Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক চমক না দূরদর্শিতা?

প্রসঙ্গ ঃ গ্রিক দেবী মূর্তির অপসারণ

| প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


মহসিন রাজু : মুসলমানদের ঈমান ও আকিদার প্রতি সমর্থন জানিয়ে পবিত্র রমজান আসার আগেই জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে এবং সুপ্রীম কোর্টের চত্বরে স্থাপন করা তলোয়ারধারী ও শাড়ী পরিহিতা  গ্রিক পূরাণে বর্ণিত বিচারের দেবী থেমিসের ভাষ্কর্য অথবা মুর্তি সরিয়ে দেয়া হয়েছে । এরপর বলতেই হবে রাজনৈতিক দল হিসেবে ক্ষমতাসীন মহাজোটের বৃহত্তম শরিক দল আওয়ামীলীগ  প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতি ক্ষেত্রে বিজ্ঞতার পাশাপাশি রাজনৈতিক চমক বা দূরদর্শিতারই পরিচয় দিলেন বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা ।
তবে ঘটনার সংগে সংগেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কাজটি কি সরকারের ইচ্ছায় হয়েছে নাকি সুপ্রিম কোর্টের প্রধাণ বিচারপতি এসকে সিনহার সিদ্ধান্তে হয়েছে ? চলমান  বিতর্কের  মধ্যেই সাদামাটাভাবে সর্বস্তরের জনগণ ঠিকই বুঝে নিয়েছে কাজটা আসলে সরকার কিংবা আরেকটু খোলামেলা ভাবে বললে বলতে হবে সরকার প্রধান শেখ হাসিনার ইচ্ছা এবং প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তেই হয়েছে।
কিছু রামপন্থী বা কিছু বামপন্থী তাদের সংকীর্ণতা , রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা, সরকার বা আওয়ামীলীগকে নিজেদের পকেটস্থ করার বাসনা বা হেফাজতে ইসলামের প্রতি ইর্ষাকাতরতা থেকে হয়তো এটা অপসারণের বিরোধিতায় মাঠ গরমের চেষ্টা করছে । তবে পর্যবেক্ষকদের অভিমত হল, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ট ভোটার এটা ভালো ভাবেই গ্রহন করেছে । বর্তমান সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং জামায়াত জোটের শীর্ষ নেতৃত্ব এখন অবশ্য ভালো ভাবেই অনুভব করছেন যে আগামী নির্বাচনের মাঠে আওয়ামীলীগকে ইসলাম বিরোধি হিসেবে চিত্রিত করা সহজ হবেনা । কারণ সামপ্রতিক সময়ে সরকার কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাকে স্বীকৃতি দেয়াসহ ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার কাজটি এতো  দ্রæততার সাথে করেছে যে দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় সংগঠন / রাজনৈতিক দলগুলো খানিকটা অবাকই হয়েছে । কাজগুলো হয়ে যাবার পরে দেশের ধর্মীয়সংগঠনগুলোর পরিচালক বা সংগঠকরা ভাবছে , এই একই কাজগুলো কেন অতীতে বিএনপি বা  ৪ দলীয় জোটের সরকার করেনি ?
অনেক পর্যবেক্ষই মনে করে , পৌরানিক গ্রিক দেবী থেমিসের মুর্তি / ভাষ্কর্যটি পবিত্র রমজানের আগেই জাতীয় ঈদগাহের সামনে এবং সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তটির রাজনৈতিক তাৎপর্যে লাভবান হবে আওয়ামীলীগ । যেমন ভাবে আওয়ামীলীগ লাভবান হয়েছিল ১৯৭০ ও  ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে নাটকীয় ভাবে অংশ নিয়ে ।
রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় অগ্রসর আওয়ামীলীগের কৌশলে একসময় জামায়াত এর সংগে ছিল ভবিষ্যতে ও হয়তোবা পুরো অথবা খন্ডিত জামায়াত আওয়ামীলীগের সংগে থাকলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না ।
চীনপন্থী দিলীপ বড়–য়া , মস্কোপন্থী মতিয়া চৌধূরী , নুরুল ইসলাম নাহিদ , প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত কিংবা ৭৫ পূর্ব সময়ে আওয়ামীলীগের জন্য বিপজ্জনক দল জাসদের নেতা প্রথমে ( ১৯৯৬- ২০০১ সালে) আ স ম আব্দুর রব ,  বর্তমানে  হাসানুল হক ইনুকে দলে নেওয়া / মন্ত্রীত্ব প্রদান নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে বা থাকবেই । তবে সব কিছুর নিট ফলাফলেই কিন্তু আওয়ামীলীগ আজ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসিন , এই বাস্তবতা স্বীকার্য । তাই মুর্তি অপসারণের কৌশলটি যদি হয় কেবলই রাজনৈতিক অথবা নৈতিক / রাজনৈতিক দুটোই। তারপরও ভোটের ক্যালকুলেশনে এটা আওয়ালীগকেই লাভবান করবে নিঃসন্দেহে ।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৯ মে, ২০১৭, ৭:৪৭ এএম says : 0
    আমি মহসিন রাজুকে তার সুনিপুন ভাবে চলতি সংবাদের উপর দেয়া ব্যাখ্যা পাঠকরে খুবই খুশি হয়ে তাকে জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। তার প্রতিটি কথা সত্য এবং বাস্তব। শেখ হাসিনা খুবই কৌশল পন্থা অবলম্বন করে এগিয়ে যাচ্ছেন তাকে এখন ধরা খুবই মুশকিল এটাই সত্য। তবে সাধারন মানুষ তার ছাত্রলীগের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে তাই এদিক দিয়ে চিন্তা করলে নীরব ভোটের আঘাতে আবার তিনি কুবকাত হয়ে যেতে পারেন এটাই আমার ভয়ের কারন। ছাত্রলীগ এখন প্রবাসীদেরকেও ছাড় দিচ্ছে না তাদের চাঁদাবাজির ক্ষেত্রে। ঢাকার পশ্চিম মালিবাগেও এক প্রবাসী ছাত্রলীগের বলির পাঠায় রুপায়িত হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে শায়েস্তা করতে পারছেনা তাই এখন আমি মনেকরি আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কেহই এসব ছাত্রলীগের ছেলেদেরকে শায়েস্তা করতে পারবে না; এটাই আমার বিশ্বাস। আমি আজ ইতিহাসের পাতায় লিখে যাচ্ছি যতই ভাল কাজ করুক আওয়ামীলীগের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতি ক্ষেত্রে বিজ্ঞতার পাশাপাশি রাজনৈতিক চমক বা দূরদর্শিতারই পরিচয় দেন তারপরও এবার তাকে নির্বাচনে কঠিন সমস্যার সৃষ্টি করবে তারই পোষ্য ছাত্রলীগ। এই ছাত্রলীগের জন্যই জনগণ তাকে পুনরায় ক্ষমতায় বসাতে সন্দিহান হয়ে গেছে ফলে তিনি এক কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ন হতে যাচ্ছেন এই নির্বাচনে এটাই সত্য। আল্লাহ্‌ নেত্রী হাসিনাকে ছাত্রলীগ দমন করারমত ক্ষমতা প্রদান করুন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেখ হাসিনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ