Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশের একজন মানুষও না খেয়ে থাকবে না -শেখ হাসিনা

ফসল না ওঠা পর্যন্ত হাওড়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি

| প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এ কে এম আব্দুল্লাহ নেত্রকোনা থেকে : ‘আগামী ফসল ঘরে না উঠা পর্যন্ত হাওর অঞ্চলের মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজির খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল, ওএমএস-এর চাল বিতরণ করা হবে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশের একজন মানুষও না খেয়ে থাকবে না। আমার বাবা এ দেশ স্বাধীন করেছেন মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাবার জন্য। আমি এসেছি আপনারা যেন উন্নত জীবনযাপন করতে পারেন সেজন্য কিছু করতে। বাবার স্বপ্ন ও লক্ষ্য ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। আমি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। নেত্রকোণার একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। হাওরাঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের তালিকা করে গৃহনির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে, খাদ্যের কোন অভাব হবে না। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করা হবে। গতকাল বন্যা দূর্গত নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার কলেজ মাঠে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ব্যাংকের ঋণ আদায় স্থগিত ও সুদ মওকুফ করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে আবার ঘুরে দাড়াতে পারে তার জন্য বিনামূল্যে বীজ সরবরাহ করা হবে। সহজ শর্তে কৃষি ঋণ দেয়া হবে। তিনি হাওরাঞ্চলের কৃষকদেরকে ধান উৎপাদনের পাশাপাশি সবজি চাষ এবং হাস মুরগী পালনের আহবান জানান। ফসলের ক্ষতি প্রসঙ্গ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাওরের ফসল রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি নদী নালা খনন করা হবে। নদী ভাঙ্গা মানুষগুলোকে ঘর নির্মাণসহ হাওরাঞ্চলে আবাসিক স্কুল নির্মাণ করে দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরে ঘাতকরা জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি, নিষ্পাপ শিশু রাসেলসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করে আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করেছিল। তিনি দেশে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনগনকে সচেতন থাকার আহŸান জানিয়ে বলেন, মাদক ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে যুব সমাজসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। বিএনপি জামায়াত যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তারা দেশের জনগনের ভাগ্য উন্নয়ন না করে নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করেছে। দেশের অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। এই এলাকার লুৎফুজ্জামান বাবরকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়ে খালেদা জিয়া বান্দরের হাতে লাঠি তুলে দিয়েছিল। সে এলাকার বারজনকে হত্যা করেছিল। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন ধারাকে ব্যাহত করতে বিএনপি জামায়াত আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। বিএনপির ক্ষমতায় থাকলে লুটপাট ও হত্যার রাজনীতি করে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এরা দেশের মানুষকে জিম্মি করে ফেলে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নেত্রকোণা জেলা যুবলীগের সভাপতি স্বপন জোয়ারদারসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে বায়তুল মোকাররমে আগুন জ্বালিয়ে শতশত কোরআন শরিফ পুড়িয়েছে। বগুড়ায় মসজিদে কোরআন পাঠরত অবস্থায় মুসল্লিদের কুপিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছে। খালেদা জিয়ার নির্দেশে আন্দোলনের নামে ২৭১ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ৩ হাজার ২৫২টি গাড়ি ও ৭০টি সরকারি অফিস পোড়ানো হয়েছে।
তাঁর সরকারের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, আওয়ামীলীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে। আমি দেশ ও জনগণের সেবা করতে এসেছি। আমি আপনাদের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটাতে চাই। উপস্থিত জনতাকে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক। দেশের উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে আগামীতেও নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে। তিনি এ সময় ৫০ জন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষককে ৩০ কেজি করে চাল ও নগদ এক হাজার টাকা করে ত্রাণ বিতরণ করেন। পরে তিনি নগর ইউনিয়নের ভল্লবপুর গ্রামেও ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি শুধু ঢাকায় বসে মিডিয়ার সামনে কথা বলে, মির্জা ফখরুল এসেছিলেন ফটোসেশন করে চলে গেছেন। খালেদা জিয়াও এখানে আসেননি। ত্রাণ দেননি।
জেলা প্রশাসক ড. মোঃ মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন। এ সময় উপস্থিত ছিলে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল এমপি, ছবি বিশ্বাস এমপি, ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু এমপি, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জি এম সালেহ্ উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় প্রমূখ।



 

Show all comments
  • rana ১৯ মে, ২০১৭, ৪:৪৮ এএম says : 0
    SPEAK THE TRUTH,TRUTH SHALL PREVAIL YOU
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৯ মে, ২০১৭, ৬:৩৮ এএম says : 0
    এ কে এম আব্দুল্লাহকে সুন্দর খবর পরিবেশনের জন্য ধন্যবাদ। নেত্রী হাসিনা তার কথা বাস্তবায়িত করার জন্য যে যে দপ্তরের প্রয়োজন সেই দপ্তরের মন্ত্রীদেরকে সাথে নিয়ে তিনি তার নির্দেশ দিয়েছেন এবং মন্ত্রীরাও সহমত আছেন। এখন একে কার্য্যে পরিণত করবে সরকারি আমলারা। আমাদের দেখার বিষয় ছিল সরকারি দলের পদক্ষেপ, সেটা আমারা দেখতে পেলাম এখন এই অঞ্চলে যদি কোন রকম অসুবিধা কিংবা দূর্ভিক্ষ দেখা দেয় তার দায় দায়িত্ব অবশ্যই প্রশাসনকেই মানে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকেই নিতে হবে। আমরা কোন অজুহাত শুনতে চাইনা এটাই বাস্তবতা। আল্লাহ্‌ আমকে সহ সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝার ও সেটা পালন করার ক্ষমতা দিন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেখ হাসিনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ