নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান।
ঠিক আজকের এই সত্যটাই যদি এক সপ্তাহ আগে কেই ভবিষ্যদ্বানী করতেন? নিশ্চিয় তা হেসেই উড়িয়ে দেওয়ার মত লোকের সংখ্যা নেহাত কম হত না। আসর শুরুর আগে তো তাদেরকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই রাখেনি। প্রথম ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারতের কাছে অসহায় আত্মসমর্পনের পর তো আরো না। সেই পাকিস্তানই ফাইনালে পা রাখল আসরের সবচেয়ে ফেভারিট দুই দল দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে রিতিমত নাস্তানাবুধ করে।
নাস্তানুবোধই তো! তারকাখচিত দক্ষিণ আফ্রিকাকে তারা আটকে দিয়েছিল মাত্র ২১৯ রানে। আসরের একমাত্র অপরাজিত দল ছিল ইংল্যান্ড। সেই দলকে তো তারা দাঁড়াতেই দিলো না। গ্রæপ পর্বের তিন ম্যাচে রানের ফুলঝুরি ছড়ানো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে এদিন তারা গুটিয়ে দিল মাত্র ২১১ রানে। শুধু বোলিংয়ে নয়, ব্যাটিংয়েও নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে ১২.৫ ওভার আর ৮ উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। ঠিক এই কারণেই সম্ভবত তাদের নামের পাশে এসে জুটেছে ‘দ্য আনপ্রেডিক্টটেবল’।
আইসিসির বড় কোন ইভেন্টে পাকিস্তান যেন অনেকটাই অনাকাক্সিক্ষত হয়ে পড়েছিল। সর্বশেষ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলে দলটি। সেবার বাংলাদেশকে মাত্র ২ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের স্বাদও পায় এশিয়ার একসময়ের পরাশক্তিরা। তবে এরপর ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়, ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টেন, সেবছরই এশিয়া কাপের গ্রæপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় পাকিস্তান। আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে? চারবার সেমিফাইনাল খেললেও চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো দূরের কথা, ফাইনালই খেলতে পারেনি তারকাসমৃদ্ধ দলটি! এবার সে আক্ষেপ ঘুচেছে পরিবর্তিত এই দলটির। ইংল্যান্ডকে দূর্দান্তভাবে হারিয়ে ফাইনালে পা রেখেছে শরফরাজের দল।
বরাবরের মত গতকালও পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান বোলাররা। ২ উইকেটে ১২৮ রান থেকে ৬ উইকেটে ১৬২! সর্বাধিক ৪৬ রান আসে জো রুটের ব্যাট থেকে। ওপেনার বেয়ারস্টো ৪৩ রান সংগ্রহের পর বাকি ব্যাটসম্যানদের লেগেছে বড্ড অসহায়। কতটা অসহায় তা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বেন স্টোকসের ইনিংসের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। অস্ট্রেলিয়ার সাথে ঝড়ো শতক হাকানো সেই ব্যাট থেকে এদিন আসে ৬৪ বলে ‘লড়াকু’ ৩৪ রানের ইনিংস, চার কিংবা ছয় নেই একটিও!
বোলিংয়ের সাথে পাকিস্তানের ফিল্ডিংটাও ছিল দুর্দান্ত। দুটি রান আউট, তাও আবার সরাসরি থ্রোতে! বাউন্ডারি থেকেও অসাধারণ সব ক্যাচ। পাঁচের নীচে বোলারদের রানরেট! সত্যিই এক নিমেষেই যেন বদলে যাওয়া এক পাকিস্তান। বল হাতে এদিনও সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন হাসান আলী। আসেরর সর্বোচ্চ (১০টি) উইকেট শিকারিও এই সিমার। দুটি করে উইকেট নিয়ে মোহাম্মাদ আমিরের অনুপস্থিতিটা বুঝতেই দেননি জুনায়েদ খান ও অভিষিক্ত রুম্মন রইস।
পাক ব্যাটসম্যানরাও এদিন নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন দারুণভাবে। গত ৪ বছরে এই প্রথম টানা দুটি পঞ্চাশোর্ধে রানের ওপেনিং জুটি গড়ল তারা। শুধু তাই না সাবধানী আজহার ও স্ফুলিঙ্গের মত জ্বলতে থাকা ফখর জামানে মিলে গড়েন ২১ ওভারে ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি। ফখরের ৫৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ছিল মাঠের চারপাশে চোখ ধাঁধানো সাহসী সব শট। চার ও ছক্কা হাঁকান যথাক্রমে ৭ ও ১টি করে। ১৭৩ রানের মাথায় আজহার (১০০ বলে ৭৬) আউট হওয়ার পর আর কোন অঘটন ঘটতে দেননি বাবর আজম (৪৫ বলে ৩৮) ও মোহাম্মাদ হাফিজ (২১ বলে ৩১)। অবিচ্ছিন্ন ৪২ রানের জুটিতে জয় দলকে ফাইনালে নিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা। তবে ম্যাচের নায়ক কিন্তু এদর কেউ নন, বেয়ার’শ, মর্গ্যান ও স্টোকসের মত মূল্যবান উইকেট নেয় হাসান আলী।
এমন অসহায় আত্মসমর্পনে মনে হতেই পারে একটু চাপও হয়ত পেয়ে বসেছিল ইংলিশদের। চাপটা হলো প্রত্যাশা প্রাপ্তির। আসরের সবচেয়ে শক্তিশালী দল তোমরা, তোমাদের তুলনায় খর্বশক্তির দল পাকিস্তান, তাছাড়া খেলাটাও তোমাদের মাটিতেÑ এই সব কিছুর সম্মিলিত বোঝাটাই কি বইতে ব্যর্থ হল ইংল্যান্ড? অথবা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই কি নিজেদের সেরাটা দিয়ে ফেলেছিলেন ইয়ন মর্গ্যানরা? সে যাই হোক, শিরোপাটা যে উপমহাদেশেই উড়ে আসছে এটা নিশ্চিত। অপর সেমিফাইনালে আজ ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। যে দলই জিতুক লড়াইটা তো হচ্ছে ‘অল এশিয়া’ই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।