পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হদরোগ ও স্ট্রোকসহ অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ
হাসান সোহেল : উচ্চ রক্তচাপ একটি ঝুঁকিপূর্ণ অসংক্রামক রোগ। যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো মারাত্মক অসংক্রামক রোগ সৃষ্টি করে থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগী কিছু বুঝ ওঠার আগেই নীরবে-নিভৃতে উচ্চ রক্তচাপ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করে চলে। এ কারনে বিশ্বব্যাপী এ রোগটিকে ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রধানত বংশগত, খাদ্যভাস জনিত ও কায়িক পরিশ্রম না করার কারনে এই রোগ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ১০ থেকে ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। অর্থাৎ এ দেশে উচ্চ রক্তচাপের রোগী দেড় থেকে দুই কোটিরও বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, সারা বিশ্বে অনূর্ধ্ব ২৫ বছর বয়সের ব্যক্তিদের অন্তত ৪০ ভাগেরই কম-বেশি উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। আর অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়া। বাংলাদেশ উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, তুলনামূলকভাবে বেশি বয়সী, অধিক শিক্ষিত এবং ধনীদের মধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। নব্বই ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না। একে প্রাইমারি বা এসেন্সিয়াল রক্তচাপ বলে। সাধারণত বয়স্ক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া বংশানুক্রমিক, ধুমপান, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, অধিক ওজন এবং অলস জীবনযাপনের কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি অঙ্গে মারাত্মক ধরণের জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন- হৃদপিন্ড, কিডনি, মস্তিস্ক ও চোখ। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদযন্ত্রের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। দুর্বল হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করতে পারে না এবং এ অবস্থাকে বলা হয় হার্ট ফেইলিওর। এছাড়া চোখের রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়ে অন্ধত্ববরণ করতে হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জানান, স্বাভাবিক রক্তচাপ বলতে বোঝায় সেই বল, যার সাহায্যে রক্ত শরীরের একস্থান থেকে অন্যস্থানে পৌঁছায়। হৃদপিন্ড’র পাম্পিং ক্রিয়ার মাধ্যমে রক্তচাপ তৈরি হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে একেকজন মানুষের শরীরে রক্তচাপের মাত্রা ভিন্ন এবং একই মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিক এই রক্তচাপও বিভিন্ন রকম হতে পারে। অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না। এটাই উচ্চ রক্তচাপের সবচেয়ে ভীতিকর দিক।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রন শাখার প্রাক্তন পরিচালক ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে প্রফেসর ডা. এ কে এম শামসুজ্জামান বলেন, যাদের রক্তে স্নেহ জাতীয় পদার্থ বেশ তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুকি বেশি। বংশগত ভাবে অনেকে পিতা-মাতার কাছ থেকেই এ রোগ পেয়ে থাকেন। যারা কায়িক পরিশ্রম করেন না তারও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়া এক প্রকার অনিবার্য। এমনকি খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ ও কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় (বিশেষত স্টেরয়েড, ব্যথানাশক ও জš§নিয়ন্ত্রণের বড়ি) দেহে লবণ ও পানি জমে গিয়ে এটা হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে খাদ্যাভাস অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন। বিশেষ করে যারা চর্বিজাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করেন, তামাকজাতীয় দ্রব্য, ধুমপান ও মদ্যপান করেন তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায়র সম্ভাবনা বেশি। এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে সচেতনতার প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, নিয়মতান্ত্রিক জীবন, সঠিক খাদ্যভাস এবং ধুমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকলে উচ্চ রক্তচাপ থেকে অনেকটা নিরাপদ থাকা সম্ভব।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আপনার রক্তাচাপ সম্পর্কে জানুন’। দিবসটি উপলক্ষে আজ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।