Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষ মুহূর্তে ঘরে ফেরা

| প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : সড়ক-মহাসড়কে যানজট। ৮ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিড়ে লাগছে ১৮ ঘণ্টা। বাসের জন্য টার্মিনালে ঘণ্টার পর অপেক্ষা। লঞ্চ ও ট্রেনে উপচে পড়া ভিড়। পথে পথে সীমাহীন ভোগান্তি-বিড়ম্বনা। তারপরেও নাড়ির টানে ছুটছে মানুষ। প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য গতকাল ঘরমুখি মানুষের ঢল অব্যাহত ছিল। গত বৃহস্পতিবার থেকে এই ঢল শুরু হয়েছে। ভোগান্তির শুরুও সেই দিন থেকেই। আজও অব্যাহত থাকবে শেষ মুহূর্তের ঢল। গতকাল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়া বাকী তিনটি মহাসড়কে তেমন যানজট ছিল না। তবে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড়ের টোল প্লাজার মেশিন বিকল হওয়ায় সেখানে যানজটের ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। এ ছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট নেই দাবি করে পুলিশ বলেছে, এসব মহাসড়কে যানবাহন একটু ধীরগতিতে চলছে।
আগামী ২৬ জুন পরিবত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে লক্ষ্যেই ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপনের মাধ্যমে আনন্দকে ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে ছুটছে মানুষ। এই ছুটে চলা অনেকটাই আনন্দের হতো যদি যাত্রাপথে কোন ভোগান্তি না থাকতো। ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরে ফেরার ভোগান্তি অতীতেও ছিল, এবারও আছে। তবে এবার ঈদ যাত্রা শুরুর আগে ভোগান্তি বেশি ছিল। শেষ মুহূর্তে সেই ভোগান্তি অনেকটাই কমে এসেছে। এবারও রমজানের শুরু থেকে দেশের সবগুলো মহাসড়কে যানজট লেগেই ছিল। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভয়াবহ যানজট ঈদযাত্রার ভোগান্তি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে ঈদযাত্রা শুরু হলে ওই দিন থেকে সেই যে যানজটের সৃষ্টি গতকাল তা সহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে গতকাল বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজার মেশিন বিকল হওয়ায় টোল প্লাজার আশেপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলের যে কোনো জেলায় যেতে এখনও ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগছে। পুলিশ বলছে যানজট নয়, বাসগুলো ধীরগতিতে চলছে। এতে করে সময় একটু বেশি লাগছে।
এদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গতকাল যানজট থাকলেও যানবাহনের চাপ অনেকটাই কমে গেছে বলে হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে। মেঘনা ও গোমতি সেতুর দুই প্রান্তে যানজট থাকলেও তা সহনীয় পর্যায়ে বলে জানান হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা। রাজধানীর গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে বাসের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার পালা গতকাল শেষ হয়নি। বাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। ঠাকুরগাঁওয়ের এক যাত্রী জানান, তার বাস ছাড়ার কথা ছিল শুক্রবার রাত ১১টায়। সেই বাস ঠাকুরগাঁও থেকে ফিরেছে ভোরে। আধা ঘণ্টা পর বাসটি আবার যাত্রী নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। বাসটি গন্তব্যে কখন পৌঁছাবে তা কেউ জানে না। বাসে ওঠার পর ওই যাত্রী টেলিফোনে বলেন, বাসে উঠেছি, এখন এটা ঈদের আগে পৌঁছলেই চলবে।
ঘরমুখো যাত্রীদের একটা বড় অংশ ট্রেনের যাত্রী। তারাও ছুটছেন ট্রেনের বগিতে, ছাদে। গতকাল পর্যন্ত একমাত্র রংপুর এক্সপ্রেস ছাড়া অন্যান্য ট্রেন চলেছে সময় মেনেই। তবে এবারও ট্রেনে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। বিশেষ করে বিমান বন্দর স্টেশনে যাত্রীদের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় তারা খেয়ালখুশি মতো উঠে পরায় প্রথম ও এসি শ্রেণির যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে ঈদের আগে সিডিউল বিপর্যয়ের আর কোনো আশঙ্কা নেই।
গতকাল কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে ঢাকা থেকে দেশের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে সবগুলো ট্রেনের ভিতরে এবং ছাদে গাদাগাদি করে ঝুঁকি নিয়ে ফিরছে মানুষ। বিআইডবিøউটিএ সূত্র জানায়, শেষ মুহূর্তে দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চগুলোতেও উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফেরা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ