Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের সাথে চীনের সম্পর্ক অবনতির আশঙ্কা

প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : চীনের সঙ্গে মারাত্মক টানাপড়েনের মধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরের কাছে সামরিক মহড়া চালানোর সব আয়োজন শেষ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারত ও জাপানকে নিয়ে এ মহড়া শুরু করবে মার্কিন বাহিনী। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন কমান্ডার অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস জানিয়েছেন, এবারের মহড়ার নাম দেয়া হয়েছে মালাবার এবং এ মহড়া ফিলিপাইন সাগরের উত্তরাংশে অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্পর্কে মার্কিন ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, ২০১৪ সাল থেকে ভারত ও আমেরিকার নৌবাহিনীর মধ্যে বার্ষিক যে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে তারই অংশ হিসেবে এবারের মহড়া হতে যাচ্ছে। তবে এবারের মহড়ায় জাপান অংশ নেবে।
দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডমিরাল হ্যারিস জাপানের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, টোকিওর মতো সামরিক শক্তির অংশগ্রহণের কারণে এবারের মহড়ার জটিলতা বেড়েছে এবং আমেরিকা ও ভারতের জন্য জাপানের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আসছে। অ্যাডমিরাল হ্যারিস বলেন, প্রতি বছর ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে ৫.৩ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থের বাণিজ্যিক পণ্য আসা-যাওয়া করে। আসন্ন মহড়ার মাধ্যমে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।
এদিকে, চীনের সাথে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটার সম্ভাবনা বেড়েছে। ক্ষুব্ধ চীন সরকার গণমাধ্যমের বরাতে ভারতের এমন আচরণ কোনভাবেই মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপান এই তিন দেশ চীনা সেনাদের গতিবিধি সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করবে। ভারতীয় নৌবাহিনী বলছে, জাপান এ বছর আমাদের সাথে যুক্ত হচ্ছে। তবে মহড়া চলাকালীন অবস্থান সম্পর্কে এখনো কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। সম্প্রতি দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ভৌগলিক সামরিকায়নের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। উক্ত সীমান্ত এলাকায় চীনের সাথে ফিলিপাইন, ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশের বিরোধ রয়েছে। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান ঐ এলাকায় চীনের পদক্ষেপকে মোকাবিলা করতে ধারাবাহিকভাবে অপারেশন পরিচালনা করবে। তারা এশীয় সামরিক শক্তিগুলোর কাছ থেকে এ ব্যাপারে আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে। দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন বাহিনীর সাথে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী যুক্ত হতে অনাগ্রহী হওয়া সত্ত্বেও সম্প্রতি মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা তাদের সকল বাহিনীকে মার্কিন বাহিনীর সাথে একযোগে কাজ করার পরামর্শ দেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে নৌ ও বিমান চলাচলের স্বাধীনতার লক্ষ্যে এশিয়া প্যাসিফিক ও ভারত সাগরের জন্য মার্কিন-ভারত যৌথ কৌশলগত দূরদর্শিতা প্রকাশ করে। তাছাড়াও ভারত জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে ত্রিপক্ষীয় সংলাপ আয়োজন করে। ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড ভর্মা ফেব্রুয়ারি মাসে বলেন, আমি আশা করি খুব শিগগিরই ইন্দো-প্যাসিফিক সাগরে মার্কিন-ভারত নৌবাহিনী একসাথে কাজ করবে।
অপরদিকে ভারত এখন পর্যন্ত মার্কিনীদের সাথে প্রথাগত নিরাপত্তা জোট এবং যৌথ টহলের সম্পর্ক বজায় রেখেছে। অথচ দুদেশই দক্ষিণ চীন সাগরে টহলের কথা অস্বীকার করছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে চীনে প্রকাশিত ইংরেজি মাধ্যমের সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস মার্কিনীদের নিন্দা জানিয়ে খবর প্রকাশ করে। খবরে বলা হয়, মার্কিনীরা ভারত, জাপান, দ. কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতায় দক্ষিণ চীন সাগরে বিরোধে জড়ানোর চেষ্টা করছে। একই সংবাদপত্রের অন্য এক সম্পাদকীয় কলামে ভারতকে আঙুল উচিয়ে বলা হয়, ভারত যদি মার্কিনীদের সাথে যৌথ টহল পরিচালনা করে তবে কিছুই হবে না, কিন্তু বেইজিং-এর সাথে ভারতের শত্রুতা বাড়বে, পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক বিনষ্ট হবে। ফলে চীনা সরকার বাধ্য হবে দুদেশের সম্পর্কের পরিবর্তনটুকু মেনে নিতে। ওয়ার্ল্ড স্ট্রিট জার্নাল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতের সাথে চীনের সম্পর্ক অবনতির আশঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ