Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকায় গ্যাস সঙ্কটে সিএনজি বন্ধ দুর্ভোগে রাজধানীবাসী

| প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গাড়িতে ২৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে রাস্তায় নেমে বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে। ছুটির পর দিনের রাজধানী ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যা এমনিতেই কম থাকে। তার মধ্যে গ্যাসের অভাবে গতকাল সকাল থেকে অটোরিকশার সংখ্যাও কম দেখা গেছে। মঙ্গলবার রাতে গ্যাস নিতে না পারায় সকালে যারা অটোরিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন, তারাও বেশি ভাড়া হাঁকছেন। ফলে লম্বা দূরত্বের যাত্রীদের পকেট থেকে বেশি টাকা যাচ্ছে। ঈদের ছুটি কাটিয়ে বুধবার সকালে টঙ্গী থেকে কচুক্ষেতে এসেছেন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) চাকুরে সাইফুল হক।
তিনি জানান, সাধারণ সময়ে ওই দূরত্বে তার আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা ভাড়া লাগলেও বুধবার দিতে হয়েছে সাড়ে ৫০০ টাকা। ড্রাইভাররা বলতেছে গ্যাস নাই, ভাড়া বেশি দিতে হবে। চাপের মুখেই বাড়তি টাকা দিতে হল।  শিল্পী  আখতার রাজধানীর খিলক্ষেতে থেকে আগারগাও যাওয়ার জন্য অটোরিকশা খুঁজছিলেন। এমনিতে ওই পথে ২০০ টাকা ভাড়া উঠলেও ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকার কারণ দেখিয়ে চালকরা সাড়ে ৩০০ টাকা চায়ন। একটি সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার রোজিনা  জানালেন, উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকা থেকে নীলক্ষেত যাওয়ার জন্য তাকে ১০০ টাকা বেশি ভাড়া দিতে হয়েছে।  বেশি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর এলাকার অটোরিকশা চালক তাহের মিয়া বলেন, দিনে দুই থেকে তিনবার গ্যাস নেওয়া লাগে। কাইল থেইকা গ্যাস বন্ধ। রাত্রে যারা গ্যাস ভরতে পারছে, তারাই আজকে রাস্তায় বাইর হইছে। গাড়ি কম, তাই ভাড়াও বেশি। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য উৎপাদন বন্ধ থাকায় বুধবার প্রথম প্রহর থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে এই ঘোষণা আসার পর গ্যাসের জন্য ফিলিং স্টেশনগুলোতে ভিড় লেগে যায়। কিন্তু রাত ১২টায় ফিলিং  স্টেশন বন্ধ করে দেওয়ায় গ্যাস না পেয়েই অনেককে ফিরতে হয়। কামাল হোসেন  নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, বিপদে তো আমরাও পড়সি। সিএনজি চালাইতে পারতেসি না। সকালে বাইর হইছিলাম, দুই ট্রিপ মাইরাই গ্যাস ফুরায়ে গ্যাছে। আমাগোরও তো বউ বাচ্চা আছে।
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূর জানান  ঈদে বাড়ি যাওয়া এবং বাড়ি থেকে ফেরার সুবিধার জন্য সরকার ২৪ ঘণ্টা পাম্প খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ঈদের একদিন পরেই ২৪ ঘণ্টা ফিলিং স্টেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত দিল। সরকারের এই সিদ্ধান্ত সংঘর্ষিক। এদিকে গতকাল সচিবালয়ে  বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলছেন, যেসব গাড়ি সিএনজিতে চলে, সেগুলো তেলেও চালানো যায়। ফলে বড় কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
চট্টগ্রামে সিএনজি স্টেশন বন্ধে জনদুর্ভোগ
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকায় গতকাল (বুধবার) বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামেও জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। গ্যাসচালিত অধিকাংশ যানবাহন চলাচল না করায় বিপাকে পড়েন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রামে যাওয়া মানুষেরা। ফলে নগরীতে ফিরতে তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অটোরিকশাসহ যেসব গ্যাসচালিত যানবাহন চলাচল করেছে সেসব যানবাহনের চালকরা এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ও তিনগুণ ভাড়া আদায় করেছে। অনেকে নিরুপায় হয়ে গলাকাটা ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে পৌঁছেছে।
জানা যায়, চট্টগ্রামের ৫০টি ফিলিং স্টেশন গ্যাসের অভাবে বন্ধ ছিল। গতকাল সকালে বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নিতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছেন অনেক অটোরিকশা চালক। এদিকে মঙ্গলবার রাতে সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকার খবর পেয়ে অটোরিকশা চালকেরা ফিলিং স্টেশনে ভিড় জমালেও অনেকে গ্যাস নিতে পারেনি। গ্যাসের অপেক্ষায় থাকা অটোরিকশার লম্বা লাইনের কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৪ নভেম্বর, ২০২২
২৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ