Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আয়ারল্যান্ডে ফিরল মুস্তাফিজ যাদু

| প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার
অভিষেকটা মনে আছে মুস্তাফিজুর রহমানের? এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাবার কথা নয় অবশ্য! এই তো সেদিনের ঘটনা- ২০১৫ সালের ১৮ জুন। ভারতের বিপক্ষে অভিষেকেই ৫ উইকেট নিয়ে বিশ্বময় আলোড়ন তুলেছিলেন কাটার মাস্টার। গেলবছর আইপিএল অভিষেকেও একই রুপ- সানরাইজার্স হায়দারাবাদকে দিলেন শিরোপাস্বাদ। তারপর থেকে ইনজুরিতে পড়ে অনেকটাই যেন মিইয়ে গিলেছিলেন সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস। সেই যাদুই আবার যেন ফিরল আয়ারল্যান্ডে।
সবুজ ঘাসে ভরা উইকেট। লম্বা, তরতাজা ঘাস। ঝলমলে রোদ। টস ভাগ্য এবার মাশরাফি বিন মুর্তজার পাশে। হাসল বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরুর সেই হাসি অটুট মাঝ বিরতিতেও। দুর্দান্ত বোলিং করলেন মুস্তাফিজুর রহমান। সঙ্গ দিলেন অন্যরাও। আয়ারল্যান্ডকে দুশর নিচে বাঁধল বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ১৮১ রানে গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
আগের ম্যাচে দারুণ বোলিং করা মুস্তাফিজ এদিনও দলের সেরা। ২৩ রানে নিয়েছেন দুই উইকেট। আগের ম্যাচের হতাশা সরিয়ে কিপটে বোলিংয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি। অভিষিক্ত সানজামুল ইসলামের শিকারও দুটি।
বাংলাদেশের শুরু ছিল মুস্তাফিজের ছোবলে। সেটি আক্ষরিক অর্থেই ছিল ছোবল। লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা ফিরিয়ে দিল বিপজ্জনক পল স্টার্লিংকে। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ওয়াইড ¯িøপে ক্যাচ।
আরেকপাশে রুবেলের শুরুটাও ছিল ভালো। প্রথম রানের দেখা পেতে আইরিশদের অপেক্ষা করতে হয় ১৫ বল। সবুজ আর শুরুর সাফল্যে অতি উত্তেজনায়ই কিনা, এরপর একটু এলোমেলো ছিল লাইনলেংথ। বিশেষ করে রুবেল ফুল লেংথের বদলে লেংথ বলই করছিলেন বেশি। এই সুযোগে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড ও এড জয়েস। সেই জুটি ভেঙেছে স্পিনে। যদিও উইকেট নিতে পারতেন মাশরাফি। অধিনায়কের বলে পোর্টারফিল্ডের যে ক্যাচটি হাতে জমাতে পারলেন না মোসাদ্দেক, সেটি ইচ্ছে করেও মিস করা কঠিন! তবে প্রায়শ্চিত্ত করেছেন দ্রæতই। পরের ওভারেই মোসাদ্দেকের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ফেরান পোর্টারফিল্ডকেই। অ্যান্ডি বালবার্নি উইকেটে গিয়েই ছক্ক মেরেছিলেন সাকিবকে। এই অলরাউন্ডার জবাব দিয়েছেন দারুণ এক আর্ম ডেলিভারিতে বোল্ড করে।
আয়ারল্যান্ড একটু গুছিয়ে ওঠে এরপরই। চোট কাটিয়ে ফেরা জয়েস ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নায়াল ও’ব্রায়েন গড়ে তোলেন জুটি। উইকেটও ততক্ষণে অনেকটা সহজ হয়ে এসেছে। সবুজ ঘাসের উইকেটও মনে হচ্ছিলো খানিকটা মন্থর। ত্রাতা আবারও মুস্তাফিজ। নায়াল ও’ব্রায়েনকে (৩০) ফিরিয়ে ভাঙলেন ৫৫ রানের জুটি। সেটির হাত ধরে টপাটপ আরও কিছু উইকেট। দুর্দান্ত স্পেলে আরও দুটি উইকেট নিলেন মুস্তাফিজ। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম ওভারেই সানজামুল ফেরালেন জয়েসকে। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান করেছেন ৭৪ বলে ৪৬। ১৩৪ রানে আয়ারল্যানড হারায় ৭ উইকেট। স্বীকৃত কোনো ব্যাটসম্যান নেই। দুই বোলার ব্যারি ম্যাককার্থি ও জর্জ ডকরেল তবু চেষ্টা করেছেন লড়াইয়ের। গড়েছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি জুটি।
লেজের ব্যাটিং আবারও যখন মাথব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, উইকেট ধরা দেয় তখনই। নিজে বল হাতে নিয়েও কী মনে করে আবার সানজামুলকে আনেন মাশরাফি। বাঁহাতি স্পিনার আস্থার প্রতিদান দেন ৩৫ রানের জুটি ভেঙে। শেষটা করেছেন মাশরাফি। ম্যাচ জুড়ে দরুণ সব অফ কাটার করেছেন বাংলাদেশ অধিয়ক। এক ওভারেই তুলে নিয়েছেন শেষ দুই উইকেট। শেষটিতে ডানদিকে ঝাপিয়ে এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক।
টুর্নামেন্টে ভালো করতে, র‌্যাঙ্কিংয়ে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জয়টা আবশ্যক। বোলাররা তৈরি করে দিয়েছেন পথ। সেই পথ ধরে ব্যাটসম্যানদের হাঁটার পালা।
স্কোর কার্ড
ত্রিদেশীয় সিরিজ, ৪র্থ ওয়ানডে
বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড, ডাবলিন
টস : বাংলাদেশ
আয়ারল্যান্ড ইনিংস    রান    বল    ৪    ৬
জয়েস ক তামীম ব সানজামুল    ৪৬    ৭৪    ৩    ০
স্টার্লিং ক সাব্বির ব মুস্তাফিজ    ০    ৩    ০    ০
পোর্টারফিল্ড ক এন্ড ব মোসাদ্দেক    ২২    ২৫    ৩    ১
বলববির্নি বোল্ড সাকিব    ১২    ২৪    ০    ১
নাইল ক তামীম ব মুস্তাফিজ    ৩০    ৪২    ১    ১
কেভিন ক মোসাদ্দেক ব মুস্তাফিজ    ১০    ১১    ১    ০
উইলসন ক মুশফিক ব মুস্তাফিজ    ৬    ১৭    ০    ০
ডকরেল ক মুশফিব ক মাশরাফি    ২৫    ৫০    ১    ০
ম্যাকার্থি এলবি ব সানজামুল    ১২    ২৩    ১    ০
মুরতাহ অপরাজিত    ৫    ৯    ০    ০
চেস ক মুশফিক ব মাশরাফি    ০    ১    ০    ০
অতিরিক্ত (বা ১, লেবা ৪, ও ৮)    ১৩
মোট (অলআউট, ৪৬.৩ ওভারে)    ১৮১
উইকেট পতন : ১-০ (স্টার্লিং), ২-৩৭ (পোর্টারফিল্ড), ৩-৬১ (বলবির্নি), ৪-১১৬ (নাইল), ৫-১২৬ (জয়েস), ৬-১৩৪ (কেভিন), ৭-১৩৬ (উইলসন), ৮-১৭১ (ম্যাকার্থি), ৯-১৮০ (ডকরেল), ১০-১৮১ (চেস)।
বোলিং : রুবেল ৮-১-৪১-০, মুস্তাফিজ ৯-২-২৩-৪, মাশরাফি ৬.৩-১-১৮-২, মোসাদ্দেক ৬-০-২১-১, সাকিব ৯-০-৩৮-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-১৩-০, সানজামুল ৫-০-২২-২। অসমাপ্ত



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুস্তাফিজ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ