পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজার থেকে শামসুল হক শারেক : তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার রাষ্ট্রীয় সফরে কক্সবাজার এসে ইনানী সৈকতে পর্যটকবেশে সাধারাণ পোশাকে প্রধানমন্ত্রীকে মনে হচ্ছিল অন্যরকম এক শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় কঠোর প্রটোকল এর ফাঁকে বালুকাময় সৈকতে যেন একটু স্বস্থির নিশ্বাস নেয়া। এসময় ইনানী সৈকতে বিচরণের সময় প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকে বেশ উচ্ছ¡সিত দেখাচ্ছিল।
এর একটু আগে বে ওয়াচ রিসোর্টের সামনে সৈকতের বেলাভূমিতে তৈরী মঞ্চ থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠান শেষে সোজা সৈকতের পানিতে নেমে যান শেখ হাসিনা। সেখানে কিছুক্ষণ খালি পায়ে হাঁটা হাঁটি করে যেন স্বস্তি পান তিনি। বে ওয়াচ রিসোর্টেই মধ্যাহ্ন ভোজ সারেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে প্রথম সমুদ্র দেখার অভিজ্ঞতার কথাও জানান।
বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন শহর কক্সবাজারকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন ‘এত সুন্দর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। কিন্তু কক্সবাজার সবসময় অবহেলিত ছিল। এটাকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলা আমাদের কর্তব্য বলে মনে করছি।’
সকালে বিমানের বোয়িং উড়োজাহাজ মেঘদূত-এ কক্সবাজার নামার পর ইনানী সৈকতে যান প্রধানমন্ত্রী। তার এই যাত্রার মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে সুপরিসর বিমান চলাচল শুরু হল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারকে সুন্দরভাবে সাজানো সবার দায়িত্ব। সারাবিশ্বে থেকে পর্যটকরা এখানে আসেন। আপনারা কক্সবাজার নিয়ে ভাবুন, উন্নয়নের চিন্তা করুন। সবাই মিলে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।
গতকাল শনিবার দুপুরে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভসহ ১০ প্রকল্প উদ্বোধন কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারের অপার সম্ভাবনা তুল ধরে বলেন, কক্সবাজার হবে উন্নত একটি জেলা, উন্নত পর্যটন, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন হয়ে গেছে। এখন কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কও চার লেন হবে অতি দ্রæত।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বোয়িং চলাচলের উপযোগী হয়েছে, এখানে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইট আসার ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, কক্সবাজার হবে নতুন অঞ্চল, টার্মিনাল হবে। এটি পর্যটন কেন্দ্রই শুধু নয়, খেলাধুলার কেন্দ্র। আন্তর্জাতিক খেলা হবে এখানে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ফুটবল খেলার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী মেরিন ড্রাইভ তৈরির সময় পাহাড় ধ্বসে দুর্যোগে ছয়জন সেনাবাহিনীর সদস্য প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাদের গভীরভাবে স্মরণ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সেনা প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন প্রমুখ।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গি কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রী ও সামরিক বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি স্থানীয় নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০টায় বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজ মেঘদূত এ চেপে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এসময় কক্সবাজারের স¤প্রসারিত রানওয়ে ব্যবহার করে নামার পর বিমানবন্দরে বড় আকারের উড়োজাহাজ চলাচল উদ্বোধন করেন তিনি।
বেলা ৩.৪৫ টায় শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লগি অয়োগিত জনসভায় যোগদান করেন। মঞ্চে উঠার আগে তিনি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ছাত্রী নিবাস, কক্সবাজার সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবন কাম এক্সামিনেশন হল, কক্সবাজারের উখিয়ায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের দ্বিতল একাডেমিক ভবন এবং মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য ১৯৯৬ সালে সেনাবাহিনী মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু নানা জটিলতা, বিশেষ করে উত্তাল সমুদ্রের ভাঙনের কারণে বারবার ব্যাঘাত ঘটে প্রকল্পের। ১৯৯৫ সালে একবার সড়কের একটি অংশ পুরোপুরি সাগরে বিলীন হয়ে যায়। সড়কটি নির্মাণ করতে গিয়ে পাহাড় ধসে সেনাবাহিনীর ছয় জন কর্মী নিহতও হয়েছেন সড়কটি নির্মাণ করতে গিয়ে। প্রধানমন্ত্রী তাদের স্মরণ করেন তাঁর বক্তব্যে। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উৎসাহ এবং সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ শেষ করতে পেরেছে নির্ধারিত সময়ের আগেই। সড়কের পাশে সব মিলিয়ে ১১ লক্ষ গাছও রোপন করা হয়েছে।
এই সড়কটি চালু হওয়ায় একদিকে যেমন স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতে দুর্ভোগ কমবে ঠিক তেমনি একদিকে সাগর আর অন্যদিকে পাহাড়ের মাঝখানের এই সড়ক দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে নিয়ে আসবে অন্য এক সম্ভাবনা।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।