Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় ভয়াবহ আর্সেনিক দুষণের শিকার হাজারো মানুষ

২০০৩ সাল থেকে বন্ধ বাওমাস প্রকল্প

| প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : প্রতিরোধ মূলক কার্যক্রম না থাকায় বগুড়া জেলার ১২ টি উপজেলার প্রায় ৫০ ইউনিয়নের মানুষ আর্সেনিক দুষনের কারণে সাস্থ্যহানীর শিকার হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ আর্সেনিক মিটিগেশন এন্ড ওয়াটার সাপলাই প্রজেক্টের (বাওমাস) মাধ্যমে আর্সেনিক উপদ্রæত এলাকায় চিহ্নিত করা এবং ঐ সব অঞ্চলে আর্সেসিক মুক্ত টিউবওয়ল স্থাপনের কাজ করা হতো। কিন্তু ২০০৩ সালে প্রকল্পটি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবার পর আর্সেনিক এলাকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা কমে যাওয়ায় তারা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ কর্তৃক (আর্সেনিক যুক্ত) লাল চিহ্নিত টিউবওয়েল থেকে পান ও ব্যবহার করছেন। এমন তথ্য দিয়েছেন জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুজ্জামান। আর্সেনিকে আক্রান্ত হলে তার অসুস্থ হতে সময় লাগে ৭/৮ বছর। বছরের পর বছর অসহনীয় মাত্রার আর্সেনিক পানি ব্যবহার করে ধীরে ধীরে এক পর্যায়ে সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, এর কোন চিকিৎসা নেই, শুধু আছে সচেতনতা বৃদ্ধি। আর্সেনিক দুষনের শিকার অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ গুন বেশি আর্সেনিকের অস্তিত্ব পেয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। বগুড়ার মহিষবান ইউনিয়নের চক মারিয়া গ্রামে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুজ্জামান তার জনবল দিয়ে পানি পরীক্ষা করার পর এই ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে আসে। পানিতে সহনীয় মাত্রার আর্সেনিক থাকে ৫০ পিপিবি। কিন্তু ঐ গ্রামের টিউবয়েলের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া গেছে ১০০০ পিপিবি (পার্টস পার বিলিয়ন)। গাবতলীর রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের কামার চট্ট্রগ্রামে পানিতে অসহনীয় মাত্রার আর্সেনিক আছে। ২০০৩ সালে বাওমাস প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবার পর বগুড়ার শিবগঞ্জ, সোনাতলা, শেরপুরসহ সকল উপজেলার চিত্র প্রায়ই একই রকম। সরকার আর্সেনিক সংক্রান্ত প্রকল্প গুটিয়ে নেয়ার পর আর্সেনিক প্রবন এলাকার মানুষ আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করছে। টিউবওয়েলের পানি ল্যাবরেটরীতে এনে পরীক্ষা করতে প্রায় সাড়ে ৪শ’ টাকা খরচ করতে চায় না কেউই। ফলে অজান্তে তারা আর্সেনিক যুক্ত পানি করে যাচ্ছেন। বাওমাস প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবার পর বাংলাদেশ রুলাল ওয়াটার সাপলাই এন্ড স্যানিটেশন (বি আর ডাবøু এস এসপি) প্রকল্প চালু হয় ২০১৩ সালে। এই প্রকল্প খুই স্বল্প পরিসরে কাজ করে থাকে। এই প্রকল্পের আওতায় বগুড়ায় শেরপুর উপজেলার সুঘাট, সোনাতলার জোড়গাছা ও পাকুল্লায় কাজ চলছে। আর্সেনিক নিয়ে সরকারি কোন অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তারা শুধু পানি পরীক্ষা করে দেন। নতুন কোন আর্সেনিক ফ্রি টিউবওয়ল স্থাপন করা হয়না। পানিতে আর্সেনিকের স্তর ভেদ করে টিউবওয়েল বসানোর কোন আর্থিক সংস্থান নেই তাদের কাছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুজ্জামান জানান, গাবতলীর রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের কামারচট্ট্র গ্রামে পানিতে অসহনীয় মাত্রার আর্সেনিক আছে। তাই এই এলাকার টিউবয়েলগুলোর মধ্যে আর্সেনিক মুক্ত টিউবয়েল সবুজ রং ও আর্সেনিকযুক্ত টিউবয়েল লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আর্সেনিক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ