নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : আগের উইম্বলডন শিরোপাটি জিতেছিলেন ২০১২ সালে। এরপর কেটে গেছে পাঁচটি বছর। এর মাঝে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ফাইনালেও উঠেছিলেন। কোনভাবেই শিরোপার দেখা মিলছিল না। কিন্তু বিশ্বাস হারাননি নিজের উপর থেকে। নিজের উপর থাকা অগাধ এই বিশ্বাসই অবশেষে রজার ফেদেরারকে এনে দিয়েছে ঐতিহ্যবাহী অল ইংল্যান্ড ক্লাবের রেকর্ড অষ্টম শিরোপা। আসরের বয়োজেষ্ঠ্য চ্যাম্পিয়নও এখন ৩৫ পেরুনো ‘চিরসবুজ’ ফেদেরার। ইনজুরি কবলিত ২০১৬ সালে এই ঘাসের কোর্টে যে মারিন সিলিচের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিলেন পরের বছর তাকে হারিয়েই শ্রেষ্ঠত্বের ঝাÐা গাড়লেন সুইস ম্যাস্ট্রো।
এই বয়সেও এমন অর্জন, কতটুকু আত্মবিশ্বাস প্রয়োজন সেটিই গতকাল জানালেন উইম্বলডনের রাজা, ‘সত্যিই আমি বিশ্বাস করতাম। এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে আমার দলও এটা বিশ্বাস করত। আমার তারকাখ্যাতির উত্থানটা এখান থেকে এবং তা নতুন উচ্চতায়ও উঠেছে এই কোর্ট থেকেই। এই কারণেই আমি বিশ্বাস করতাম যে, আমি আরো ভালো খেলোয়াড় হতে পারি। আমার নায়করা এই মাঠে হেঁটেছে, এই কোর্টে হেঁটেছে। তাদের কারণে আমি মনে করি, আমিও একজন ভালো খেলোয়াড় হয়েছি। এই কারণে এখানে উইম্বলডনে ইতিহাস গড়াটা সত্যিই আমার কাছে অনেক বড় কিছু।’
সেই একই পথে হাঁটতে চাওয়া তরুণ টেনিসারদে জন্য পরামর্শ দিতে ভোলেননি ফেদেরার। বললেন, ‘এটা সত্যি, প্রতিটি প্রজন্মই আলাদা। আমার সময় থেকে রাফা (নাদাল), সত্যিই আলাদা। পরের প্রজন্ম এতটা বোধহয় শক্ত সামর্থ্য নয়, যতটা অঅমরা ছিলাম। আমাদের ডিঙ্গাতে বেশ বেগ পেতে হবে।’ তবে অসম্ভব বলে মানতে নারাজ টেনিসের জীবন্ত এই কিংবদন্তি, ‘পরিশ্রম, পরিশ্রম আর পরিশ্রম- সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। এর কোন বিকল্প নেই। যারা আমাকে ছুঁতে চাও, অবশ্যই আরো বেশি অধ্যাবসায় আর পরিশ্রম করো।’
ইংল্যান্ডে প্রথম শিরোপাটি জিতেছিলেন ২০০৩ সালে। ৯ বছর পর ছুঁয়েছিলেন পিট সাম্প্রাস (২০০০) ও উইলিয়াম রেন’শর (১৮৮৯) আসরের সর্বোচ্চ সাতটি শিরোপা জয়ের রেকর্ড। তারও ৫ বছর পর সবাইকে ছাড়িয়ে উইম্বলডনের একক অধিপতি এখন ফেদেরার। এই উইম্বলডন তাকে সব দিয়েছে, ইতিহাস, ঐতিহ্য, তারকা খ্যাতি সব। সেটাও জেনেই সুইস তারকা বলেন, ‘এটা স্পেশাল, উইম্বলডন সব সময়ই আমার কাছে ফেভারিট টুর্নামেন্ট। উইম্বলডনের এই মাঠে ইতিহাস গড়ার অর্থটা আমার কাছে অনেক কিছু। এটাই বাস্তব।’
২০১৭ সালে ফেদেরার হেরেছেন মাত্র দুইটি ম্যাচ। জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ইন্ডিয়ান ওয়েলস, মিয়ামি মাস্টার্স, হেলে এরপর সদ্য উইম্বলডন। ১২ মাস আগে উইম্বলডনের আসর থেকে বিদায় নেয়ার পর ২০১৬ সালের বাকি সময়টা তার কেটেছে দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে। পুরো সময়টা কোর্টের বাইরে থেকে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন কনুইয়ের চোটের বিরুদ্ধে।
কিংবদন্তির প্রত্যবর্তনের গল্পটা হয়েছে কিংবদন্তির মত করেই। মেলবোর্নে ফিরেই জিতে নেন বছরের প্রথম গ্র্যান্ড ¯ø্যাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। নিজেকে প্রস্তুত করতে ক্লে কোর্টের মৌসুমে টানা ১০ সপ্তাহ পূর্ণ বিশ্রামে ছিলেন ফেদেরার। তিনি নিজেও কি জানতেন, তার প্রত্যবর্তনের গল্পটা এমন মধুর হতে চলেছে, ‘সত্যি বলতে, যেভাবে বছরটা চলছে তাতে আমি অবিশ্বাস্যরকম বিষ্মিত। জানতাম, আমি আবারো কিছু করতে পারি। তবে এতটা, ভাবিনি। আপনি যদি আগে আমাকে বলতেন, তুমি চলতি বছর দুটি গ্র্যান্ড ¯ø্যাম জিততে চলেছো তাহলে আমি হাসতাম। আমি বললেও লোকে এটা বিশ্বাস করত না। আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারিনি যে আমি চলতি বছর দুটি জিততে (গ্র্যান্ড ¯ø্যাম) যাচ্ছি।’
শিরোপার সাথে নিজের হারানো এক নম্বর র্যাংকিংয়েরও এগিয়ে যাচ্ছেন ফেদেরার। গতকালই উঠে এসেছেন তিন নম্বরে। এবং বছরের বাকি সময়টাতেও উন্নতির ধারা অব্যহত রাখতে চান তিনি। ৩৬ বছর বয়সে জিততে চান ২০১৮ সালের উইম্বলডনও, ‘লক্ষ্যটা অবশ্যই পরের বছর আবারো এখানে শিরোপাটা ধরে রাখা।’
সব মিলে নিজের গ্র্যান্ড ¯ø্যাম রেকর্ডটাও নিয়ে গেছেন আরো উচ্চতায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫টি গ্র্যান্ড ¯ø্যাম জয়ী রাফায়েল নাদালের চেয়েও চারটি বেশি (১৯টি)।
ফাইনালে সাত নম্বর বাছাই মারিন সিলিচকে পাত্তায় দেননি ফেদেরার, জিতেছেন ৬-৩, ৬-১, ৬-৪ গেমের সরাসরি সেটে। তার উপর আবার চোটে পেয়ে বসেছিল ২৮ বছর বয়সী সিলিচকে। দ্বিতীয় সেট চলাকালীন তো চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি এই ক্রোয়েশিয়ান, ‘সেমিফাইনালে কুয়েরির বিপক্ষেও আমি এমনটা অনুভব করেছিলোম। পায়ের তলা দিয়ে কিছু একটা যেন বয়ে যাচ্ছিল।’ ম্যাচের আগে ব্যাথানাশক ওষুধও নেন। এই অবস্থায় যে পর্বত ডিঙানো যায় না সেটাও জানতেন সিলিচ, ‘আসলে জানতাম এমন বড় একটা দিনে এই শারীর নিয়ে আমি আমার সেরাটা দিতে পারব না, কোন ভাবেই না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।