পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত শাসিত কাশ্মীরে গতকাল শনিবার কারফিউ জারি, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ এবং হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘাতপূর্ণ এ অঞ্চলে বিপুলভাবে জনপ্রিয় স্বাধীনতাকামী বুরহান ওয়ানির মৃত্যুবার্ষিকী পালনের প্রেক্ষাপটে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ভারত শাসিত কাশ্মীরের বাসিন্দারা জানান, তারা জনগণের চলাচলের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করতে দেখেছেন। এদিকে গ্রামবাসীরা জানান, তারা ঘরের বাইরে বের হলে গুলি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। খবরে বলা হয়, ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতা মুজাহিদীন বুরহান ওয়ানির মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে ভারতের প্রতি ঘৃণা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। ক্রমেই জোরদার হচ্ছে স্বাধীনতার শ্লোগান। দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও ছড়িয়েছে কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীদের স্বাধীনতার শ্লোগান। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে কাশ্মীর সমস্যা বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে ভারতের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। স¤প্রতি ভারত সফরে এসে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানও কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে মোদীকে বলে গেছেন। মোদীর সঙ্গে বৈঠকে এরদোগান বলেছেন, কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে তিনি মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী। এদিকে এসএ মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্বতশৃঙ্গ অঞ্চলটিতে স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত ডজন ডজন সশস্ত্র গোষ্ঠীর আবাস। কিন্তু গত বছরের ৮ জুলাই যখন স্বাধীনতাকামী নেতা বুরহান ওয়ানিকে গুলি করে হত্যা করা হয়, তখন থেকেই ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে বেসামরিক লোকজন ক্রমবর্ধমানহারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ২৩ বছর বয়সী বুরহান যে একটি একে-৪৭ নিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ার আলোড়ন তুলেছিল তার মৃত্যুর পর কাশ্মীরীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। কয়েক মাস ধরে গণ বিক্ষোভে প্রায় ১০০ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করা হয়েছে যার অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়। এই অঞ্চলের সরকারি বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত পেলেট বন্দুকের গুলিতে আরও অনেকেই অন্ধ হয়ে যায় যা কর্তৃপক্ষ এবং ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন জনগণের মধ্যে বিভেদকে আরো বাড়িয়ে তোলে। শ্রীনগরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তারা জুলাই থেকে আহত বেসামরিক নাগরিকদের একটি নিয়মিত প্রবাহ পেয়ে চলেছেন এবং ‘ভয়াবহ’ চোখের আঘাত নিয়ে আসা ১০০০ এরও বেশী মানুষের চিকিৎসা করেছেন। ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের একটি জনাকীর্ণ হাসপাতালে গুলিতে আহত অবস্থায় শুয়ে আছে ১৭ বছর বয়সী এক ছাত্র- ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে হাজার হাজার আহত বেসামরিক কাশ্মীরির মত সেও গত বছর কাশ্মীরের একজন জনপ্রিয় বিদ্রোহী নেতার মৃত্যুতে রাস্তায় নেমে এসেছিল। স¤প্রতি একটি জঙ্গি আশ্রয় কেন্দ্রে গোয়েন্দা তল্লাশি চালানোর জন্য সরকারী বাহিনী ছবির মত সুন্দর হিমালয়ের উত্তরাঞ্চলে তার গ্রামে এসেছিল, তখন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কিশোর বিদ্রোহীদের পালাতে সাহায্য করার জন্য বন্দুকযুদ্ধের মধ্যে নিজের শরীর পেতে দিয়েছিল। শ্রীনগর এর হাসপাতালের বিছানা থেকে সে এএফপিকে জানায়, আমি আটকা পরা যোদ্ধাদের প্রতি যখন সৈন্যরা গুলি চালাচ্ছিল তখন এর মাঝখানে লাফিয়ে পড়ে তাদের দিকে ছোড়া গুলিতে আহত হই। বিদ্রোহের নতুন উপকেন্দ্র দক্ষিণ কাশ্মীরের কিছু এলাকায় গ্রামবাসীরা সরকারের জঙ্গি বিরোধী অপারেশনের মধ্যে হস্তক্ষেপ শুরু করে। তারা সরকারি বাহিনীর দিকে পাথর নিক্ষেপ করে, বিক্ষোভ তৈরির মাধ্যমে মনোযোগ বিক্ষিপ্ত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে বিদ্রোহীদের পালানোর সুযোগ করে দেয়। কাশ্মীরের ইতিহাসবিদ সিদিক ওয়াহিদ বলেন, এটি এখন সম্মুখ মোকাবিলায় রূপ নিয়েছে। কাশ্মীরের জনগণের রাগ এবং প্রতিহিংসা এরকম আগে কখনও দেখা যায়নি। এসএ মনিটর, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।