নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শ্রীলঙ্কা : ৪৯.২ ওভারে ২৩৬
পাকিস্তান : ৪৪.৫ ওভারে ২৩৭/৭
ফল : পাকিস্তান ৩ উইকেটে জয়ী
স্পোর্টস রিপোর্টার : ক্রিকেট হলো চরম অনিশ্চয়াতার খেলা। চলমান আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এর প্রমাণ মিলল আরো একবার। অনেক বছর পর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিয়েছে এশিয়ার চার দল। কিন্তু ফেভারিট তকমা গায়ে লাগাতে পেরেছিল কেবল ভারত। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা আর পাকিস্তানকে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখেননি ক্রিকেট বোদ্ধারা। তাদের সেই ভবিষ্যদ্বাণী ভুল প্রমাণিত করে সেমির চার দলের তিনই এশিয়ার।
‘এ’ গ্রæপ থেকে আসরের টপ ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করেছে বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রæপে ‘চাপের ম্যাচে’ ভারতের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে আরেক ফেভারিট দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ ভারতের সাথে তৃতীয় এশিয় দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। গ্রæপ পর্বের শেষ ম্যাচে গতকাল শ্রীলঙ্কানে ৩ উইকেটে হারায় পাকরা।
তারকাখচিত ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দল দক্ষিণ আফ্রিকা, আইসিসি প্রতিযোগীতায় বার বার নিজেদের অপ্রতিরোধ্য প্রমাণ করা অস্ট্রেলিয়া, বিরাট কোহলির শক্তিশালী ভারত, আর স্বাগতিক ইংল্যান্ডÑ এই চার দলকেই শেষ চারে দেখছিলেন অনেকে। এদের মধ্যে সবার আগে শেষ চার নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। ইংলিশ কন্ডিশন এবং শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্স এই দুয়ের বিচারে তারা ছিলো মিনোজদের তালিকায়। পারফর্ম্যান্সের বিচারে বাংলাদেশ দল সমীহ আদায় করে নিলেও তাদেরকেও ধর্তব্যের মধ্যে রাখনি কেউই। আড়ালে থাকা সেই তিন দলের দুই-ই এখন ফাইনাল থেকে মাত্র এক জয় দুরে। হিসাবটা এখন এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে ফাইনালটাও এখন হতে পারে ‘অল-এশিয়া শো’। এবং সেটা খুব সম্ভব। এজন্য গতকাল প্রথম সেমিফাইনালে ইংলিশদের হারালেই চলবে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তান ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে এশিয়ারই দল ভারত অথবা বাংলাদেশকে। আগামী পরশু দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। ১৮ জুন ওভালে অনুষ্ঠিত হবে গ্র্যান্ড ফাইনাল।
এখন পর্যন্ত আসরের সবচেয়ে নাটকীয় ম্যাচ ছিল গতকালেরটি। ম্যাচের ভাগ্য ঝুলেছে পেন্ডুলামের সুতোয়। এই ম্যাচ পাকিস্তানের হাতে, তো পরক্ষণেই মনে হয়েছে সেমির টিকিট পাচ্ছে লঙ্কানরা। ২৩৬ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়েও লঙ্কানরা হেরেছে মূলত বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে। ৭ উইকেটে ১৯৪ রানে রিতিমত তখন লড়ছে পাকিস্তান, জয়ের জন্য প্রয়োজন আরো ৪৩ রান। মিড অনে থিসারা পেরেরা সরফরাজ আহমেদের যে ক্যাচ ফেলে দেন তা পাড়ার কোন ক্রিকেটেও সচারচার দেখা যায় না। চার রানের ব্যবধানে আবারো জীবন পান ম্যাচের নায়ক সরফরাজ। এবার ডিপ স্কয়ারে ক্যাচ ছাড়েন বদলি খেলেয়াড় সেকুগে। দুইবারই দুভ্যাগ্য বোলার ছিলেন লাথিস মালিঙ্গা। সেই ওভারেই সর্ট এক্সট্রা থেকে রানআউট মিস করেন ধনঞ্জয়া। বাকি পথ পেরুতে আর হোঁচট খেতে হয়নি পাকদের। অষ্টম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৭৫ রানের জুটিতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন সরফরাজ আহমেদ (৬১*) ও মোহাম্মাদ আমির (২৮*)।
অথচ মাত্র ১১ ওভারে ৭৪ রানের জুটিতে পাকিস্তানের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। দৃষ্টিনন্দন সব শটের ফোয়ারায় ৩৬ বলে ঠিক ৫০ রান করে আউট হন আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া ফখর জামান। এর মধ্যে চারের মরাই ৮টি, ১টি ছক্কা। ১ উইকেটে ৯২ রান থেকে ১২ ওভারের ব্যবধানে তা হয়ে যায় ৭ উইকেটে ১৬২! গ্যালারিতে তখন মেসির উৎসব শুরু করে লঙ্কান দর্শকরা। এরপরই সেই আমির-সরফরাজের হার না মানা ৭৫ রানের জুটির গল্প। পাক্কা ব্যাটসম্যানের মতই ৪৩ বলে ২৮ রান করেন আমির।
এর আগে লঙ্কান ইনিংসেও ছিল চরম নাটকীয়তা। একসময় তাদের স্কোর ছিল ৩১ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬১। কিন্তু ৬ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে হঠাৎ পথ হারায় তারা। শেষ পর্যন্ত ৪৯.২ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে স্কোর বোর্ডে যোগ করতে পারে ২৩৬ রান। সর্বেচ্চ ৭৩ রান করেন নিরোশান ডিকওয়ালা। পঞ্চমবারের মত প্রতিপক্ষের সব উইকেট যায় পাক পেসারদের দখলে। ৩টি করে নেন হাসান আলি ও জুনায়েদ খান। ২টি করে আমির ও অভিষিক্ত ফাহিম আশরাফ।
ব্যাটিং কন্ডিশনে যে লক্ষ্য মামুলিই হওয়ার কথা সেই ম্যাচ পাকিস্তান জিতল এমন কঠিন করে। হয়তো দলটির নাম পাকিস্তান বলেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।