পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে : ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ ছোবল দেয়ার দুই সপ্তাহ না পেরোতেই পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি আরও একটি লঘুচাপের প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও জলোচ্ছাস দুঃখ বাড়িয়েছে উপকূলবাসীর। এটি যেন মরার উপর খাড়া ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে কক্সবাজার উপকূলে। এতে প্লাবিত হয় জেলার ৮ উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের ঘর-বাড়ি, মসজিদ মাদরাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মৎস্য খামার।। পানিবন্দী হয় লক্ষাধিক পরিবারের মানুষ। ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে এক শত কিমি বেড়ি বাঁধ। ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে মহেশখালী ও টেকনাফে ১০টি নৌকা ডুবিতে নিখোঁজ রয়েছে কমপক্ষে অর্ধশত নৌ শ্রমিক।
জেলাব্যাপী প্রবল ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায় গত রোববার রাত ৯টা থেকে সোমবার রাত অবদি। অবিরত বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শহর ও শহরতলীর অসংখ্য দোকানপাট, কাঁচা ঘরবাড়ি। শহরের প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে গাছ ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে সম্পূর্ণ বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়ে পুরো জেলা। এমনকি বিদ্যুত না থাকায় কক্সবাজারের ২০টির মত স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ হয়নি।
জেলা শহর ছাড়াও সদরের গোমাতলী, পোকখালী, দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে পূর্ণিমার জোয়ারে পানি বৃদ্ধি ও প্রবল বর্ষণে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী বায়ুতে প্রবল বেগে দমকাসহ ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে জলোচ্ছ¡াসে জেলার ৮ উপজেলার ২৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। জেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলে ৩-৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ¡াস হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে সহস্রাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। কক্সবাজার উপকূলে উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙন এবং প্লাবিত হয়ে দুই শতাধিক পানের বরজ, শত শত একর রবিশস্য, শতাধিক চিংড়ি ঘের এবং প্রায় এক হাজার বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেন্টমাটিনে দমকাসহ ঝড়ো হাওয়া ও জলোচ্ছাসে প্রায় ১২টি কাচাঁবাড়ি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানাগেছে। সেন্টমার্টিনের সাথে টেকনাফ নৌ পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দমকা হাওয়া সঙ্গে পূর্ণিমার ‘জো’ মিলে প্রবল জোয়ারে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙ্গা বেড়িবাধ দিয়ে সাগরের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় প্রায় ১ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় বাঁধের বিভিন্ন অংশে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে শাহপরীর দ্বীপের লোকজনের দুঃখ দর্দশা আরো বেড়েগেছে।
বিশেষ করে কুতুবদিয়া অধিকাংশ এলাকায় হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি ছাড়াও রবিশস্য, পুকুর ও চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের পশ্চিম আলী আকবর ডেইল, কাহার পাড়া, কাজীর পাড়া, কিরন পাড়া, চৌধুরী পাড়া, পন্ডিত পাড়া, তেলি পাড়া, হায়দার বাপের পাড়া, পূর্ব তাবালেচর, পশ্চিম তাবালেরচর, জেলে পাড়া এবং বড়ঘোপ ইউনিয়নের মুরালিয়া, রোমাই পাড়া এলাকায় দ্বীপের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বৈরী আবহাওয়া এবং সৈমুদ্রিক বড় জোয়ারে বেড়িবাধ বিলিন হয়ে কয়েক হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে গেছে। প্রায় কাঁচা ঘরবাড়ী বিধ্বস্থ হয়ে গেছে। দ্বীপের মানুষগুলো স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পায়।
পানির ধাক্কায় দ্বীপের বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর থেকে বেড়িবাঁধের যে অংশ ভাঙ্গা ছিল তা পুনঃনির্মাণ না করায় ওই অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী জানান, রবিবার মধ্যরাত ও সোমবার সকালের বৃষ্টিপাত, উচ্চ জোয়ার এবং বৈরী আবহাওয়ার ফলে ডুবে গিয়েছে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের ১, ২, ৩ ও ৭নং ওয়ার্ড এবং উত্তর ধুরুং এর অধিকাংশ এলাকা। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার ফলে অতীতের মত এবারও ঘরবাড়ি হারিয়ে পথে বসেছে অনেক পরিবার। তাদের অধিকাংশই এখন আশ্রয় নিয়েছে সাইক্লোন শেল্টারে।
কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আ.স.ম শাহরিয়ার চৌধূরী বলেন, বিগত ৪ বছর ধরে উত্তর ধুরুং এলাকার কাইছারপাড়া, চুল্লারপাড়া, চরধুরুং, নয়াকাটা, আকবর বলীপাড়া, ফয়জানির বাপের পাড়া, উত্তর সতর উদ্দিনসহ ১০গ্রাম জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকায় পাউবোর প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্থ থাকায় শত শত পরিবার জোয়ারের নোনা জলে ভেসে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।