পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : স্বর্ণ আমদানি সহজীকরণসহ একটি যুগোপযোগী ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত স্বর্ণের দোকানে অভিযান চালিয়ে হয়রানি না করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে স্বর্ণ আমদানির বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে বাজুস। জুয়েলার্স সমিতির সদস্যরা জানান, সারা দেশে ১৭ হাজার নিবন্ধিত জুয়েলার্স রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ সম্পৃক্ত। কাজেই তাদের হয়রানি করলে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাজুসের সভাপতি গঙ্গা চরন মালাকার ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাসহ বাজুসের সদস্য জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মুখপাত্র ডা. শাহীন বলেন, আমরা সরকারের কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নই। তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট নিয়মনীতির আওতায়। আমরা এ দেশের ব্যবসায়ী সমাজ। সরকারকে সকল ভ্যাট, আয়কর পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখে চলেছি। আমরা যেন ইতিহাস হয়ে না যাই, তাই সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চোরাচালানের রুট (রাস্তা) হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভারতের সোনার দাম ও আমদানি খরচ অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের মাধ্যমে সোনা ভারতে যাচ্ছে। নীতিমালা করা হলে দেশের স্বর্ণ শিল্প লাভবান হবে। যদিও নীতিমালা হলেও স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব হবে না। তবে তখন এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
এলসির মাধ্যমে কেন স্বর্ণ আমদানি করা হয় না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাজুস সদস্যরা জানান, এলসির মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানি করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সেজন্য তাঁতিবাজারের পোদ্দারদের কাছ থেকে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে আসা স্বর্ণ কিনে ব্যবসা করা হয়।
এভাবে স্বর্ণ ব্যবসা বৈধ নাকি অবৈধ, এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, স্বর্ণ ব্যবসা বৈধ। যদি বৈধ না হয়, তাহলে আমরা সরকারকে কীভাবে ভ্যাট দেই। এ ছাড়া সরকার কখনো বলেনি স্থানীয় ব্যবসায়ী বা প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয় আসা স্বর্ণ কেনা যাবে না। আগামীতে সরকার যেভাবে নীতিমালা দেবে, আমরা সেভাবেই ব্যবসা করব।
স¤প্রতি আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শাখা থেকে যে ২৫০ কোটি টাকার স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে, তা অবৈধ বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাজুস সদস্যরা আরো বলেন, আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ বৈধ নাকি অবৈধ তা সর্বোচ্চ আদালত নির্ধারণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে এলসির (লেটার অফ ক্রেডিট) মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানি সহজীকরণ, গোল্ডব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ভ্যাট বা মূসক হার ৫ শতাংশ রাখা সহ ১০ দফা দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবিগুলো- ভরিপ্রতি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণ আমদানিতে ৫০০ টাকা এবং শুল্ক তুলে দেওয়া। বর্তমানে ভরিপ্রতি তিন হাজার টাকা শুল্ক এবং অগ্রিম ভ্যাট (এটিভি) বাবদ ৪ শতাংশ দিতে হয়। এছাড়াও ব্যাংকিং জটিলতা নিরসন করে এলসির মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানি সহজ করা। বৈধ জুয়েলার্সদের নিকট স্বর্ণ সরবারহ করতে গোল্ড এক্সচেঞ্জ বা গোল্ড ব্যাংক করার প্রস্তাব করা হয়।
হীরা ও হীরক খচিত অলংকারের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ, সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ ও মূসক দেড় শতাংশ নির্ধারণের দাবি করেছে। একই সঙ্গে ৪ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জাননা ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে হীরা ও হীরক খচিত অলংকার আমদানিতে ১৫২ দশমমিক ৮২ শতাংশ ভ্যাট ও ট্যাক্স অরোপিত আছে।
বনানীর ধর্ষণ ও আপন জুয়েলার্স সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আজকের সংবাদ সম্মেলনের সঙ্গে এ ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তাই সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করার জন্য আমাদের স্বর্ণ শিল্পের জন্য একটি নীতিমালা প্রয়োজন। আর এ দাবিতেই এ সংবাদ সম্মেলন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।