পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ইউনেস্কো যে উদ্বেগ জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সে বিষয়ে জবাব দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
গতকাল (রোববার) বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে গবেষণাবিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইউনেস্কোর জবাবটা দিয়ে দেবো। উল্লেখ্য, ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের কাছে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে ‘মৈত্রী সুপার পাওয়ার থারমাল’ বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে।
বাংলাদেশে কয়েকটি নাগরিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি না করেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। সম্প্রতি ইউনেস্কো রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। গত ২৩ মার্চ বাংলাদেশে আসে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র থেকে পাঠানো রি-অ্যাকটিভ মনিটরিং মিশনের তিনজন প্রতিনিধি। ২৮ মার্চ রাতে তারা ফিরে যায়। এ সময়ের মধ্যে তারা প্রকল্প এলাকাসহ সুন্দরবন ও এর আশপাশ এলাকা, মংলাসহ সুন্দরবনের যেসব নদীতে কার্গোডুবির ঘটনা ঘটেছে সেসব এলাকা পরিদর্শন করে এবং বিদ্যুৎসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে। এই পরিদর্শনের আলোকেই ইউনেস্কো তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে।
ইউনেস্কো শুধু রামপাল নিয়ে নয়, অন্য বিষয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের নদীর ব্যাপারগুলো এসেছে, এই উদ্বেগগুলো গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং সেভাবে জবাব তৈরি করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কোর আশঙ্কা থাকতে পারে, অনেকেরই আছে, ইউনেস্কোকে আমাদের বক্তব্যটা দিতে পারলে হয়তো তারা বুঝবে যে তা সঠিক নয়।
ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয় যে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যে প্রযুক্তিতে স্থাপন করা হচ্ছে তা অত্যাধুনিক নয়। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাখ্যা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদল যখন সুন্দরবন পরিদর্শন করেন তখন তাদের প্রযুক্তিগত বিষয়ে জানানো হয়েছিল। তারপরও তারা এ কথা কেন বলছে জানি না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি আরো বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, উন্নত প্রযুক্তি তো আমরা কেউ দেখিনি। যতক্ষণ পর্যন্ত না দেখা হবে স্বচক্ষে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ভাবব ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। যারা এর বিরোধিতা করছেন, তাদের আবেগ দিয়ে কথা না বলে যুক্তি উপস্থাপন করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন পিছিয়ে দেয়ার জন্যও রামপাল নিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে উন্নয়নের দিকে দেশ এগোচ্ছে, যেভাবে আমারা বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে পারছি, হতে পারে অনেকে হয়তো এই উন্নয়ন পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে। অনেকে নিজেরাও বুঝতে পারছেন না, তারা সেই রাজনীতিতে ঢুকে যাচ্ছেন। আমরা তো ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে গজারিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করছি, ওটা নিয়ে তো কেউ উদ্বিগ্ন হচ্ছে না।
সরকার সব ধরনের সতর্কতার কথা মাথায় রেখেই এগোচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দিয়ে আমাদের বোঝাতে সক্ষম হন যে, আমরা ভুল পথে যাচ্ছি, সেই মতও আমরা নিতে চাই।
প্রতি বছর নতুন করে এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি করতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আর লোডশেডিংয়ে যেতে চাই না, ২০১৮ সালের মধ্যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ দিতে চাইছি। গ্যাস আমাদের কমে যাচ্ছে, বিকল্প জ্বালানিতে যেতেই হবে। এক্ষেত্রে কয়লার কোনো বিকল্প বাংলাদেশের নেই। তিনি বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। জ্বালানি খাতের জন্য আরো ১০ বিলিয়ন ডলার লাগবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ঋণ নিয়ে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এ ঋণ শোধ করতে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। ভবিষ্যতে সরকার সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ দিতে চায়। এই অর্থ সংস্থান করতে সরকার শেয়ার মার্কেটে যাবে, বন্ড চালু করবে। পাশাপাশি আগামী বাজেটে এ খাতের জন্য কম টাকা নেয়া হবে। ভর্তুকির পরিবর্তে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।