পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিমানের টপ টু বটম সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি আর লুটপাট চলছে। আর এ লুটপাটে ডুবতে বসেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রতি বছর বিমানের লাভ ক্ষতি হিসাবই শুধু করা হয়। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে নেই কোন জোড়ালো ব্যবস্থা। ফলে শত শত কোটি টাকা লুটপাট আর লোকসান দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আছেন বহাল তবিয়তে। বিমানের এমডি থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড হ্যান্ডিলিং ও প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পর্যন্ত এসব দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। জাতীয় পতাকাবাহী এ সংস্থাটিতে ঝেঁকে বসেছে দুর্নীতিবাজদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের কারণেই বিমানকে প্রতিবছর লোকসান গুণতে হচ্ছে শত শত কোটি টাকা। উড়োজাহাজ কেনা, লিজ নেয়া, প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, মেরামত, স্পেয়ার পার্টস কেনা, বিএফসিসি, পোলট্রি, টিকিট বিক্রি, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, বৈদেশিক অফিস চালনা, লোকবল নিয়োগসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে চলছে সীমাহীন লুটপাট। দুর্নীতির কারণে কয়েক দফায় বাতিল করা হয়েছে জনবল নিয়োগ পরীক্ষা। কর্মচারী থেকে বোর্ড সদস্য কোথাও টাকা ছাড়া কাজ হয় না। শুধু তাই নয়, বিমানের জনসংযোগ শাখাও এখন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হযেছে। জনসংযোগ শাখায় নতুন জিএম যোগদানের পর থেকে শুরু হয়েছে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার নামে কমিশন বাণিজ্য। কমিশন ছাড়া কোন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হযনি। অভিযোগ রয়েছে, জনসংযোগ বিভাগের জিএম শাকিল মেরাজকে কমিশন দিলেই অখ্যাত পত্রিকা ও সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনেও বছরে লাখ লাখ টাকা বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ থাকলেও রহস্যজনক কারণে তাকে অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে না। এছাড়া বিএফসিসি শাখার দুর্নীতিবাজদের কাছ থেকেও প্রতিমাসে মোটা অংকের কমিশন যায় জিএম শাকিল মেরাজের পকেটে। অভিয়োগ রয়েছে, বেসরকারি ও বিদেশি এয়ারলাইন্স যখন লাভ করছে, তখন বাংলাদেশ বিমানকে শত শত কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে এসব দুর্নীতিবাজদের কারণে। বিমানের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র থেকে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের জিএম সাকিল মেরাজ বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। বিজ্ঞাপন দেয়ার বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হাতে। আমি নিজে থেকে কাউকে বিজ্ঞাপন দেই না, দেয়ার এখতিয়ারও আমার নেই। আর বিএফসিসিতে আমার কোন ফ্যাংশান নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নানা দুর্নীতি আর অনিয়মের দায়ে প্রায় সাড়ে ৩০০ মামলা রয়েছে বিমানের বিরুদ্ধে। এত মামলা মোকাবিলা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিমান কর্তৃপক্ষকে। আবার এসব মামলা চালানোর নামে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ইনকিলাবকে বলেন, বিমান এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। লোকসান কাটিয়ে ওঠতে সক্ষম হয়েছে। গত অর্থ বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থ বছর বিমান লাভ করেছে।
তিনি বলেন, বিমানের কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনিয়-দুর্নীতি হয়েছে সত্য, তবে এখন আর আগের অবস্থানে নেই। আমরা বিমান থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে কঠোর অবস্থানে আছি। দুর্নীতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মন্ত্রী বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বিমানের অনেক অনিয়ম অব্যস্থাপনা বন্ধ করেছি। বিমানের যাত্রী সেবার মান বাড়ানো হয়েছে, গ্রাউন্ড হ্যান্ডিলিং কাজেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এক হিসেবে দেখা যায়, বাংলাদেশ বিমান ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গত ছয় বছরে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি আর্থিক অনিয়ম, আপত্তি অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে আছে বিমানে। এ সম্পর্কিত অডিট আপত্তি ছিল র্দীঘ দিন। অডিটে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পড়লে ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করে সরকারি প্রতিষ্ঠান-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। কমিটি বিমানকে বিশেষ বিভাগ গঠন করে এসব অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এখানকার কর্মচারীদের ব্যবহার করে একটি মহল দুর্নীতির দুর্গ গড়ে তুলেছে। কেউ এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকেই বিমান অফিস ছাড়তে হয়। তাই সবাই এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে আপস করে চলেন। এ চক্রটি বিভিন্নভাবে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের শীর্ষ ব্যক্তিদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বø্যাকমেইল করে দু’হাতে টাকা কামাচ্ছে। এভাবে কোনো কোনো কর্মচারী ঢাকায় আলিশান বাড়ির মালিক বনে গেছেন। কর্মকর্তাদের তো সম্পদের হিসেবই নেই।
বিমানের একটি সূত্র জানায়, বিশ্বখ্যাত কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে স্পেয়ার পার্টস কেনার কথা বলে বিমানের নতুন দুটি উড়োজাহাজ পালকি ও অরুণ আলোতে নিম্নমানের স্পেয়ার পার্টস লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে, যার কারণে কেনার চার মাসের মধ্যে একটি জাহাজের হাইড্রোলিক পাইপ ফেটে গিয়েছিল। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে যাওয়ার পর ওই হাইড্রোলিক পাইপটি ফেটে যায়। এতে প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিলম্বে ওইদিন ফ্লাইটটি ঢাকা আসে। অভিযোগ, বোয়িংয়ের নাম ব্যবহার করে নিম্নমানের কোম্পানির কাছ থেকে হাইড্রোলিক পাইপ কিনে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছে বিমানের একটি সিন্ডিকেট। আর দুবাই অফিস থেকে ১৪শ’ ডলার দিয়ে ওই হাইড্রোলিক পাইপ কিনে লন্ডনে পাঠাতে হয়েছিল। ওই টাকা বিমানকে গুনতে হয়েছিল। এছাড়া ৩০ ঘণ্টা হিথ্রোতে ল্যান্ডিং চার্জ, যাত্রীদের হোটেল বিলসহ আরও কোটি টাকা গুনতে হয়েছিল বিমানকে। এর আগে বিমানের পালকি আনার এক মাসের মধ্যে ৫০টি আসনের হাতল ভেঙে যায়। পরে যুক্তরাজ্যের ওয়েভার কোম্পানি ৩৫০টি হাতল নতুন করে সংযোজন করে দেয়।
এদিকে যাত্রীর অভাব ও লোকসানি বিবেচনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-রোম-ঢাকা রুট ফের চালুর চেষ্টা-তদবির চলছে বিভিন্ন মহল থেকে। ফলে বিমান মন্ত্রীর ভাষায়, “দীর্ঘদিন পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস” এর ফের লোকসানের ধারায় ধাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু লোকসানি রুট চালু থাকার কারণে বছরের পর বছর বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি গুনতে হয়েছে বিমানকে। তাই লোকসানি রুট পর্যায়ক্রমে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিমানের পরিচালন বিভাগ। পাশাপাশি সম্ভাব্যতা যাচাই করে চালু করছে নতুন রুট।
জানা গেছে, ১৯৮১ সালে ঢাকা-রোম-ঢাকা রুটে ফ্লাইট শুরু করে বিমান। তখন এ রুটে সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট চলাচল করত। যাত্রীর অভাবে এক দশক পর ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়ে সপ্তাহে একটি করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের এপ্রিলে ফ্লাইট শুরু হয় রোমের সঙ্গে ফ্রাংকফুর্ট রুট যুক্ত করে। তখন ফ্লাইট প্রতি লোকসান হতো ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর পর লোকসানের কারণ দেখিয়ে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল বন্ধ করে দেওয়া হয় ঢাকা-রোম রুট। দীর্ঘদিন ফ্লাইট না থাকায় রোম স্টেশনটিও এখন বন্ধ করার চিন্তা রয়েছে। তবে কোটি কোটি টাকা লোকসানের পরেও যে পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তারা এটি চালু রেখেছিলন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ওইসব কর্মকর্তারা নানাভাবে সুবিধাভোগী ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কোনো প্রবাসী মারা গেলে বিনামূল্যে লাশ দেশে আনে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইনস বিমান। মূলত এই সুযোগকে কাজে লাগাতে ফের ইতালি রুটে ফ্লাইট চালু করতে তদবির চালাচ্ছে ওই প্রভাবশালী চক্রটি। নতুন করে আবার ঢাকা-রোম ফ্লাইট চালু হলে লোকসানের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বিমানের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) ইনামুল বারী বলেন, এটা ঠিক, ইতালি ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে অনেকে বলছেন। আসলে লোকসানের কারণে এ রুটটি বন্ধ করা হয়েছিল। এখন পুনরায় চালু করার জন্য অনেকেই বলছেন। তবে যাত্রী পাওয়া যাবে কিনা যাচাই করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
জানা গেছে, বর্তমানে ১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে এবং ৭টি অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচল করছে বিমান। লোকসানি রুট, ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাসহ নানা কারণে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটিতে টানা লোকসান শুরু হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছর ৮০ কোটি, ২০১০-১১ অর্থবছরে ১৯১ কোটি, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬০০ কোটি ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২১৪ কোটি টাকা লোকসান দেয় বিমান। এ ছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিমানের লোকসান হয় ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত দুই অর্থবছরে মুনাফা করতে সমর্থ হয় বিমান। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩২৪ কোটি ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৭৬ কোটি টাকা মুনাফা করে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থটি।
গত অর্থবছরে বিমান যাত্রী বহন করেছে ২৩ লাখ ১৮ হাজার, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২০ লাখ ২০ হাজার। কার্গো পরিবহন খাতে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৪০ হাজার ৯শ’ মেট্রিক টন মালামাল পরিবহন করেছে বিমান। এটি আগের অর্থবছরের চেয়ে ৭ শতাংশ কম। তবে গত বছরের ৮ মার্চ থেকে যুক্তরাজ্য সরকার কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারির করার কারণে কার্গো পরিবহন তুলনামূলক কিছুটা কম হয়েছে।
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি কেনা আর এয়ারপোর্ট হ্যান্ডলিংয়ের নামে চলছে রুটফাট। এ শাখার কেনাকাটার নামে এ পর্যন্ত যেসব যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে তার বেশিরভাগ দু-তিন মাস চলার পর অচল হয়ে গেছে। আবার কিছু কিছু যন্ত্রপাতি মেরামতের নামে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে পার্টস লাগিয়েও চালানো যাচ্ছে না। কিছু কিছু যন্ত্রপাতি আনার পর থেকেই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। আবার দফায় দফায় বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ও পার্টস এনেও কোটি কোটি টাকা অপচয় ও লুটপাট করা হয়েছে।
জানা গেছে, ৯৫ লাখ টাকার দুটি এসিভ্যান সরবরাহের দু’মাস পর অচল হয়ে যায়। পরে দুটি এসিভ্যান মেরামতের জন্য আরও ৫০-৬০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি এনেও চালু করা যায়নি। একটি এসিভ্যান চালু থাকলে বিমানের প্রতি ঘণ্টায় আয় হয় ১৬০ ডলার। সে হিসেবে প্রতি মাসে এক লাখ ১৫ হাজার ডলার থেকে বঞ্চিত হতে হয় বিমানকে। জিএসই শাখার একজন ইঞ্জিনিয়ার জানান, দু’মাসে দু-তিন ঘণ্টার বেশি মেশিন দুটি চালানো সম্ভব হয়নি। এখনও অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে এসিভ্যান দুটি।
জানা গেছে, বাজারমূল্য ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা হলেও ভ্যান দুটি ক্রয় করা হয়েছে দ্বিগুণ মূল্যে। এগুলো নষ্ট হওয়ার পরও ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা কিংবা ক্ষতিপূরণ আদায় করেনি জিএসই কর্তৃপক্ষ। উল্টো পরে ওই কোম্পানির কাছ থেকে আরও দুটি মিনি ফর্কলিফট ক্রয় করা হয়। প্রতিটি ফর্কলিফট কেনায় খরচ হয়েছিল ৫০ লাখ টাকার ওপর। তবে বাস্তবে এসব ফর্কলিফটের বাজার দাম আরও অনেক কম।
বিএফসিসি শাখায় লুটপাট :
বিমানের বিভিন্ন রুটের ফ্লাইটে খাবার পরিবেশনের নামে প্রতি বছর গড়ে ৮০ কোটি টাকারও বেশি লুটপাট হচ্ছে বলে দাবি করেছে বিমানেরই একাধিক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জাানান, একদিকে বিমান যাত্রীদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে মানহীন-রুচিহীন আর অস্বাস্থ্যকর খাবার, অপরদিকে অতিরিক্ত খাবারের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে। বিমানের বিএফসিসি’র খাবার নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারপরেও এখন পর্যন্ত খাবারের মান উন্নয়ন হয়নি। খাবারের মান খারাপ থাকায় প্রধানমন্ত্রী আবুধাবি যাওয়ার সময় বিমানের দেয়া খাবার পর্যন্ত খাননি। বিমান যাত্রীদের অভিযোগ, খাবারের মান খুবেই খারাফ এবং নিম্নমানে।
বিএফসিসির একটি সূত্র জানায়, এ শাখায় প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। বছরে ৩০ কোটি টাকার খাবার ক্রয় ও সরবরাহ করা হলেও সেখানে ৮০ কোটি খাবার ক্রয় ও উৎপাদন করা হয়েছে বলে দেখানো হয়। এসব অনিয়ম-দুর্নীতের মাধ্যমে অবৈধ আয়ের একটি মোটা অংকের টাকা যায় সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পকেটে। বছরের পর বছর ধরে এসব লুটপাট হয়ে আসছে। বিমানের বর্তমান প্রশাসনের নেতৃত্বে এ লুটপাট আরো ব্যাপক আকার ধারন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, জ্বালানি তেল ক্রয়ের নামে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। তেল চোর সিন্ডিকেট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশ-বিদেশের বিমানের অফিসগুলোতে এ ধরনের লুটপাট আর নিয়মিত করে যাচ্ছে। পাম্প ম্যানেজার ও হ্যান্ডলিং সংস্থা এবং বিমানের জিএসই শাখা ও নিরাপত্তা শাখার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে এ টাকা আত্মসাত করা হয়। এধরনের দুর্নীতি এবং ভুয়া ভাউচারে বছরের পর বছর ধরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বিমানে কর্মরত ওই সিন্ডিকেট। স¤প্রতি বিমানের সিলেট স্টেশনে এরকম একটি দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে বিমান। সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সূত্রে জানা গেছে, শুধু সিলেট নয়, বিমানের প্রতিটি স্টেশনে এ ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পরে যোগসাজশ থাকায় এটা ফাঁস হচ্ছে না। আত্মসাৎ করা টাকা বিমানের টপ টু বটম ভাগ-বাটোয়ারা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।