গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর মুগদাপাড়া এলাকার শতভাগ সড়কবাতি জ্বালানোর ঘোষণা দেন। এছাড়া ওই এলাকার জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মুগদা এলাকায় চলতি এক মাসের মধ্যে একশ’ ডাস্টবিন ও পরে আরও দুইশ’ ডাস্টবিন দেয়া হবে। তিনি বলেন, দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন এলাকায় ১৫ হাজার ডাস্টবিন দেয়া হবে। আপনারা এ ডাস্টবিনে সন্ধ্যা ৭টার পর ময়লা ফেলবেন, যাতে রাতের মধ্যেই পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা নিয়ে যেতে পারে। তাহলে দিনে আর দুর্গন্ধ সহ্য করতে হবে না। তিনি শহরকে সুন্দর করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর মুগদাপাড়া ওয়াসা রোডে পরিচ্ছন্ন বছর-২০১৬ উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ‘জনপ্রতিনিধি জনতার মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম জনতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনলেন। এর মধ্যে অনেক সমস্যার কথা শুনে তিনি সাথে সাথেই সংস্থার কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। আর যেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে করা সম্ভব নয়, সেগুলোও দ্রুত সমাধান করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি’র ৬নং ওয়ার্ডের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। সভার শুরুতে মেয়র এলাকাবাসীকে তাদের সমস্যার কথা মন খুলে বলার আহ্বান জানান। মেয়রের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৫ থেকে ২০ জন এলাকাবাসী মেয়র ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে সরাসরি প্রশ্ন করে এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এ সময় নগরবাসী মশার যন্ত্রণা, পানিবদ্ধতা, যানজট, কুকুরের উপদ্রব, স্যুয়ারেজ লাইন থেকে ময়লা পানি উপচে পড়া, মসজিদের জায়গা দখল, ব্রিজ সমস্যা, রাস্তা ভাঙাচোরা ও সরু হওয়া, সড়কবাতি না জ্বলা, খাওয়ার পানির সমস্যা, লাইনের গ্যাসে দুর্গন্ধ, ভালো মানসম্পন্ন স্কুলের অভাব, কমিউনিটি সেন্টারের অভাব, মূল সড়কে রেলওয়ের কনটেইনার রাখা ইত্যাদি সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
মুগদা ঝিলপাড়ের আব্দুস সবুর মাতুব্বর বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই এলাকায় পানিবদ্ধতা দেখা দেয়। তখন নৌকায় পার হতে হয়। স্যুয়ারেজের ময়লা পানি উপচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
দক্ষিণ মুগদার বাসিন্দা আব্দুর রউফ বলেন, এলাকার রাস্তাগুলো সরু। বিশেষ করে কাজী জাফর আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা সরু ও ভাঙাচোরা। এ কারণে এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সও ঢুকতে পারে না।
এ ব্যাপারে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এলাকার বাসিন্দারা রাস্তার দু’পাশ থেকে কিছু জায়গা ছেড়ে দিলে আমি রাস্তা চওড়া করে দেয়ার উদ্যোগ নেব।
দক্ষিণ মুগদার বাসিন্দা নাসিম আল রশিদ বলেন, মুগদা এলাকার বেশিরভাগ সড়ক বাতিই জ্বলে না। সূর্য ডোবার সাথে সাথে এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। তার বক্তব্যের সাথে পুরো এলাকাবাসীই সমস্বরে ঐকমত্য পোষণ করেন। তখন মেয়র ঘোষণা দেন আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মুগদা এলাকার শতভাগ সড়ক বাতি জ্বলানোর ব্যবস্থা করা হবে। না হলে সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই প্রকৌশলীকে থাকার দরকার নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওই এলাকার একজন নারী অভিযোগ করে বলেন, এ এলাকা দিয়ে একটি খাল বয়ে গেছে, যে খাল দিয়ে সারা ঢাকা শহরের ময়লা পানি নিষ্কাশন হয়। যে কারণে এ খালের ময়লা আবর্জনায় প্রচুর মশার জন্ম হয়। এ মশার উৎপাতে বাসা বাড়িতে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এর জবাবে মেয়র বলেন, মশা তাড়াতে বিশেষ কর্মসূচি চলছে। প্রয়োজনে দ্বিগুণ ওষুধ প্রয়োগ করা হবে এ এলাকায়।
এলাকায় কুকুরের উপদ্রবের বিষয়ে একজনের অভিয়োগের প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুকুর নিধন করা যাচ্ছে না। এজন্য ভ্যাকসিন দিয়ে বন্ধ্যান্তকরণ করা হচ্ছে।
কমিউনিটি সেন্টারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, দক্ষিণ সিটিতে ২২টি আধুনিক মানের কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মুগদা এলাকাতেও একটি ১২তলা বিশিষ্ট কমিউনিটি সেন্টার হবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এলাকায় মাদক ও জুয়ার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। কেউ সরকারি দলের লোক পরিচয় দিলেও পুলিশকে বলেছি তাকে আগে আটক করার জন্য। ঠিকাদারদের সিন্ডিকেটের কারণে রাস্তার কাজ ১০ বছরের জায়গায় দুই বছরও টেকেনা অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ ধরনের ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মেয়রের সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, সচিব খান মোহাম্মদ রেজাউল করিম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দিন ভুঁইয়া, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালিদ আহম্মেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোস্তফা কামালসহ ডিএসসিসির প্রকৌশল, বর্জ্যসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।