হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির খড়গ : আসামের এনআরসি এবং বাংলাদেশ
কিশোর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক দাবীর আন্দোলনে ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছিল,
মোবায়েদুর রহমান : দেশপ্রেমিক মাত্র প্রতিটি মানুষ চাইবেন যে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে যেন পূর্ণ সমন্বয় এবং সদ্ভাব বজায় থাকে। তারা যেন সকলে মিলে ঝুলে কাজ করতে পারে। সরকারের এই তিনটি অংগ হলো, নির্বাহী বিভাগ বা এক্সিকিউটিভ, আইন সভা বা পার্লামেন্ট অর্থাৎ লেজিজলেচার এবং বিচার বিভাগ বা জুডিশিয়ারি। বাংলাদেশের ৪৬ বছরের জীবনে রাষ্ট্রের এই তিনটি অংগ মোটামুটি কাধেঁ কাঁধ মিলিয়েই কাজ করেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট প্লাস পয়েন্ট। তবে মাঝে মাঝে এক অংগের সাথে আরেক অংগের যে কিছুটা মতদৈ¦ধতা সৃষ্টি হয়নি , তা নয়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এরকম মত ভিন্নতা হয়েই থাকে। তার পরেও তারা সাংঘর্ষিক অবস্থানে যায়নি। প্রতিটি অংগই নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীন ভাবে কাজ করে যাবে, সেটিই বাঞ্ছনীয়। তবে নির্বাহী বিভাগ এবং আইন সভার কর্মপরিধির ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এসব সীমাবদ্ধতা লঙ্ঘন করলে বিচার বিভাগ সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
দুই একটি উদাহরণ দিচ্ছি। বলা হয় যে, পার্লামেন্ট সব ব্যাপারে স্বাধীন ও সার্বভৌম। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে একক ক্ষমতা। কথায় বলে যে, মাত্র দুইটি ক্ষেত্রে পার্লামেন্ট তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না। এগুলো হলো, পুরুষকে নারী বানানো, আর নারীকে পুরুষ বানানো, দিনকে রাত বানানো ,আর রাতকে দিন বানানো। কিন্তু একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ সার্বভৌম পার্লামেন্টের কর্মক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করতে পারে। বর্তমান সংসদ পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অনেক গুলো বিষয় চিহ্নিত করেছে যে গুলোকে বলা হয়েছে রাষ্ট্রের মৌলিক স্তম্ভ বা কাঠামো। পার্লামেন্ট এমন কোনো আইন পাশ করতে পারবে না যেসব আইন রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো বা স্তম্ভের সাথে সাংঘর্ষিক হয় অথবা সেই সব কাঠামোকে আঘাত করতে পারে। যদি এমন কোনো আইন পাশ হয় যেটি সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনায় মনে হবে যে সেগুলো রাষ্ট্রের মৌলিক একটি বা একাধিক নীতি মালার সাথে সাংঘর্ষিক তাহলে সুপ্রিম কোর্ট সে আইনটি বাতিল এবং সাংঘর্ষিক বলে ঘোষণা করবে। এই ঘটনাই ঘটেছে ষোড়শ বা ১৬ নম্বর সংশোধনীর ক্ষেত্রে।
ষোড়শ সংশোধনীর ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনায় যাচ্ছি না। সেটি আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয় বস্তুও নয়। শুধু মাত্র রেফারেন্স হিসাবে এটি টেনে আনলাম। উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অযোগ্যতা এবং অসদাচারণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে জাতীয় সংসদ সেই সব বিচারপতিকে অপসারণ করতে পারবে। উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদেরকে অসদাচরণ এবং অযোগ্যতার অভিযোগে অভিযুক্ত করার বিধান ছিল। জাতীয় সংসদে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতায় অভিযোগটি উত্থাপিত হলে বিচারপতিদেরকে অভিশংসন করা যেতো। কিন্তু ১৯৭৭ ও ৭৮ সালে এই ক্ষমতা পার্লামেন্ট থেকে প্রেসিডেন্টের নিকট হস্তান্তরিত হয়। এই বিধান অনুযায়ী যদি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল উচ্চ আদালতের কোনো বিচার পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে, তাহলে ঐ বিচার পতির অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রধান বিচার পতি এবং সুপ্রিম কোর্টের দুই জন সিনিয়র বিচারপতির সমন্বয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হবে।
১৯৭৮ সালে এই ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ওপর ন্যাস্ত হয়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ওপর ছিল। ২০১৪ সালের ১৭ ই সেপ্টেম্বর এই ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের নিকট থেকে আবার জাতীয় সংসদে ফিরে যায়। অন্য কথায়, ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ পরোক্ষ ভাবে ফিরে আসে। ফলে ৭২ সালের সংবিধানের মতই উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অভিশংসন ও অপসারণ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের নিকট চলে আসে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ক্ষমতার বিলোপ এবং জাতীয় সংসদের হাতে এই ক্ষমতা ন্যাস্ত করার বিলটি জাতীয় সংসদে ৩২৭-০ ভোটে পাশ হয়। সংবিধানের এই সংশোধনীকে ষোড়শ সংশোধনী নামে অভিহিত করা হয়।
কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীকে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগ মেনে নিতে পারেনি। ২০১৬ সালের ৫ ই মে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ এই সংশোধনীকে বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতার বিভাজন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে ঘোষণা করে। এই রায়ে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদকে কঠোর ভাবে সমালোচনা করা হয়। বলা হয় যে এই অনুচ্ছেদ জাতীয় সংসদ সদস্যদের স্বাধীন ভাবে কাজ করার ওপর কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। এই অনুচ্ছেদ বলে রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে ঐক্যের অভাব দেখা গেছে। হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেছে। আপিলটির শুনানি চলছে।
\ দুই \
আমরা এই কথা বলে এই আলোচনা শুরু করেছিলাম যে, রাষ্ট্রের তিনটি অংগের মধ্যে সমন্বয় এবং সদ্ভাব বজায় রাখা অবশ্য কর্তব্য। এটি হলে রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপ সুসমন্বিত এবং ভারসাম্য মূলক ভাবে চলে। তবে বিগত কিছুদিন হলো দেখা যাচ্ছে যে, এই সমন্বয়ের কোথায় যেন বেশ বড় ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। প্রধান বিচারপতি কোনো কোনো সমাবেশে কিছু কিছু মন্তব্য করছেন। আবার আইন মন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার এসব উক্তির মৃদু সমালোচনা করছেন। এর পর প্রধান মন্ত্রী আবার পার্লামেন্টে প্রধান বিচার পতির ঐ সব উক্তির জবাব দিচ্ছেন। ফলে বিষয়টি রাষ্ট্রের নির্বাহী এবং বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব হিসাবে অনেকের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে। এই বিষয়টি শুরু হয়েছে এভাবেঃ-
প্রধান বিচারপতি গত ৩০ এপ্রিল স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, দেশে আইনের শাসন অনেকাংশে অনুপস্থিত। গত সোমবার ১লা মে এক শ্রেণীর পত্র পত্রিকায় তার বক্তব্য যে ভাবে প্রকাশিত হয়েছে আমরা সেভাবেই সেগুলির অংশ বিশেষ উদ্ধৃত করছি। উল্লেখ্য, সব গুলি উদ্ধৃতি সোমবার ১লা মে’র পত্রিকা থেকে নেওয়া।
‘ডেইলি স্টার’ রিপোর্ট করেছে,“ প্রধান বিচার পতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গতকাল বলেছেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটি প্রতিবেশী দেশগুলো সফলভাবে করেছে। এমন একটি সময় ছিল যখন পাকিস্তানের আইন কানুনকে বলা হতো আইয়ুব খানের শাসনতন্ত্র। সেদেশেও আইনের শাসন রয়েছে। অথচ আমরা আজও সেটি করতে পারিনি। ইন্ডিয়ার কথা বাদই দিলাম, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালও এব্যাপারে আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “পাকিস্তানে সুপ্রিম কোর্ট নি¤œ আদালতের বিচারকদের বদলি এবং পদোন্নতি নিয়ন্ত্রন করে। অথচ বাংলাদেশে সেই নিয়ম অনুসরণ করা হয়না। এই কারণেই এদেশে প্রধান বিচারপতিকে কথা বলতে হয়”।
\তিন\
গত ২৬ শে এপ্রিল আইন মন্ত্রী বলেন যে পৃথিবীর কোনো দেশেই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ্যে এতো কথা বলেন না অথবা এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন না যেটি আমাদের প্রধান বিচারপতি করেন। তবে আমি মনে করি যে, তার যদি কোনো ক্ষোভ থেকে থাকে সেটি প্রকাশ্যে না বলে আমাদেরকে জানালে আমরা সেটি সমাধানের চেষ্টা করবো”। (ডেইলি স্টার ১লা মে সোমবার ২০১৭)।
দৈনিক ‘প্রথম আলো’ রিপোর্ট করছে,“ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, পাকিস্তানের মতো দেশে এখন সুপ্রিম কোর্ট যা বলে, নিম্ন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি ও বদলি সব কটি সুপ্রিম কোর্ট ছাড়া কেউ করে না। এটি পৃথিবীর সর্বত্র বহাল আছে, শুধু বাংলাদেশে যেহেতু থাকছে না; এ কারণেই প্রধান বিচারপতিকে বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে এটি প্রতিষ্ঠার জন্য।”
তিনি আরো বলেন, আপনারা তিন চতুর্থাংশ বা একেবারে হান্ড্রেড পার্সেন্ট মিলে সারা সংবিধানটাকে স্ক্র্যাপ করতে পারেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যদি দেখে তার মূল ভিত্তি নষ্ট হয়ে গেছে, আইনের শাসনের প্রতি আঘাত আসছে, ইনডিপেনডেন্স অব জুডিশিয়ারিতে আঘাত আসছে, জনগণের ফান্ডামেন্টাল রাইটস যেসব অধিকার রয়েছে সেগুলোতে আঘাত আসছে তাহলে আমরা ততটুকু বেআইনি বলে দেব।”
সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা? আমি জানি না আমাদের চিফ জাস্টিস (প্রধান বিচারপতি) কীভাবে বললেন, আইনের শাসন নেই। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই?’
পার্লামেন্টের সমাপনী অধিবেশনে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন। মাননীয় স্পিকার, আমি একটু আগে বললাম একজন নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় ১৪০ দিন সময় চায় আর সেটা দেওয়া হয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে বলেই তো এই সময়টা দিতে পারছে। না হলে তো দিতে পারত না। আমাদের কোনো মানসিকতা থাকলে নিশ্চয় দিতে পারত না। আমরা তো সেটা করিনি। ইচ্ছামতো সময় দিয়ে গেছেন, দিয়েই যাচ্ছেন।’
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথায় কথায় রিট। একই মামলায় যদি ৪০-৫০ বার রিট হয় আর যদি সেই রিট নিষ্পন্ন হয় তাহলে স্বাধীনতা নেই কীভাবে? এই একটা দৃষ্টান্তই যথেষ্ট। যাঁরা এর সুযোগ নিচ্ছেন তাঁরাও একসঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন আইনের শাসন নেই।’
নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের এই বিতর্ক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ষোড়শ সংশোধনীর আপিল শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বলুন তো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর কোনটি?’ জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, টোকিও।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কেউ কেউ মনে করেন নিউইয়র্ক। টোকিও বা নিউইয়র্ক শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে কত ঘণ্টা সময় লাগে? আমার কাছে মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর ঢাকা; সুপ্রিম কোর্ট থেকে বঙ্গভবন ও গণভবনের দূরত্ব কয়েক লক্ষ কিলোমিটার। আড়াই বছরেও পাড়ি দেওয়া হয়নি। আড়াই হাজার বছরেও সম্ভব হবে না। আড়াই বছর ফাইল চলাচলে সময় লাগে।’
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিন আদালতের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলের বাকবিতন্ডা হয়েছে। শুনানি দু’সপ্তাহের জন্য মুলতবি এবং সাত বিচারপতির বেঞ্চে শুনানির আবেদন নাকচ করায় এ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। এ সময় রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) মাহবুবে আলম বলেন, এভাবে শুনানি চালিয়ে গেলে আমি নিজেকে এ মামলা থেকে প্রত্যাহার করে নেব। সাত বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি না করলে আমি অনাস্থা জানাব। এরপরও আদালত শুনানি চালিয়ে যান।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই বিচার বিভাগ (হাইকোটের্র রায় প্রসঙ্গে) এভাবে কথা বলতে পারে না। আমি অসহায়। এভাবে শুনানি অব্যাহত রাখলে ন্যায়বিচার হবে না। আমি শুনানি থেকে নিজেকে উইড্রো (প্রত্যাহার) করে নেব। শুনানিতে অংশ নিতে আমাকে বাধ্য করবেন না। প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনি আদালতকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন যে আপনি নিজেই বিপদে পড়বেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপনি কি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন (থ্রেট করছেন)?(যুগান্তর ১০ই মে ২০১৭)।
\চার\
বিচার বিভাগ এবং নির্বাহি বিভাগের বাদানুবাদ এখন ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হতে চলেছে। শুধু এখন নয়, সেই পাকিস্তান আমলে দেখেছি এবং বাংলাদেশ আমলের সাড়ে চার দশকে দেখলাম,একটি জেনুইন ইস্যু পেলেই সরকার বা বিরোধী দল নির্বিশেষে সেটি নিয়ে কথা বলে এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চায়। এটি দোষের কিছু নয়, বিশেষ করে ক্ষমতার রাজনীতিতে। যেভাবে চীফ জাস্টিসের মতো সন্মানীয় ব্যক্তি বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হতে যাচ্ছেন সেটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে খাপ খায় না।
প্রধান বিচারপতি, আইন মন্ত্রী, প্রধান মন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের এসব বক্তব্য থেকে বুঝতে অসুবিধা হয়না যে, বিষয়টি মামুলি ধরণের মতভেদ নয়। রাষ্ট্রের অন্তত দুটি অংগের অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের বিরাট ফাঁক রয়েছে। এটি সুসমন্বিত সহযোগীতা মূলক প্রশাসনের লক্ষ্য নয়। আমরা আশা করি অতি শীঘ্র নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের মধ্যে পূর্ণ সমন্বয় প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সহযোগীতা মূলক প্রশাসন ফিরে আসবে।
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।