রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আফতাব হোসেন, চাটমোহর (পাবনা) থেকে : শস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলের ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আত্রাই ও গুড় নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে দেশের সবচেয়ে বড় এ বিল। ডুবে গেছে বোরো ধান, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পাট, তরমুজ, করলাসহ অন্যান্য ফসল। ধান কাটার জন্য মাইকিং করে শ্রমিক ডাকা হচ্ছে। বাড়তি মজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। চলনবিলাঞ্চলের চাটমোহর, সিংড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, নলডাঙ্গা, নিয়ামতপুর, চন্দননগর, ভাবিচা, শ্রীমন্তপুর, বাহাদুরপুরে কয়েক হাজার হেক্টর জমি থেকে কোনো ফসল তোলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এসব এলাকার ছোটবড় সব চাষি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কালবৈশাখী ঝড়, উজানের ঢলের পানিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চলনবিল অঞ্চলের বোরো চাষিরা। প্রথমে অতিরিক্ত খরার কারণে অনেক জমির ধানের শীষে দেখা দিয়েছে চিটা। কালবৈশাখী ঝড়ে ধানগাছ শুয়ে পড়ে শীষ থেকে ঝরেছে ধান। আবার উজানের ঢলের পানিতেও ডুবেছে বোরো ধান। এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে, অসময়ে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে এসেছে। অনেক স্থানে আধাপাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন চাষীরা। স্থানীয়রা জানান, সিংড়া এলাকায় আত্রাই নদীর কাছে বিলদহর-কৃষ্ণনগর এলাকায় বাঁধ আছে। নিজেদের সুবিধার জন্য স্থানীয় মৎস্যজীবীরা ২০১১ সালে বাঁধের একটি অংশ কেটে দেন। বাঁধের এ কাটা অংশ দিয়ে আত্রাই নদী থেকে প্রচন্ড স্রোতে চলনবিলে পানি ঢুকছে। পানিতে ডুবে যাওয়া অন্যান্য ফসল ঘরে তুলতে না পারলেও জরুরিভাবে ধান কাটতে কয়েক দিন ধরেই স্থানীয়ভাবে মাইকিং করে দিনমজুর ডাকা হচ্ছে। অন্যান্য মৌসুমে ২৫০ টাকা চুক্তিতে শ্রমিক পাওয়া গেলেও এবার ৭০০ টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়রা জানান, পানিতে ডুব দিয়ে ধান কাটা খুব কষ্টের। শ্রমিকরা সারাদিন পানিতে ডুবে ধান কাটতে চাচ্ছেন না। ফলে বেশি মজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। বড়াইগ্রাম উপজেলায় জালোরা বিল, চিনিডাঙ্গা বিল, ভিটাকাজীপুর বিল ও কচুগাড়ি বিল, মাড়িয়া, বাজিতপুর, শ্রীরামপুরসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে বৃষ্টির পানিতে ফসল ডুবে গেছে। এতে বড়াইগ্রামের সহস্রাধিক কৃষক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানান, বড়াইগ্রামে ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও পাট, তরমুজ, করলা, ভুট্টার জমি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করলা এবং পাটক্ষেত প্রায় সবটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় কাঁচা-পাকা তরমুজ পানিতে ভাসতে দেখা গেছে। চাটমোহর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে উজান থেকে পানি এসে ডুবে যাচ্ছে উঠতি বোরো ধান। ইতোপূর্বে ঢলের পানিতে তলিয়ে যায় ডিকশি বিলসহ বিভিন্ন বিলের ধান। ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়েছে কৃষকরা। চাটমোহর, তাড়াশ ও উল্লাপাড়ায় একাধিক কৃষক জানান, আর মাত্র তিন চার দিন পরেই ফসল কাটতে চেয়েছিল। সময়মতো ধান কাটতে না পারায় প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৬ মণ ধান কম হবে। এতে তারা এ বছর বড় আকারের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে চলনবিল এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। এতে বিভিন্ন এলাকার ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। ইতোমধ্যে প্রশাসনের সহায়তায় অন্তত ২০টি খাল কেটে পানি বের করা হয়েছে। পাশাপাশি আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় কিছুটা ক্ষতি হলেও কৃষকরা পুরোপুরি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এখন আর ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই বলে কৃষি বিভাগ জানান। উজানের ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় কাঁচা-পাকা ধান কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা। কাটা ধান নিয়ে যেতে হচ্ছে নৌকায়। বাড়তি মজুরি এমনকি উৎপাদিত ধানের অর্ধেক দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। শ্রমিক সঙ্কটে অনেক কৃষক বিলের ধান কাটতে পারছেন না। এতে অনেকেরই ধান পানির নিচে নষ্ট হচ্ছে। এতে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।