Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অকাল মৃত্যুর কারণ

উচ্চ রক্তচাপ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় ঘাতকব্যাধি হৃদরোগ এবং স্ট্রোক। যার সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। বিশ্বে প্রতি বছর ১ কোটি ৮০ লাখ লোকের মৃত্যু হয় এ রোগে। যার মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ মৃত্যু হয় নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। বাংলাদেশে শতকরা প্রায় ৬৭ ভাগ মৃত্যু অসংক্রামক ব্যাধির কারণে হয়ে থাকে। যার মধ্যে ৩০ শতাংশ মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ ও স্ট্রোক। দেশে বর্তমানে ২২ শতাংশ অকাল মৃত্যুর কারণ উচ্চ রক্তচাপ। দেশে বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি ৫ জনে ১ জন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত।
এ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের শতকরা ৫১ দশমিক ৩ ভাগ লোক জানেই না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। যারা উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের মাত্র শতকরা ১৪ দশমিক ১ ভাগের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার ক্ষেত্রে শতকরা ৭৭ দশমিক ২ ভাগ লোক বেসরকারি ও শতকরা ১৪ দশমিক ১ ভাগ লোক সরকারি চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে শতকরা ৯৭ দশমিক ৫ ভাগ লোকই কোন বেসরকারি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে ওষুধ কিনে থাকেন।
বিশেষজ্ঞরা জানান, হাইপারটেনশন (হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ) একটি দীর্ঘস্থয়ী স্বাস্থ্য সমস্যা, যেখানে রক্তচাপ একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি থাকে (১৪০/৯০) অধিকাংশ সময় উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কোন লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না। দীর্ঘদিন যাবত উচ্চ রক্তচাপে ভোগা অনেক রোগী জানেন না যে তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। যখন উচ্চ রক্তচাপ এর চিকিৎসা করা হয় না তখন এটি ধমনী এবং মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে। এজন্য উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক বলা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, ফলমূল ও শাকসবজি কম খাওয়া, খাদ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্সফ্যাট অধিক মাত্রায় গ্রহণ করা, অতিরিক্ত স্থূলতা, কায়িক পরিশ্রম না করা, মদ্যপান এবং তামাক গ্রহণের কারণে দেশের মানুষের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বেশি দেখা যায়। সাধারণত (১২০/৮০) সমান বা কম রক্তচাপকে স্বাভাবিক বলে ধরা হয়। যদি রক্তচাপ (১৪০/৯০) (ক্লিনিক অথবা ডাক্তারের চেম্বারে মাপার ক্ষেত্রে) এর বেশ কিংবা (১৩৫/৮৫) (বাড়িতে মাপার ক্ষেত্রে) এর অধিক কিংবা (১৩০/৮০) (ডায়াবেটিস ও কিডনী রোগীদের ক্ষেত্রে) এর অধিক হয় তাহলে তা উচ্চ রক্তচাপের পর্যায়ে পড়তে পারে।
এমন পরিস্থিতি দেশে গতকাল পালিত হয়েছে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। ‘আপনার রক্তচাপ জানুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং সুস্থ জীবন উপভোগ করুন’ -এই প্রতিপাদ্যে সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করেছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল ওয়েবিনারের মাধ্যমে গণমুখী সেমিনার আয়োজন করা হয়। উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগসমূহ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানানো, প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার জন্য জনগণ এবং চিকিৎসকসহ সকলের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওয়েবিনারটি আয়োজন করা হয়। ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী) এর সঞ্চালনা ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেসা মালিক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত¡ ও গবেষণা বিভাগের প্রধান প্রফেসর সোহেল রেজা চৌধুরী। প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ১৭ মে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস পালিত হয়। তবে এবছর কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী ১৭ মে’র পরিবর্তে ১৭ অক্টোবর ‘বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস’ পালিত হলো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উচ্চ-রক্তচাপ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ