোনা পাওয়া যায়। ফলে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে উপকূলে অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে বলে মৎস্য বিজ্ঞানীরা মনে করেন।
‘হিলসা ফিসারিজ ম্যানেজমেন্ট অ্যাকশন প্লান’ এর আওতায় ২০০৫ সালে প্রথম প্রধান প্রজনন মৌসুমে দেশে ১০ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখা হয়। মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশে ২০১১ সালে তা ১১ দিন এবং ২০১৫ সালে ১৫ দিনে ও ২০১৬ সালে থেকে ২২ দিনে উন্নীত করা হয়। এমনকি জাটকার সংজ্ঞা পরিবর্তন করে পূর্বের ৯ ইঞ্চি থেকে ১০ ইঞ্চিতে বর্ধিত করা হয়েছে।
মূল প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন, জাটকা আহরণে ৮ মাস এবং সাগরে ৬৫ দিনের আহরণ নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশে গত দুই দশকে ইলিশের উৎপাদন ২ লাখ টন থেকে গত অর্থ বছরে প্রায় ৫.৬৫ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। যা চলতি বছরে পায় ৬ লাখ টন উন্নীত হতে পারে বলে মৎস্য অধিদপ্তর ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দায়িত্বশীল মহল আশাবাদী।
চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান জানান, চলতি বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক মা ইলিশ নদীতে ডিম ছেড়েছে। যা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে। আগামী জাটকা রক্ষার অভয়াশ্রম কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে আগামীতে ইলিশ উৎপাদনে রেকর্ড ছাড়াবে বলে স্থানীয় জেলেরা মনে করেন।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নদী কেন্দ্র চাঁদপুর এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও আবু কাউসার দিদার ইনকিলাবকে বলেন, কিছু অসাধু জেলে ইলিশ আহরণ করলেও অনুকূল পরিবেশ পাওয়ায় প্রচুর পরিমাণে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। আমরা নিষেধাজ্ঞার আগের ৭ দিন, নিষিদ্ধকালীন ২২ দিন এবং এর পরবর্তী সাতদিন বিভিন্ন নদী-নদীতে গবেষণা চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে ইলিশের লার্ভি ও জাটকা পেয়েছি। তাছাড়া আমাদের জালে ধরা পড়া অধিকাংশ ইলিশের পেটে ডিম দেখতে পাইনি। পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশের খাদ্য উপাদান রয়েছে। আশা করি, আগামীতে জাটকাকে সুরক্ষা দিতে পারলে ভবিষ্যতে ইলিশের উৎপাদনে সকল রেকর্ড ছাড়াবে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে সুরুজ আলী বলেন, এইবার মা ইলিশের অভিযানে অনেক জাউল্লা প্রশাসনের লোকদের টেহা পইসা খাওয়ায়া চুরি কইরা ইলিশ ধরছে। তারপরেও অনেক ইলিশ ডিম দিতে পেরেছে। তয় আগামীতে যদি জাটকা অভিযান ভালো কইরা দেয়, হেলে প্রচুর ইলিশ অইবো গাঙ্গে। আমরাও মাছ ধইরা দুই টেহা আয় করতে পারমু। আমগো দাবি, কোন অবস্থায় যেন জাটকা শিকার করতে না পারে কেউ।
ইলিশ গবেষক ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান, সঠিক সময়ে অভয়াশ্রম পালিত হওয়ার পাশাপাশি ঝড়, বৃষ্টিপাত এবং নদীতে প্রশাসনের কড়া নজরদারির কারণে এবছর রেকর্ড পরিমাণে ডিম ছেড়েছে মা ইলিশ। এবছর মা ইলিশ ৮ লাখ ৫ হাজার ৫১৫ কেজি ডিম ছেড়েছে। এই ডিমের যদি ৫০ ভাগ ফুটে এবং ১০ ভাগ টিকানো গেলে আগামী মৌসুমে নতুন করে অন্তত ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি জাটকা ইলিশে পরিণত হবে।
বরগুনা থেকে জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা জানান, উপকূলীয় এ জেলার নদ-নদীতে চলতি প্রজনন মৌসুমে ৬৫ শতাংশের বেশি মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পেড়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৬৫ শতাংশের বেশি মা ইলিশ মাছ সাগর উপকূলীয় নদ-নদীর মোহনায় ডিম ছেড়েছে। পরিমাণ হিসেবে প্রায় ৯ থেকে সাড়ে ৯ লাখ কেজি বা ১০৫০ মেট্রিক টন ডিম হবে। গত বছর দেশের নদী মোহনাগুলোতে ৫১.২ শতাংশ মা মাছ ডিম ছেড়েছিল। যার পরিমাণ প্রায় ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫ কেজি বা ৭৫৭ মেট্রিক টন।
লক্ষ্মীপুর থেকে এস এম বাবুল (বাবর) জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় ২২ দিনে ইলিশের ডিম ছাড়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তাছাড়া সারা বছর ইলিশ কম বেশি ডিম ছাড়ে। বেশি ডিম ছাড়ে প্রজনন সময়ে, অর্থাৎ অক্টোবর মাসের অমাবস্যা ও পূর্ণিমাতে। এই বছর ওই সময়টা ছিল বেশি পরিমাণে ডিম ছাড়ার সময়। লক্ষ্মীপুরের মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, এবছর ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার টন, যা গত বছরের চেয়ে ৩ হাজার টন বেশি। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা তার।
ফরিদপুর থেকে আনোয়ার জাহিদ জানান, প্রায় ইলিশশূন্য ফরিদপুরের পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ ও মধুমতি নদী। ফরিদপুরের ৪টি ইলিশ সমৃদ্ধ উপজেলা হলো, ফরিদপুর সদর, মধুখালী, সদরপুর, চরভদ্রাসন। এই ৪টি উপজেলার পদ্মা ও মধুমতি নদী এখন প্রায় ইলিশশূন্য। প্রজনন সময়ে ২২ দিন ইলিশ মাছ না ধরা নিষিদ্ধ থাকায় এ সময় মাত্র ৩০ শতাংশ মা মাছ ডিম ছেড়েছে বলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা মনে করছেন।
মাদারীপুর থেকে আবুল হাসান সোহেল বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় মাদারীপুর মৎস্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের ব্যাপক অভিযানের ফলে প্রজনন মৌসুমে ইলিশের ব্যাপক ডিম ছাড়ার আশা করেছে। ৫২ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ার কারণে এবার মাদারীপুরসহ মধ্যাঞ্চলে ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদানের সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।