Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সংশোধন চলছে বিশ্বায়ানের, ইতি ঘটেনি

| প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বায়ন নয়, যন্ত্রায়ন ও উদ্ভাবনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব বেড়েছে। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার এখনো সমাপ্তি ঘটেনি, বরং ব্যবস্থাটির সংশোধন চলছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সিইও কাউন্সিলের সভায় করপোরেট ব্যক্তিত্ব ও নীতিনির্ধারকরা এ কথা বলেছেন। গত মঙ্গলবার জাপানের টোকিওতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।  স্বাগতিক জাপানসহ যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও অন্যান্য দেশের নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ী নেতারা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এ আয়োজনে যোগ দেন। এ সময় তারা মুক্ত বাণিজ্যের ভবিষ্যত্, জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উত্থান, ব্রেক্সিটসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। গাড়ি নির্মাতা জোট রেনো-নিশান অ্যালায়েন্সের প্রধান কার্লোস ঘোন বলেছেন, মুক্ত বাণিজ্যের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যে জনমত গড়ে উঠছে তা ঠেকাতে রাজনীতিকদের উদ্যোগী হতে হবে। আমরা ভেবেছিলাম, মুক্ত বাণিজ্যের সুফল এত স্পষ্ট যে সবাই বিষয়টি বুঝতে পারবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আমরা আসলে ভুল করে গেছি। মুক্ত বাণিজ্যের কারণে ধনী দেশগুলোয় সস্তা শ্রম ও সস্তা পণ্যের ভিড় জমছেÍ এ মর্মে আশঙ্কা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। একই কারণে যুক্তরাজ্যে ভোটাররা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন এবং ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটছে। কার্লোস ঘোন ফ্রান্সের সদ্যসমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইমানুয়েল মাখোঁর জয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। নতুন ফরাসি প্রেসিডেন্টকে সচেতন ইউরোপীয় ও বাণিজ্যবান্ধব আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ব্রিটেন ইইউ ছাড়ার পর কি হবে তা আমার জানা নেই। বিশ্বে বিক্রীত প্রতি ১০টি গাড়ির মধ্যে একটি তৈরি করছে ফরাসি কোম্পানি রেনো, জাপানি কোম্পানি নিশান ও মিত্সুবিশিকে নিয়ে গড়া জোট। এ জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কার্লোস ঘোন। তিনি মনে করেন, বিশ্বায়নের ইতি ঘটেনি। বরং ব্যবস্থাটির কিছু সংশোধন চলছে। ফরাসি এ করপোরেট ব্যক্তিত্ব আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য ৮০০ গাড়ি রয়েছে। চীনে প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য গাড়ির সংখ্যা ২০০। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় এ সংখ্যা যথাক্রমে ৫০ ও ২০। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় গাড়ির সংখ্যা সবসময় একই থাকবে? না। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, ব্যাংক অব জাপানের গভর্নর হারুহিকো কুরোদাসহ স্বাগতিক দেশের বেশ কজন নীতিনির্ধারক গতকালের সভায় বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তার বক্তৃতার বেশির ভাগ জুড়ে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার কথিত কমফোর্ট উইমেন ইস্যুতে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মধ্যকার চুক্তি নিয়ে কথা বলেন। বিশ্বযুদ্ধের সময় দখলদার জাপানি বাহিনীর হাতে কোরীয় নারীদের নিগ্রহের ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়ে সাবেক কোরীয় প্রেসিডেন্ট পাক কুন হের সঙ্গে শিনজো আবে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন বিতর্কিত চুক্তিটি বাতিলের কথা বলেছেন। জাপানি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ চুক্তি থেকে সরে আসার কোনো ইচ্ছা জাপানের নেই। বাণিজ্য ইস্যুতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত আলোচনায় আমি আশ্বস্ত বোধ করছি। দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি করার ক্ষেত্রে অনেক বিকল্প রয়েছে। জাপানের গাড়ি কোম্পানিগুলো উত্তর আমেরিকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (নাফটা) সুযোগ নিতে মেক্সিকোতে বেশকিছু কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট টয়োটাসহ কয়েকটি জাপানি কোম্পানির বিরুদ্ধে সামঞ্জস্যমূলক করারোপের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এ বিষয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আমি বুঝি। কিন্তু সরবরাহ চেইনের বিষয়টিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রধান সম্পাদক জেরার্ড বেকার শিনজো আবেকে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তির বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এ চুক্তির আশা ছেড়ে দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে শিনজো আবে বলেন, ‘টিপিপির চেতনা ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এখনো টিপিপির আশা ছাড়েননি। গত সোমবার সিএনবিসির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন, ‘আমি টিপিপি চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসার আশা করছি।  ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বায়ান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ