পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঝুঁকিতে যাত্রী ও রেলকর্মীরা
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : যশোর জংশনের কাছে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পূর্বে রাজশাহী থেকে খুলনাগামী ‘সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস’র নতুন এসি কোচের কাঁচের জানালায় হটাৎ করেই ইট বা পাথর নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্ত¡রা। এতে জানালার গøাসটি ভেঙে যায়। গতকাল শনিবার দুপুরের এঘটনায় কোন হতাহত হয়নি।
ঘটনাটির তিনটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক গাজী আলাউদ্দিন আহমদ লিখেছেন, “অজ্ঞাত ব্যক্তিদের ছোঁড়া ইট বা পাথরে ক্ষতিগ্রস্থ রাজশাহী থেকে খুলনাগামী ট্রেন “সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস’র নতুন এসি কোচ। যশোর স্টেশনের কাছে কিছুক্ষণ আগে ঘটনাটি ঘটে। যদিও এতে কেউ আহত হননি, কিন্তু ক্ষতি হয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্পদের।”
এ প্রসঙ্গে আরেক ভুক্তভোগী রোটাঃ প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম লিখেছেন, “যশোরে এ রকম ঘটনা অনেক বার ঘটেছে, কিন্তু প্রতিকার নাই। আমার আপনার খুব খারাপ লাগছে, কিন্তু কিছু করার নাই । যাদের করার ক্ষমতা আছে, তাদের আবার খারাপ লাগছে না!”
অনেকটা একই ধরণের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ ডাঃ গাজী মিজানুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফাতেমা-তুজ-জোহরা। ঢাকা থেকে বিকেল ৪টা ২০মিনিটে খুলনা স্টেশনে নেমে বলেন, “ট্রেনের মধ্যে কারা জানি পাথর ছুঁড়ে মেরেছে। আমি আর ট্রেনে যাতয়াত করবো না!”
সম্প্রতি চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এতে ট্রেনের গøাস ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি ট্রেন চালক ও যাত্রীরা আহত হচ্ছেন। হঠাৎ করে একের পর এক পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে।
সূত্র জানান, উচ্ছৃঙ্খল তরুণ ও কিশোররা রেল লাইনের ওপর এবং পাশে বসে আড্ডা দেয়। তারা ট্রেন আসতে দেখলে খামখেয়ালিপনা অথবা কৌতূহলবশত ইঞ্জিন ও বগি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। বিভিন্ন সময় রেল লাইনের ওপর বসে থাকা মাদকাসক্তরাও এ কাজটি করছে। এর পাশাপাশি রেল লাইনের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ বস্তির লোকজনও মাঝে-মধ্যে পাথর ছুড়ছে। রাতে রেল লাইনের আশ-পাশে থাকা নেশাগ্রস্ত এবং দিনে শিশু-কিশোররা এই কান্ড করে বলে রেল কর্মকর্তাদের ‘ধারণা’। অবশ্য কখনো কখনো স্টেশন ছাড়া ট্রেন থামাতেও ট্রেনের দিকে পাথর ছোড়া হয় বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
একাধিক লোকো মাস্টার বা ট্রেন চালক জানান, চলতি বছরে কমপক্ষে ১৫বার ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। পাথর নিক্ষেপের কারণে ট্রেনচালক, কর্মচারী ও সাধারণ যাত্রীরা আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ট্রেনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ।
রেলওয়ে লোকো রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ট্রেন চালক তাপস কুমার ভৌমিক বলেন, উচ্ছৃঙ্খল যুবক ও কিশোররা একের পর এক চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করছে। এতে ট্রেনের চালকসহ রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও যাত্রীরা আহত এবং ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগির গøাস ভেঙে যাচ্ছে।
খুলনা রেল স্টেশন মাস্টার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, পাথর নিক্ষেপের কারণে ট্রেনের চালক আহত হলে দুর্ঘটনা এবং এক-দেড় হাজার যাত্রীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। খুলনা রেঞ্জে সদ্য বিদায়ী ডিআইজি’র সাথে দেখা করে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছি। ডিআইজি পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বন্ধ করার জন্য সংশিষ্ট থানার ওসিদের তৎপর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এছাড়া তারা রেল লাইনের ওপর দিয়ে ট্রলিতে করে র্যালি ও সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত্ব, ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার ভাটিয়ারি এলাকায় চলন্ত ট্রেনে বাইরে থেকে ছোঁড়া পাথরের আঘাতে প্রীতি দাশ (২৭) নামের একজন প্রকৌশলী নিহত হয়েছিলেন। প্রকৌশলী প্রীতি তার স্বামীসহ ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছিলেন। সে সময় পাথর ছোঁড়া রোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ট্রলি ক্যাম্পেইন’ করেছিল রেলওয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।