পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে রাঘব-বোয়ালরা
বেনাপোল অফিস : সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মাদক পাচার ও ব্যবসার নিত্য নতুন কৌশল’র কারণে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করে সীমান্তের বিভিন্ন স্থান দিয়ে মাদক পৌঁছে যাচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে। মাদকের চোরাচালান ঠেকাতে পুলিশ বিজিবি সহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যহাত রাখলেও মাদক ব্যসায়ীদের নিত্য নতুন কৌশল’র কারণে মাদক চোরাচালান অভিযান ব্যর্থ হচ্ছে।
চোরাচালানীদের একটি কৌশল ধরা পড়ার পর তারা আশ্রয় নিচ্ছে অন্য কৌশলের। এসব কৌশলের কারণে সর্বনাশা মাদক নিরাপদে একস্থান থেকে আরেক স্থানে পৌঁছে যাচ্ছে। আইন-আদালত থেকে বাঁচার জন্যেও নেয়া হচ্ছে নানা ছলচাতুরি ও ক‚টকৌশলের আশ্রয়। ফলে যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জালে আটক পড়ছে, তাদের বেশিরভাগই আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে এবং মাদক ব্যবসার মূল হোতা ও রাঘব বোয়ালরা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
জানা গেছে, বর্তমানে মাদকের শীর্ষ আইটেম ‘ইয়াবা’ ও ফেনসিডিল ভারত থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে মাদক বহনের ক্ষেত্রে যেসব কৌশল ধরা পড়েছে তার মধ্যে রয়েছে গরুর পেটে, মানুষের পেটে, মাছের পেটে, কফিনের ভেতর, মলদ্বারে, মেয়েদের গোপন অঙ্গে, কাঁঠাল ও ডাবের ভেতর, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, গ্যাস সিলিন্ডার, মটর গাড়ির টায়ার, তেলের ট্যাংকি, শিশুদের দুধের কৌটা প্রভৃতির ভেতর লুকিয়ে মাদক বহন করা হয়।
সরকারি বেসরকারি গাড়িতে জাতীয় সংসদ ও সংবাদপত্র স্টিকার লাগিয়ে মাদকদ্রব্য বহনের ঘটনা ধরা পড়েছে অহরহ। এর বাইরেও রযেছে অজানা নানা কৌশল । মাদক নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা তথ্য ছাড়া মাদক ধরা বা শনাক্ত করার মতো আধুনিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নেই। মাদক নিয়ন্ত্রণের মূল কাজে নিয়োজিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অবস্থাও নাজুক।
পুরাতন মান্ধাতা আমলের সাজ-সরঞ্জাম, নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে ‘আধুনিক সাজে সজ্জিত মাদক সন্ত্রাসীদের। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ইউনিটের জন্যে গাড়ি, আর্মস, স্কানার, মোবাইল ট্রাকিং সুবিধা কিছুই নেই। তাদের সোর্স ও গোয়েন্দা তথ্য’র ওপর নির্ভর শীল হতে হয়। অভিনব কৌশল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সীমাবদ্ধতার কারণে মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতাও রাঘাব বোয়ালরা ধরা পড়ে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের জালে আটকা পড়ে দরিদ্র অসহায় বহনকারীরা। কৌশলের কারণে তারাও আইন-আদালত থেকে রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে।
যশোরে মাদক সংক্রান্ত মামলা পরিচালনা করেন এমন একজন সিনিয়র আইনজীবী আরিফুল ইসলাম জানান, মাদক পাচার ও ব্যবসায় যশোর শীর্ষে অবস্থান করলেও সর্বোচ্চ শাস্তির কোন নজির নেই। এমনকি, অধিকাংশ মামলায় আসামিদের সাজা হয় না। এর কারণ হচ্ছে, মামলায় আসামি ও সাক্ষীদের ঠিকানা ও পরিচয় সঠিক থাকে না। অনেক সময় সাক্ষী খুঁজে পাওয়া যায় না কিংবা সাক্ষীদের আগেই ম্যানেজ করে ফেলে আসামিরা। তার মতে, আসািেমদর ভুল তথ্য দেয়া হয় ইচ্ছে করে। টাকা দিয়ে বাদি কিংবা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসৎ সদস্যদের ম্যানেজ করে আসামিরা এ কাজটি করায়। এভাবেই আইনের ফাঁকফোঁকড় গলিয়ে তারা বেরিয়ে যায়। মামলা দায়েরেরও ক্ষেত্রেও সূ² কারসাজির আশ্রয় নেয়া হয়।
অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ, বিজিবি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যে মামলা করে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন আসামি থাকে না। পরিত্যক্ত মালামাল হিসেবে মামলা করা হয়। অর্থাৎ আর্থিক লেনদেনের কারণে আসামি ছেড়ে দেয়া বা ভুল ঠিকানা দেয়া হয়।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু মোর্তজা ছোট বলেছেন, অসম্পন্ন তথ্য ও সাক্ষীর অভাবে অনেক আসামি অপরাধ করেও রক্ষা পেয়ে যায়।
যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান মাদকমুক্ত যশোর গড়ার জন্যে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি সর্বশেষ ১০১ দিনের কর্মসূচীর আওতায় ১৪ জন মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের গডফাদারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করেছেন। পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, মাদকদ্রব্য দেশ জাতি ও ধর্মের শত্রæ। এর হাত থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। এটা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্যে প্রয়োজন, সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।