Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তেলের মূল্যহ্রাসে টালমাটাল হয়ে উঠছে বিশ্ব পুঁজিবাজার

বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ

প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : জ্বালানি তেলের অব্যাহত দরপতন ও এর প্রভাবে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমার শঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে সৃষ্ট উদ্বেগে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে সারা বিশ্বের পুঁজিবাজারে। জ্বালানির শেয়ারের কারণে বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে যে পতন শুরু হয়, তেলের অব্যাহত দরপতন ও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমার শঙ্কা গভীর হওয়ায় গত বুধবারও তা দেখা গেছে।  এদিন লেনদেনের শুরুতে ওয়াল স্ট্রিটে ডো জোনস ও এস অ্যান্ড পি ৫০০ এর সূচক পড়ে যায় ২ শতাংশ, নাসডাকের পড়ে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। লন্ডনের এফটিএসই ১০০, জার্মানির ড্যাক্স ও প্যারিসের সিএসি ৪০ এর সূচক কমে প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ।  তেল কোম্পানিগুলোর শেয়ারে দরপতন হওয়ার কারণেই মূলত এসব বাজারের সূচক পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এস অ্যান্ড পি এ দেখা যায়, জ্বালানি কোম্পানির শেয়ারগুলোর সূচক কমেছে ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু শেভরনের শেয়ারদর কমে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ এবং এক্সজনের ৩ দশমিক ১ শতাংশ। বিবিসি জানায়, অনেক পুঁজিবাজারের সূচকেই এদিন সর্বশেষ সর্বোচ্চ সূচক থেকে ২০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি পড়ে যায়। এশিয়ার স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সূচকে ব্যাপক পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হওয়ার পর পতন শুরু হয় ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা আইইএ গত মঙ্গলবার সতর্ক করে জানিয়েছে, বাড়তি সরবরাহে তলিয়ে যেতে পারে তেলবাজার। বাড়তি এই সরবরাহ এ বছরের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
গত বুধবার দুবাইয়ের পুঁজিবাজারের সূচক কমে দাঁড়ায় ২৮ মাসের মধ্যে এবং জাপানের ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে। তেলবাজারের অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে মুদ্রাবাজারেও। রাশিয়ার রুবলের দরের রেকর্ড পতন হয়েছে মার্কিন ডলারের বিপরীতে। বিশ্ব পুঁজিবারের এই দশা সম্পর্কে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিশেষায়িত ব্যাংকিং ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ইনভেস্টেক এর সিনিয়র ইনভেস্টমেন্ট ডিরেকটর লরা ল্যাম্বি বিবিসিকে বলেন, বিনিয়োগকারীরা ধরে নিয়েছেন, বিশ্ব এখন আরও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। তিনি বলেন, চীনের প্রবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ, যুক্তরাষ্ট্রে সুদহার বাড়ার সম্ভাবনা ও তেলের মূল্য কমে গেলে কিছু কোম্পানি হয়তো আর ব্যবসা করতে পারবে না- এসব বিষয়ই এখন বিনিয়োগকারীদের প্রধান দুশ্চিন্তা। বিবিসি জানায়, তেলের দামের অব্যাহত পতনে পুঁজিবাজারে দরপতনের ধারা শুরু হয়। দাম কমতে কমতে বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত শ্রেণির তেল বিক্রি হয়েছে ২৮.০৮ মার্কিন ডলারে, যা গত প্রায় ১২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি থেকে তেলের অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে দাম কমেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ। এর পেছনে মূলত কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেল এর বাজারে বাড়তি তেল সরবরাহ এবং তার ফলে জিনিসপত্রের দাম কমে যাওয়া। এছাড়া একইসময়ে চীন ও ইউরোপের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমায় কমে যায় তেলের চাহিদা।
এদিকে, গত মঙ্গলবারই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তাদের বার্ষিক বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির আগের পূর্বাভাস থেকে সরে এসে ঘোষণা দেয়, তা অন্তত ০ দশমিক ২ শতাংশ কম হতে পারে, যার নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ওপর। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তেলের মূল্যহ্রাসে টালমাটাল হয়ে উঠছে বিশ্ব পুঁজিবাজার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ