Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টানা তৃতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে যেতে ব্যর্থ হতে পারে রিপাবলিকান পার্টি বিশ্লেষণ : নির্বাচনে পরাজিত হতে যাচ্ছেন ট্রাম্প

প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারিকে হারিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়লাভ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে ইতোমধ্যেই হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। এতে অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ৪ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট পার্টির হিলারি ক্লিনটনের কাছে হেরে যাবেন। তার মানে, টানা তৃতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে যেতে ব্যর্থ হবে রিপাবলিকান পার্টি। যদিও সুপার টিউসডেতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে রিপাবলিকান পার্টি থেকে মনোনয়নের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সঙ্গত কারণেই ট্রাম্প মনোনয়ন পেয়েছেন বলে ধরে নেয়া যায়। বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে চূড়ান্ত নির্বাচনে ট্রাম্প-হিলারির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আবার এই দু’জনের লড়াইয়ে ট্রাম্পেরই হার দেখছেন তারা। কারণ হিসেবে সবার আগে একটি গাণিতিক হিসাব তুলে ধরেছেন বিশ্লেষক জেমস ডাউনি। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম রিয়াল ক্লিয়ার পলিটিক্স’র এক জরিপে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর থেকে জাতীয় পর্যায়ে ট্রাম্পের চেয়ে হিলারি শতকরা তিন পয়েন্টের বেশি ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। ট্রাম্প নিজ দলের অন্য প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে থাকলেও বিপক্ষ দলের হিলারির ক্ষেত্রে তা আশা জাগানিয়া নয় বলে মনে করেন ডাউনি। কারণ, রিপাবলিকান পার্টির মিট রমনি যখন ২০১২ সালে বারাক ওবামার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন তখন ওবামা সাড়ে তিন পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিতও হয়েছিলেন তিনি। সে বিষয়টি বিবেচনা করলে আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে খারাপ কিছুই অপেক্ষা করছে ধনকুবের ট্রাম্পের জন্য। দ্বিতীয়ত, ২০১২ সালে নন-হিস্পানিক হোয়াইট ভোটের বড় অংশই জমা পড়েছিল মিট রমনির বাক্সে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভিন্ন। পোস্ট-ইউনিভিশনের এক জরিপে দেখা যায়, হিস্পানিক ভোটারদের ৮০ ভাগ ভোটার ট্রাম্পকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ধরে নিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভোট দিতে দ্বিধায় রয়েছেন। তার মানে, এবারের নির্বাচনে রমনির চেয়েও ট্রাম্প কম হিস্পানিক ভোট পেতে যাচ্ছেন। সেটা অনেকটা নিশ্চিত বলেই মনে করেন বিশ্লেষক ডাউনি। এর মধ্যে প্রচার-প্রচারণা বাড়ালে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হলেও হতে পারে। ট্রাম্পের জন্য এখন পর্যন্ত আরেকটি দুঃসংবাদ হলো দেশটির সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে হিলারিই বেশি সহায়তা পাচ্ছেন। ই-মেইল বিতর্কের কারণে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেকায়দায় পড়ে যাবেন বলে প্রথমে ধারণা করা হলেও মিডিয়ার ইতিবাচক সমর্থনের কারণে তিনি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছেন। যা একই সঙ্গে অনেক ডেমোক্রেট সমর্থকের আস্থা ফিরিয়ে আনতেও সহায়তা করছে। বিষয়টি ট্রাম্পের জন্য নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। প্রসঙ্গত, দলীয় প্রাইমারি-ককাস নির্বাচনে ভোটের হিসাবে হিলারির চেয়ে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও চূড়ান্তভাবে এই ভোট তেমন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে না। তার মানে, প্রাইমারিতে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও তা নিয়ে বেশি আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই।
এদিকে ডেমোক্রেট শিবিরে আরো বেশি স্বস্তির সুবাতাস দিচ্ছে ২০১২ সালের ল্যাতিন ভোটারদের ভোট। তখন ল্যাতিন ভোটাররা মিট রমনির চেয়ে বারাক ওবামাকেই বেশি ভোট দিয়েছিলেন। একই চিত্র এবারের নভেম্বরের নির্বাচনেও দেখা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেবার করপোরেট জগতের মানুষ হওয়ায় রমনিকে ভোট দেননি তারা। এবার ট্রাম্পের ক্ষেত্রে তা সত্যি হওয়ায় হিলারি-শিবিরে স্বস্তির সুবাতাস বইছে, যা ট্রাম্পের কপালে ভাঁজের সংখ্যাই বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে এতকিছুর পরও ট্রাম্পের জন্য একটা সুখবর হলো, দেশটির কর্মজীবী মানুষ ডেমোক্রেট এবং প্রকারান্তে রিপাবলিকানদের ওপরও যথেষ্ট বিরক্ত। সেক্ষেত্রে ট্রাম্প যদি এই কর্মজীবী শ্রেণীকে তার পক্ষে নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে এত খারাপ খবরের মধ্যেও ডেমোক্রেট প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সমর্থ হবেন বলে মনে করেন ডাউনি। তবে তার জন্য ট্রাম্পকে এসব কর্মজীবী মানুষকে আশাবাদী করে তোলার কঠিন কাজটাই করতে হবে। সেটা করতে হলে তাকে বাকি সময়টা তা নিয়েই কাজ করতে হবে। ওয়াশিংটন পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ