পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই সোচ্চার হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক সক্রিয়বাদীরা। ৭০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক অধিকারবাদী ও পরিবেশবাদী গ্রæপ সুন্দরবনের কাছে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছে, এধরনের প্রকল্প রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমিকে ধ্বংস করবে, পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতির পাশাপাশি স্বাস্থ্যহানির কবলে পড়বে এলাকার বাসিন্দারা ও সুন্দরবনকে ঘিরে যারা জীবিকা নির্বাহ করে এমন কয়েক লাখ মানুষ আয় হারাবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পরিবেশ সক্রিয়বাদীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও দুটি দেশের সরকার তাদের পাত্তা দিচ্ছে না। এমনি এক প্রেক্ষাপটে রামপাল প্রকল্পের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস’ কোম্পানিকে বিনিয়োগ তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে নরওয়ের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ তহবিল।
নরওয়ের ৯৩৫ বিলিয়ন ডলারের ওয়েলথ ফান্ড বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ তহবিলগুলোর একটি। কিন্তু এই রাষ্ট্রীয় তহবিল কোন দেশে বা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারবে, তার কিছু নীতিমালা ঠিক করে দিয়েছে নরওয়ের পার্লামেন্ট। এর মধ্যে আছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রকল্প, পরমাণু অস্ত্র, তামাক এবং এন্টি পার্সোনাল ল্যান্ড মাইনের মতো অস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানি।
নরওয়ের সেন্ট্রাল ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশে যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে সেটির পরিবেশগত ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ আছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। সেই বিবেচনাতেই ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালসকে তাদের ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিও থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
এথিকস কমিটি নরওয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ভারত হেভি ইলেকট্রিকসে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল, তারা জানিয়েছে এই ভারতীয় কোম্পানির কাছে তারা নানা বিষয় জানতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারত ইলেকট্রিক্যালস তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের কোন উত্তর দেয়নি।
গত ২০ এপ্রিল ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে লেখা সুইডেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সক্রিয়বাদী গ্রæপের লেখা এক চিঠিতে বলা হয়, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রস্তাবিত রামপাল এবং অরিয়ন বিদ্যুৎ প্লান্টগুলো সুন্দরবনের প্রতিবেশের ওপর মারাত্মক ও অপূরণীয় ক্ষতি করবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুৎ প্লান্টটি লাখ লাখ মানষের স্বাস্থ্য ও জীবিকা হুমকিগ্রস্ত করবে। লবণ-সহিষ্ণু সুন্দরবনে থাকা ছোট ছোট দ্বীপে নানা প্রজাতির পাখি ও প্রাণী বাস করে। আর আছে বিশ্ববিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
বাংলাদেশের সুন্দর বন ধ্বংস হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে আরো লাখ লাখ মানুষ অরক্ষিত হয়ে পড়বে এমন দাবি জানিয়ে তেল, গ্যাস খনিজসম্পদ, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে লংমার্চ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোরের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশের অতি জরুরি প্রয়োজন বিদ্যুতের, আর প্রস্তাবিত প্লান্টটি সুন্দরবন থেকে অনেক দূরে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, প্রকৃতি এবং জনসাধারণের জীবিকায় জীবাস্ম-জ্বালানিভিত্তিক প্লান্টের ঝুঁকি এখনো পরিমাপ করা হয়নি।
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে লেখা চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, এসব প্রকল্পের কারণে নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। কারণ উচ্ছেদের ফলে জেন্ডার বা নারী-পুরুষের সহিংসতা বেড়ে যায়। এতে করে নারীরা পাচার ও পতিতাবৃত্তিতে জড়িত হওয়ার শঙ্কায় থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।