পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামসুল ইসলাম : বিদেশে কর্মরত অবস্থায় আহত ও অসুস্থ্য হয়ে যারাই দেশে ফিরছেন তাদের আর্থিক অনুদান পেতে গলদঘর্ম পোহাতে হচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে আর্থিক অনুদান পেতে বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরে অনেকেই নিরাশ মনে বাড়ী ফিরছে। পঙ্গু ও আহত বিদেশ ফেরত কর্মীদের কেউ কেউ আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্য স্ব স্ব জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জামা দিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরেও আর্থিক অনুদান ভাগ্যে যুটছে না। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সভার সদস্যদের অনুমোদন সাপেক্ষে আর্থিক অনুদান দেয়া হচ্ছে অসুস্থ্য ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীদের। বোর্ড সভার কোনো কোনো সদস্যের তুচ্ছ¡-তাচ্ছিল্যের করণেও অনেক পঙ্গু ও অসুস্থ্য প্রবাসী কর্মীরা আর্থিক অনুদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশে ফেরত আসা একজন অসুস্থ্য প্রবাসী কর্মী ইনকিলাবকে বলেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে ভূঁতের আছর পড়েছে। অসুস্থ্য প্রবাসী কর্মীদের আর্থিক অনুদানের ফাইল অনুমোদনের জন্য বোর্ড সভায় উঠলেই নানা অযুহাত তুলে তা’ অনুমোদন দিচ্ছে না। যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই বিদেশ প্রত্যাগত অনেক পঙ্গু ও অসুস্থ্য কর্মীদের আর্থিক অনুদান দেয়া হচ্ছে না। কেন আর্থিক অনুদান দেয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্ন করা হলে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অথর্ব কর্মকর্তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের সুরে বলে দিচ্ছে আপনিতো বেশি পঙ্গু বা অসুস্থ্য হননি। আপনাকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে না। রিয়াদে কর্মরত অবস্থায় মেশিনের ভেতরে হাত ঢুকে যাওয়ায় পঙ্গু হয়ে চিকিৎসার টাকার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিজ গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে প্রবাসী কর্মী মোঃ মফিজুল ইসলাম। ভোলার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস যাচাই বাছাই করে পঙ্গু মফিজুল ইসলামেক আর্থিক অনুদান দেয়ার জন্য দু’মাস আগে জোর সুপারিশ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব গাজী মোঃ জুলহাসের কাছে প্রেরণ করেছে। বহু দেন দরবার করেও পঙ্গু মফিজুল ইসলামের ভাগ্যে আর্থিক অনুদান যুটছে না। গতকালও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে গেলে তাকে তারিয়ে দেয়া হয়। বর্তমানে পঙ্গু মফিজুল ইসলাম তার হাতে পুনরায় অপারেশনের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছে। সউদী আরব থেকে রেমিটেন্স আয়কারী প্রত্যাগত এই পঙ্গু মফিজুল আর্থিক অভাবের দরুণ সে তার হাত অপারেশন করাতে পারছে না। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের এসব অনিয়মের বিষয় দেখার এবং অসুস্থ্য প্রত্যাগতদের প্রতি সহানুভ’তি জানানোর কেউ নেই। বিদেশ প্রত্যাগত একাধিক অসুস্থ্য কর্মী এতথ্য জানিয়েছেন। সউদী আরবে কর্মরত অবস্থায় ব্্েরন ষ্টোকজনিত কারণে অসুস্থ্য হয়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার রায়চাঁদ গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে আবুল কাশেম ২০১৬ সালের ৪ আগষ্ট দেশে ফিরে আসে। অসুস্থ্য আবুল কাশেম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) হাসপাতালে ডাঃ আল-আমিনের চিকিৎসাধীন রয়েছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে আর্থিক অনুদানের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার পরেও সে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। ওমানে কর্মরত অবস্থায় বøাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ভোলার পূর্ব চরউমেদ গ্রামের মফিজুল হকের ছেলে মিলন ২০১৪ সালে দেশে ফেরত আসে। বহু চিকিৎসার পরে গত জানুয়ারী মাসে সে মারা যায়। মৃত মিলনের পিতা মফিজুল হক আর্থিক সহায়তার জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে সকল কাগজপত্র জমা দেয়ার পরেও নানা টালবাহানা করে তাদের ফাইল ফ্লোরে ফেলে রাখা হয়েছে। মৃত মিলনের স্ত্রী ফুলজান দু’সন্তান নিয়ে আনাহার-অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন। সউদী আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মোঃ জাকির হোসেন আর্থিক সহায়তার জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে লিখিত আবেদন জানিয়েও কোনো সহায়তা পায়নি। কল্যাণ বোর্ডের উপ-পরিচালক (কল্যাণ) শরিফুল ইসলাম অসুস্থ্য জাকিরের তথ্যাদি যাচাই বাছাই করে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য ভোলা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে নিদের্শনামা প্রেরণ করে। অসুস্থ্য জাকিরের আর্থিক সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে প্রেরণ করেছে। তার পরেও নানা অযুহাতে অসুস্থ্য জাকিরকে আর্থিক সুবিধাদি না দিয়ে দিনের পর দিন ঘুরানো হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।