Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মণিরামপুর হাসপাতালের ৫ ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


যশোর থেকে রেবা রহমান : দায়িত্বে অবহেলার দায়ে যশোরের মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাঁচ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে বাস্তব চিত্র দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে এ নির্দেশ দিলেন তিনি।
জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের অনিয়মিত উপস্থিতি ও ইচ্ছেমতো আশা-যাওয়ার অভিযোগ সরেজমিন দেখতে গতকাল সকালে আকষ্মিক মণিরামপুর আসেন যশোরের সিভিল সার্জন গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য। প্রায় সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত হাসপাতালে অপেক্ষা করেও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিলিপ রায় ছাড়া কাউকে পাননি তিনি। সিভিল সার্জনের হাসপাতালে উপস্থিতির খবর পেয়ে যশোর থেকে ছুটে আসেন গাইনী কন্সালট্যান্ট ডা. রেবেকা সুলতানা। তার দায়িত্ব ছিলো বহি:বিভাগে। একই বিভাগের দায়িত্ব ছিলো ডা. অরূপ জ্যোতি ঘোষ, ডা. রেহেনেওয়াজ, ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. গৌতম কুমার ঘোষের। তবে তাদের কেউ সময়মতো অফিসে না আসায় সিভিল সার্জন নিজ হাতে তাদের অনুপস্থিতি লিখে দেন। এঘটনায় অনুপস্থিত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে ডা. গৌতম কুমার ঘোষ শুধু মাত্র বেতন-ভাতা নেওয়া জন্যে মাসে দু’একবার মণিরামপুর আসেন বলে সূত্র জানায়। হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রভাবশালী ওই চিকিৎসক সরকারী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কর্মস্থলে লাগাতার অনুপস্থিত থাকেন। যশোরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন তিনি। না প্রকাশের অনিচ্ছুক মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক জানান, একজন জনপ্রতিনিধির অনুরোধের দোহায় দিয়ে তিনি মণিরামপুরে না এসে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাঝে মাধ্যে রোগী দেখেন। বাকি সময় পার করে চেম্বারে রোগী দেখে। মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পোস্টিং থাকলেও তিনি যশোর মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়ে চেম্বারে রোগী দেখেন।
অনিয়মিত হাসপাতালে আসা-যাওয়া আর রোগীদের সাথে খারাপ আচারণের দীর্ঘ অভিযোগেও যেন কিছুই আসে-যায়না ডা. রেবেকা সুলতানার। যশোর শহরের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখে মণিরামপুর আসেন সকাল ১০ টার পর। অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত থাকলে দু’একটি অপারশেন করে যশোরে ফিরে যান বারোটার আগেই। কখনও কখনও বহি:বিভাগের চেম্বারে বসলেও রোগী দেখেন ইচ্ছামতো। সাফ জানিয়ে দেন যশোরের চেম্বারে আসার কথা। আর রোগীদের প্রতি দূর্ব্যহারতো আছেই।
মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধিকাংশ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো হাসপাতালে আসা-যাওয়া, রোগীদের সাথে খারাপ আচারন, চেম্বারে দেখানোর প্রস্তাব, নির্ধারিত ডায়াগনষ্টিক থেকে অপ্রয়োজনীয় পরিক্ষা-নিরাক্ষা করানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এবার কিছুটা হলেও বাস্তবে জেনে গেলেন যশোরের সিভিল সার্জন। গত বছরে স্বাস্থ্যসেবায় সারাদেশে পঞ্চম স্থান অর্জনকারী মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের এমন দায়িত্বহীনতায় চরম হতাশায় পড়েছেন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিলিপ কুমার রায় নিজেও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাসপাতাল

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ