Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পরমাণু যুদ্ধে ব্রিটিশ রাজপরিবার এবং প্রধানমন্ত্রীর গোপন আশ্রয়

উইল্টশায়ারে ১০০ ফুট গভীরে গোপন শহর বার্লিংটন

| প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা জোটের দ্ব›দ্ব ফের উসকে দিচ্ছে স্নায়ুযুদ্ধকালীন বাস্তবতা। পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সামরিক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে স¤প্রতি শত্রæদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আগাম পরমাণু হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন। অন্যদিকে, মস্কো থেকে বলা হয়েছে, ভুল করলে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে যাবে ব্রিটেন। তবে সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও রাজপরিবারকে রক্ষা করে সরকার পরিচালনা করতে বহু বছর আগে থেকেই তৈরি করে রাখা হয়েছে এক গোপন শহর। গোপন ওই শহরের সাংকেতিক নাম দেয়া হয়েছে বার্লিংটন। দেশটির উইল্টশায়ারের কোর্সহ্যাম শহরে মাটির ১০০ ফুট গভীরে গোপন শহরটি অবস্থিত। পরমাণু হামলা চালালে ব্রিটিশ সরকার জরুরিভাবে ওই শহর থেকেই দেশ পরিচালনা করবে। ১৯৫০ সালে নির্মিত ওই বাঙ্কারটিতে রয়েছে হাসপাতাল, ক্যান্টিন, রান্নাঘর, লন্ড্রি, প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মতো ব্যবস্থা। জরুরিভাবে সরকার পরিচালনার মতো প্রয়োজনীয় লোকবল যাতে বসবাস করতে পারে সে ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। ২৪০ একর জায়গায় এ ধরনের বাঙ্কার শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্তই ছিল। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড ম্যাকমিলান, যিনি দেশটির রাজপরিবারের একজন সদস্য ছিলেন তার ইচ্ছায় ওই বাঙ্কারটি তৈরি করা হয়েছিল। পানি ও শৌচাগারসহ বসবাসের সব ধরনের ব্যবস্থাই আছে সেখানে। মাটির নিচে ওই শহরটিতে রয়েছে ৬০ মাইলের বেশি ভূগর্ভস্থ সড়ক, একটি হ্রদ ও বেকারি। এমনকি এখনো সেখানে অনেক টেলিফোন সেট রয়েছে যা ব্যবহৃত হয়নি। গোপন ওই শহরটিতে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাছাড়া, বাঙ্কারটিতে রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিপুল বই। পরমাণু যুদ্ধে যুক্তরাজ্য পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও যেন দেশটিকে পুনর্গঠন করা যায়, সে জন্য পর্যাপ্ত তথ্য বইগুলোতে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। বইগুলোতে স্থান পেয়েছে মানচিত্র, বৈজ্ঞানিক তথ্য, পার্লামেন্টের আইন এবং অসংখ্য প্রযুক্তিগত ম্যানুয়াল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যেন সপরিবারে নিরাপদে ওই শহরে অবস্থান করতে পারেন সে জন্য শহরটিতে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ একটি ফ্ল্যাট। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের জন্য নির্মিত কক্ষগুলোর দেয়ালের রং সাদা। টানা তিন মাস অবস্থানের জন্য বাঙ্কারের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত জ্বালানির সুব্যবস্থা রয়েছে। আর সুদীর্ঘ ভূগর্ভস্থ এই শহরের ভেতরে চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ব্যাটারিচালিত বেশ কিছু গাড়ি। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের স্নায়ুযুদ্ধের একপর্যায়ে এ ধরনের গোপন শহর তৈরির বাস্তবতা উপলব্ধি করে তখনকার ব্রিটিশ সরকার। ১৯৫৫ সালে সাবেক ব্রিটিশ সরকার আশঙ্কা করে, দেশটি আক্রান্ত হলে অন্তত ১৩৫টি পারমাণবিক বোমা হামলার শিকার হতে পারে। আর লন্ডন শহরেই পড়তে পারে ৩৫টি পারমাণবিক বোমা। এসব বোমা হামলায় ১৭ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে এবং আরও ১০ লাখ মানুষ আহত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়। গোপন শহরে বিবিসির জন্য একটি কার্যালয় ছিল। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এই গোপন শহরটির রক্ষণাবেক্ষণ বেশ ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। স¤প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের কাছে গোপন এই শহরটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে আশ্চর্য এই অবকাঠামোর ভেতরের রূপ। অব্যবহৃত এই বাঙ্কারটি এখন গোপন শহর হিসেবে ব্যবহার হতে পারে কি-না, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ‘ইংলিশ হেরিটেজ একে ঐতিহ্যের একটি অংশ হিসেবে সংরক্ষণের দাবি তুলেছে। মিরর, সান, বিজনেস ইনসাইডার।



 

Show all comments
  • jamil ahmed ২২ মে, ২০১৭, ৩:৫০ এএম says : 2
    Khub valo uddog
    Total Reply(0) Reply
  • nasrullah mansur ২৪ মে, ২০১৭, ২:৫৯ পিএম says : 0
    মৃত্যু হাজির হয়লে সাত জমিন নিচে গেলেও রক্ষা নেয়।যেই গাছ ইহুদিরা সম্মান করে সেই গাছ বলবে!আমার নিচে বাংকারে ইহুদি লুকায়ে আছে।এতএব নিরাপত্তা চাওয়া দরকার ‌আল্লাহর কাছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ