পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : যাত্রীসেবা নয়, যাত্রীদের ভোগান্তির জন্য বছরজুড়েই আলোচনায় যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। রাজধানীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে তৈরী বৃহৎ এ ফ্লাইওভারের উপরেও ঝুঁকি, নীচেও ঝুঁকি। উপরে ওঠার জন্য নকশাবহির্ভূত সিড়ি তৈরীর মাধ্যমে স্থায়ী বাস স্ট্যান্ড করা হয়েছে। শত শত যাত্রী ফ্রঅইওভারের উপরে ওঠানামা করায় প্রতিনিয়ত ঘটনছে দুর্ঘটনা। আর টাকা দিয়েও ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে স্বল্প সময়ে চলতে পারছে না কোনো যানবাহন। সময় মতো সংস্কার না হওয়া এবং যানচলাচলে চরম বিশৃঙ্খলার কারণে নীচের রাস্তা অভিশপ্ত রাস্তায় পরিণত হয়েছে। গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াত না করলে এর দুর্দশা বোঝার উপায় নেই। প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ এ রাস্তার পদে পদে বিড়ম্বনা ও ভোগান্তি।
রাজধানীর দক্ষিণ প্রবেশমুখে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার গত কয়েক বছরে যানজটের দুর্ভোগ থেকে স্বস্তি দিলেও সেই ফ্লাইওভারের ওপর নকশা বহির্ভূতভাবে তৈরি করা হয়েছে বাসস্ট্যান্ড। নিচ থেকে ফ্লাইওভারে উঠার জন্য তৈরি করা হয়েছে স্টিলের সিঁড়ি। গত আট মাস ধরে ফ্লাইওভারের ওপর বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে অপরদিকে পথচারীদের এলোমেলো চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে, এই ফ্লাইওভারে উঠার সিঁড়ি অপসারণের জন্য নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই অবৈধ সিঁড়ির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১ জুন বুধবার বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো: ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বত:প্রণোদিত হয়ে এই রুল জারি করেন। অবৈধ সিঁড়ির বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সড়ক ও সেতু সচিব,স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ও হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন গ্রæপকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। হাইকার্টের রুলের পরেও এতোটুকু তৎপরতা কমেনি। গতকালও ব্যস্ত সময়ে ফ্লাইওভারের উপরে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার কারনে যানজটের কবলে পড়তে হয়েছে ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফ্লাইওভারের উপরে রাজধানী সুপার মার্কেটের আগে র্যাব-৩ অফিসের সামনে, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের ভিতরে, সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে, ধোলাইপাড় যাওয়ার পথে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় স্থায়ী বাস স্টপেজ তৈরি করা হয়েছে। সিঁড়ি করা হয়েছে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের ভিতরে, বাস টার্মিনাল থেকে ২০০ গজ দূরে জনপথ মোড়ে ও বাকী দুটি সিঁড়ি যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার মোড়ে দুই পাশে। যাত্রাবাড়ী এলাকায় সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার জন্য যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। সাইনবোর্ডে গুলিস্তান, পলাশীগামী বাসে উঠতে এ সিঁড়ি ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই লেনের ফ্লাইওভারের ওপরে বাস স্টপেজের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা নেই। কিন্তু ফ্লাইওভারের ওপরে ৫টি স্থানে বাস-বে তৈরি করা হয়েছে। ফ্লাইওভারে ওঠানামার র্যাম্পগুলোর সংযোগস্থলে ঝুঁকি নিয়েই এই সিঁড়ি দিয়ে নিয়মিত যাত্রীরা ওঠানামা করছে। বাস ছাড়াও হিউম্যান হলারে যাত্রীরা ওঠানামা করছে ওই স্টপেজগুলোতে। রাস্তার দুই পাশেই ঝুঁকি নিয়ে এভাবে যাত্রী ওঠানামা করে। এতে গুলিস্তান বা পলাশীগামী যাত্রীরা একদিক দিয়ে বাসে উঠছেন। ফেরত আসা যাত্রীরা অপরদিকে নামছেন। এরপর ঝুঁকি নিয়ে দৌড়ে ফ্লাইওভারের ওপর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাচ্ছেন যাত্রীরা। এজন্য ডিভাইডারের মাঝে সামান্য ফাঁকা জায়গাও রাখা হয়েছে। এই স্থানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, প্রায় প্রতিদিনই ফ্লাইওভারের উপরে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেলে পুলিশ সেখানে যায়। ওই কর্মকর্তা বলেন, ফ্লাইওভারের উপরে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করা না হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকবেই।
অন্যদিকে, সময় মত সংস্কার না হওয়া এবং যানচলাচলে চরম বিশৃঙ্খলার কারণে অভিশপ্ত সড়কে পরিণত হয়েছে ফ্লাইওভারের নিচের সড়ক। গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত না করলে এর দুর্দশা বোঝার উপায় নেই। প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে পদে পদে বিড়ম্বনা ও ভোগান্তি। আরাপকালে ফ্লাইওভারের নীচের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ভাঙ্গা ও সংস্কারবিহীন রাস্তার কারনে তারা সর্বস্ব হারাতে বসেছেন। ব্যবসা বাণিজ্য শেষ হয়ে গেছে। চার মাস ধরে রাস্তা সংস্কারের নামে ঠিকাদারের লুকোচুরি খেলা চলছে। বর্তমানে রাস্তাগুলোর এমন দশা যে গাড়ি চলাতো দুরের কথা মানুষ চলাই দায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফ্লাইওভার যেখান থেকে শুরু হয়েছে গুলিস্তান অংশে চানখারপুল থেকেই বিশৃঙ্খলা। এখানে ফ্লাইওভারের জন্য পৃথক লেন থাকলেও সেটা স্থানীয় যানবাহনই ব্যবহার করছে। চানখারপুল চৌরাস্তা থেকে ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত সড়কের দু’পাড়ে রয়েছে অবৈধ দখলদার। গুলিস্তান এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে মুরগির খাচা রাখা হয়। এ জন্য জায়গাটির নামকরণ হয়েছে ‘মুরগিপট্টি’। এখানে দুর্গন্ধের জন্য হাঁটাচলাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। সায়েদাবাদ জনপথ মোড় থেকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা হয়ে কুতুবখালী পর্যন্ত সড়কে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। যাত্রাবাড়ী থেকে ধোলাইরপাড় পর্যন্ত সড়কেরও একই অবস্থা। টিকাটুলীতে রাজধানী মার্কেটের উত্তরপাশের সংযোগ সড়কে গর্তের শেষ নেই। সামান্য বৃষ্টি হলে এসব গর্তে পানি জমে থাকে দীর্ঘ সময়। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় সড়কের ওপরই রয়েছে বর্জ্যের ভাগাড়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওয়ারি স্কুলের বিপরীতে ডিভাইডারের ওপর সিটি করপোরেশন বর্জ্যঘর নির্মাণ করছে। ফ্লাইওভারের নিচের সড়কের ডিভাইডার বানানো হয়েছে প্রশস্ত করে। এ জন্য সড়কের প্রশস্ততা কমে গেছে। এ কারণে যানবাহন একটা সারিতে অত্যন্ত ধীর গতিতে চলাচল করে। পথিমধ্যে কখনও একটা গাড়ি বিকল হলে পেছনে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, আমরা এ বিষয়ে বহুবার সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে বলেছি। মেয়র মহোদয় আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।