Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তানোরে আমে ফ্রুটফ্লাই পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা

| প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মমিনুল ইসলাম মুন, তানোর (রাজশাহী) থেকে : রাজশাহীর তানোরে আমের কালো আগা রোগ ও ফ্রুটফ্লাই পোকার আক্রমনে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আর কোন ভাবেই এ রোগ ও পোকার ছোবলের হাত থেকে চাষিরা রক্ষা পাচ্ছেনা। ফলে তাদের উৎপাদিত ফলের মূল্যই তোলা দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। চাষিরা তাদের ফল ভাল পাওয়ার আশায় কার্যারিল গ্রæপের কীটনাশক প্রতিলিটার পানিতে ১ গ্রাম  স্প্রে করেই এর প্রতিকার পাচ্ছেনা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে। বড় আকার ধারণ করা বিভিন্ন জাতের আম। আর বাগানের সেই আমগুলো পাকতে শুরু করেছেন। এবার আবহাওয়া প্রতিকুল অবস্থা বিরাজ না করলেই আমের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা করছিলেন এখানকার চাষিরা। ফলে চলতি মৌসুমে আমের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে আম বাগান মালিকরা। কিন্তু বাগান মালিক ও  আম চাষিদের সে আশা নিরাশায় পরিণত হয়েছে। কেননা তাদের বাগানে ফ্রুট ফ্লাই পোকার আক্রমনে তাদের আমগুলোর গায়ে কালো রংগের দাগ দেখা দিচ্ছে, এবং ফেটে গিয়ে পঁচন ধরছে।
অপরদিকে কাল আগা রোগের কারণে আমের নিচের অংশ পঁচে আমের গা দিয়ে বয়ে পঁচা রস বের হচ্ছে। আর সেই আমগুলো চাষিরা জৈব সার হিসাবে ব্যবহার জন্য পাঁউশ পালাতে ফেলে দিচ্ছে। কারণ এই ফল তারা বাজারজাত করতে পারচ্ছেনা। আমের ভিতরে ফল ছিদ্র কারী পোকা রয়েছে। সেই পোকাগুলো প্রথমে ছোট ছিদ্র করে কীড়ার ভিতরে প্রবেশ করছে। পরে আমের শ্বাষ ভেঙ্গে সাদা ফেনার মতো রস বের হয়ে, আমটি কালো রং ধারন করছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় চলতি বছরে ৩৬০ হেক্টর জমিতে ছোট বড় আম বাগান রয়েছে। এত সম্ভাব্য ফলন ধরা হয়েছে ৮০ হাজার ১০০ মেঃটন। যা গত বছরের চেয়ে ২ হাজার মেঃটন কম ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান। চুনিয়াপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান জানান, আমার বাড়ীর আশ পাশে ও পতিত জমিতে প্রায় ৫০-৬০ টি ল্যাংড়া, খিসরাপাত, গোপালভোগসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ রোপন করেছি। এ বছর শিলাবৃষ্টি, ঝড় হওয়ায় প্রত্যেক গাছ থেকে বেশীর ভাগ আম ঝড়ে পড়েছেন। আর বাকী আমগুলো পোকার আক্রমনের পঁচে যেতে শুরু করেছে। কোন কীটনাশক ব্যবহার করে এর কোন  প্রতিকার পাচ্ছিনা মুÐমালা পৌর এলাকার বাগান মালিক ইউনুছ সরদার বলেন, আমার ৫০ বিঘা আম বাগানের  মধ্যে হাতে গনা দুই একটি গাছ ছাড়া বাঁকী প্রায় গাছেই আমের আগার অংশ কালো হয়ে যাচ্ছে, আর তার ভিতরের অংশ ভক্ষণযোগ্য অংশ নরম হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।  এ বিষয়ে কৃষিবিদ মমিনুল ইসলাম জানান, আমের কাল আগা রোগ, এটি একটি শরীরতাত্বিক রোগ। বাতাসে কোন কোন সময় গ্যাস বিশেষত কার্বন মনো  অক্য্রাইডের ঘনত্ব বেড়ে গেলে এ রোগ দেখা যায়। ফলে আমের আগার অংশ কালো হয়ে যায়, এবং  ভিতরের ভক্ষণযোগ্য অংশ নরম হয়ে নষ্ট হয়ে যায় । তিনি এর প্রতিকার হিসাবে আরো বলেন, রোরাক্য্র অথবা কস্টিক সোডা ৬ গ্রাম/লি হারে পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ বার স্প্রে করলে এ রোগ  কিছুটা হলেই নিয়ন্ত্রে রাখা যায় বলে জানান তিনি।  
এ বিষয়ে তানোর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মদ জানান, ফেরোমন ফাঁদ অথবা ব্যাগিং পদ্ধতি করা গেলে ফল ছেদ্রকারীর পেকার আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আর বাগানোর আম সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডাল পালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকার আক্রান্ত ডাল পালা, অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করতে হবে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাষি

১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
১৭ ডিসেম্বর, ২০২১
১৮ অক্টোবর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ