Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

স্থানীয়দের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে ডিসিদের নির্দেশ

| প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঘূর্ণিঝড় মোরা থেকে বাঁচাতে গতকাল সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলীয় জেলাগুলোর নিচু এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। প্রত্যেক জেলা-উপেজেলায় সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এসব জেলায় ২শ’ ৫০ মেঃ টন জি আর এবং সাত লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ১৯ উপকূলীয় জেলায় ইতোমধ্যে এলাকায় প্রস্তুতি সভা করেছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর এবং বিভাগেও আলাদা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিভিন্ন জেলায় গতকাল দুপুর থেকেই মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।এছাড়া নৌ-যানবাহন সতর্কতার সাথে চলাচলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোরা আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার পর মঙ্গলবার ভোরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে গতকাল সোমবার ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৫ জেলা ২শত ৫০ মে. টন জি আর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  এ সব জেলা গুলো হচ্ছে, খুলনায় ৫০ মে. টন, বাগেরহাট জেলায় ৫০ মে. টন, সাতক্ষীরা ৫০ মেঃ টন, বরিশালে ৫০ মে. টন এবং বরগুনায় ৫০ মে. টন। একই সাথে ছয় জেলায় জিআর ক্যাশ দেয়া হয়েছে। এসব জেলা হচ্ছে, খুলনা জেলায় এক লাখ টাকা, বাগেরহাট জেলায় দুইলাখ টাকা, বরিশালে এক লাখ টাকা,বরগুনা জেলায় এক লাখ টাকা, গাইবান্ধা জেলায় এক লাখ টাকা এবং গোপালঞ্জ জেলায় এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  এসব বরাদ্দ মানবিক সহায়তা হিসেবে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
গতকাল সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে এক জরুরি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিবের দায়িত্বে থাকা এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা এ তথ্য জানান। অতিরিক্ত সচিব বলেন, স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার ব্যবস্থা করতে। সন্ধ্যার আগেই তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হবে। তবে কত মানুষকে সরিয়ে  নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে, সে সংখ্যা বলতে পারেননি। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সবাই সতর্ক আছেন। উপদ্রæত এলাকার মানুষের জন্য চাহিদা অনুযায়ী সকালেই খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাদ্যের কোনো সমস্যা হবে না।  আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। আর উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গতকাল সোমবার বিকাল থেকে উপকলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নায়াখালী, ল²ীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় মোর উপকূল অতিক্রম করার সময় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর এবং বিভাগেও আলাদা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর: ৯৫৪০৪৫৪, ৯৫৪৫১১৫, ৯৫৪৯১১৬ ও ০১৭১৫১৮০১৯২। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম ইনকিলাবকে বলেন, উপকূলীয় জেলা গুলোতে ইতোমধ্যে মেডিকেল টিম গঠন এবং বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এর বাইরে প্রায় ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শুকনো খাবার ও খাবার পানি প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।  মাহাম্মদ হাশিম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি আমরা সব সময় ফলো করছি, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে তা আপডেট করছি।এ অবস্থায় দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। প্র্রত্যেক জেলা-উপেজেলায় সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডিসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ