বাংলাদেশের জনজীবন ও অর্থনীতিতে ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার ওপর নির্মিত ভারতের ফারাক্কা বাঁধের প্রতিক্রিয়া যেমন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক
হোসেন মাহমুদ : এই ঢাকা মহানগরীকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সে কাজ শুরু হবে ২০১৮ সালে। আমরা এমন ব্যবস্থা চালু করতে চাই যাতে কোনো নাগরিক সমস্যায় পড়লে একটামাত্র ক্লিকেই সমাধানের উপায় খুঁজে পান।
এ কথাগুলো দিন কয়েক আগে একটি সংবাদ মাধ্যমের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেছেন ঢাকা দক্ষিণের সিটি মেয়র সাঈদ খোকন। সবারই জানা যে, ৬ মে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আনিসুল হক ও দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকনের দায়িত্ব গ্রহণের দু’ বছর পূর্তি হচ্ছে। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৬ মে তারা শপথ নিয়েছিলেন মেয়র হিসেবে। দু’টি বছর পার করে তারা এখন একটি পর্যায়ে এসেছেন। মানুষ তাদের কাজে-কর্মে কতটা উপকৃত ও সন্তুষ্ট তার মূল্যায়ন যাই হোক, তারা যে কিছু কাজ করেছেন বা করার চেষ্টা করেছেন তাতে সন্দেহ নেই।
ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তরের মেয়র তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঢাকাবাসীর জন্য নানা প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার আগে অনেক সমস্যা চিহ্নিত করেছিলেন ঢাকার দুই মেয়র। তারা যখন নির্বাচিত হন তখন ঢাকা মহানগরীকে খুব ভালো ও সমস্যাহীন অবস্থায় পেয়েছিলেন তা নয়। তাদের দায়িত্ব গ্রহণের দু’বছর পর ঢাকা তিলোত্তমা হয় উঠেছে তাও নয়। মানুষের মধ্যেও আস্থা ও সেবাপ্রাপ্তির ব্যাপারে অভিযোগ দূর হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা সমস্যাই রয়ে গেছে।
২০১৬ সালের মে মাসে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তিতে তাদের কাজের একটি মূল্যায়ন সংবাদ মাধ্যমে করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল যে এখনও (২০১৫) ‘অবস্থা আগের মতো না হলেও অনেকটাই কঠিন রয়ে গেছে। এক বছরে দু’ মেয়র বহু সভা-সেমিনারে অংশ নিয়ে নানা প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু সমস্যায় জর্জরিত ঢাকার অবস্থা খুব একটা বদলায়নি। ঢাকার যানজট, জলজট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে যে আশ^াস দিয়েছিলেন দুই মেয়র সেগুলো সমাধানে খুব বেশি অগ্রসর হতে পেরেছেন এমন দাবি তাঁরা করতে পারবেন না। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিকেই তাঁরা জলজট বা জলাবদ্ধতার মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং চেষ্টা করেছিলেন কিছু করার জন্য। এ ক্ষেত্রে তারা তেমন অগ্রসর হতে পারেননি। এটাও সত্যি যে একাজগুলো দীর্ঘমেয়াদী। এ বছরও যদি ভাারি বৃষ্টিপাত হয় জলজট হওয়ার আশংকাটা থেকে যাবে। নির্বাচনের আগে ফুটপাত পথচারীবান্ধব করার ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার এক বছর পরও ফুটপাত দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে। শহরের অধিকাংশ ফুটপাত দখল করে আছে দোকানপাট। এসব ফুটপাত সড়ক থেকে প্রায় এক ফুট উঁচু। শুধু তাই নয়, যখন তখন যে কেউই তাদের ইচ্ছে মাফিক শহরের ফুটপাতে দোকান তুলছেন, পসরা সাজাচ্ছেন। এই দখল প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়নি। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযানও চালিয়েছে সিটি করর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই উচ্ছেদের জায়গাগুলো আবার দখল হয়ে গেছে। বাস্তবতা হলো, হকারদের পুনর্বাসন ছাড়া ফুটপাত পথচারী বান্ধব করা যাবে না। এই শহরে সারি সারি ভবন আর রাস্তাঘাটের বিস্তৃতি ঘটছে, কিছু কিছু এলাকার চাকচিক্য-সৌন্দর্য বাড়ছে, তবে সেই তুলনায় বস্তির কোনো উন্নয়ন হয়নি। সুযোগ সুবিধাও বাড়েনি। অথচ ভোটের আগে ঢাকার দুই মেয়রই বস্তি উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণÑদুই সিটি কর্পোরেশনের খেলার মাঠগুলোর বেহাল অবস্থা খুব সহজেই চোখে পড়ে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, মাঠগুলোর নজরদারি করার কেউ নেই। খেলার মাঠে নেই খেলাধুলার পরিবেশ। মূলত দুই সিটি কর্পোরেশনের সুশাসনের অভাবেই এই দুর্দশা। নির্বাচনী ইশতেহারে নগরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বিনামূল্যের ওয়াইফাই সেবার আওতায় আনার ঘোষণা দিলেও এটি বাস্তবে রূপ দিতে পারেননি দুই সিটি মেয়রের কেউই। তিন মাস ধরে ওষুধ ছিটানোর পরও ঢাকার মশার উপদ্রব কমেনি। মশার উপদ্রবের কথা দুই মেয়রই স্বীকার করেছেন। মশার যন্ত্রণা ঢাকা শহরবাসীর জীবনে চরম অস্বস্তি হয়ে আছে এখনও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার হিসাব অনুযায়ী আট বছরের মধ্যে গত বছর (২০১৫) সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।’
কিন্তু দায়িত্বের প্রথম এক বছরে তারা কি কোনো ভালো কাজ করেননি? সংবাদ মাধ্যমে সে ব্যপারেও কথা এসেছে। বলা হয়েছে, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ প্রথাগত দরপত্র আহ্বানের পরিবর্তে অনলাইনে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে করা হচ্ছে। এটা একটা পজিটিভ দিক সন্দেহ নেই। ফলে দরপত্র নিয়ে স্বজনপ্রীতির আশংকা কমেছে অনেক। এ জন্য কাজকর্মে অনেক স্বচ্ছতা এসেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি মেয়র আনিসুল হক এবং সাঈদ খোকনের সাহসী পদক্ষেপের ফলে গাবতলী, তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গা অবৈধ পার্কিংমুক্ত হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, কয়েক হাজার অবৈধ বিল বোর্ড উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে, পুরো নগর জুড়ে প্রায় ৬ হাজার ময়লা আবর্জনা ফেলার বিন বসেছে, কয়েকটি সড়কে বসেছে আধুনিক এলইডি বাতি। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় নগরজুড়ে অনেকগুলো গণশৌচাগার নির্মিত হয়েছে এবং এগুলো ঠিকঠাকমত পরিচালিত হচ্ছে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য কয়েকটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে, পথে ঘাটে নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্মত জীবাণুমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে বিশেষ ধরনের প্রায় ৫০০টি গাড়ি বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে।’
এক বছর আগে ভালো ও মন্দ এ মূল্যায়নের পর আরো এক বছর পেরিয়ে গেছে। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার এক বছর পর তারা দু’জনই পূর্ণ মন্ত্রির মর্যাদা লাভ করেছেন। অর্থাৎ তাদের অবস্থা বা পদমর্যাদার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু ঢাকার অবস্থার উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি হয়েছে, সে কথা জোর দিয়ে বলাা মুশকিল। ঢাকার যানজট সমস্যা এখনও নগরবাসীর বিরাট অংশের জীবনকে স্থবির করে রেখেছে। সিটি কর্পোরেশন এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেনি। বিষয়টি পুরোপুরি তাদের আওতাধীনও নয়। এটি মূলত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। তবে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে কয়েকদিন লক্কড়-ঝক্কর বাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। অন্যদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন অবশ্য আর তাকে রাস্তায় দেখা যায় না। ঢাকার বাইরে যানজট নিরসনেও যেমন আগের অবস্থাই রয়ে গেছে, তেমনি ঢাকার যানজটের অবস্থাও সেই একই। যেহেতু যানজটের বিষয়টি পুরোপুরি সিটি কর্পোরেশনের বিষয় নয় সে কারণে তাদের সেভাবে দায়ী করাও যায় না। এরপরেই আসে নাগরিক জীবনের আরেক অভিশাপ বৃষ্টির কারণে সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতা। বহু বছর ধরে বৃষ্টি হলেই এ জলাবদ্ধতা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন এ নিয়ে বহু কথা বলেছে। এ ব্যাপারে মেয়রদের দেয়া সকল প্রতিশ্রæতিই পানিতে ডুবে আছে। কয়েকদিন আগেও বৃষ্টির পানিতে মালিবাগে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তার মধ্যে একটি রিকশা গর্তে পড়ে আরোহিণী নারীর দুরবস্থার ছবি অনেকেই দেখেছেন। কোনো সরকার, কোনো স্বাপ্নিক রাজনৈতিক নেতা, কোনো পরিকল্পনাবিদ, কোনো বিজ্ঞানী কারো মাথা থেকেই এ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তিলাভের কোনো পন্থা-পরামর্শ এ যাবত মেলেনি। তাই বৃষ্টি হলেই মালিবাগ এলাকায় চলাচলকারীদের যন্ত্রণা পোহাতেই হয়। মেয়ররা আরো পারেননি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিভিন্ন মহল্লায় ভাঙা-গর্ত-খানাখন্দে ভরা রাস্তাগুলো ঠিক করতে। টিভি চ্যানেলগুলোর রিপোর্টে ও সংবাদপত্রে সেসব রাস্তার ছবি ছাপা হয়, মানুষের প্রচন্ড দুর্ভোগ চোখে পড়ে, কিন্তু মেরামতের কোনো ব্যবস্থা হয় না। দুই সিটির প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের কোনও না কোনও রাস্তা ভাঙা। ঢাকা উত্তরের উত্তরা, খিলক্ষেত, লেকসিটির প্রবেশ সড়ক, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, মগবাজার, রামপুরা এবং ঢাকা দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, হাজারীবাগ, ইসলামবাগ, মিরহাজীর বাগ প্রভৃতি এলাকার রাস্তা ভেঙেচুরে একাকার হয়ে আছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হলেও বড় ধরনের অগ্রগতি তেমন চোখে পড়ে না। একইভাবে মশার অত্যাচারে নগরবাসী অতিষ্ঠ হলেও সিটি কর্পোরেশন তা দমনে সফলতা পায়নি। পত্রিকায় বেশি লেখালেখি হলে কিছু কিছু এলাকায় ফগার মেশিন নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের লোকজন ধোঁয়া ছড়িয়ে যায়। একদিন পরই সেসব এলাকার অবস্থা আগের মতই হয়ে যায়। অন্যান্য এলাকার কথা অকহতব্য। মশারি আর মশার কয়েল তাদের রাতের সাথী। যাদের সে সামর্থ্যও নেই তারা রাতভর কামড়ের অসহায় শিকার হয়ে নিজেদের রক্তে মশককুলকে বাঁচিয়ে রাখে।
নগরীর এসব নিত্য যন্ত্রণার সাথে যোগ হয়েছে রাস্তা খোঁড়াখুড়ি। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন মূলক কাজে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, খিলগাঁও, বাসাবো, মানিকনগর, গুলিস্তান, নিউমার্কেট, আরামবাগ, রাজারবাগ, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, নাজিম উদ্দিন রোড, হোসেনি দালান রোডসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, রামপুরা, বাড্ডা, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, বনানী, গুলশান, কালাচাঁদপুর, জোয়ার সাহারা, মিরপুর কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, পীরেরবাগ, তালতলা, ইব্রাহিমপুর, মিরপুর-১১, ১০ ও ১৪ নম্বরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্তমানে যে দু’টি সমস্যা পুরো নগরবাসীকে মারাত্মকভাবে পীড়া দিচ্ছে সে দু’টি হচ্ছে ভাঙা রাস্তা ও জলাবদ্ধতা। বছরের পর বছর ধরে জিঁইয়ে থাকা এসব সমস্যার যেন শেষ নেই। এমনকি দুই মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর নানা আশ্বাস দিলেও শেষ হয়নি।
মেয়র নির্বাচিত হওয়ার দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন ২৭ এপ্রিল নগর ভবনে সাংবাদিকদের সাথে খোলাখুলি কথা বলেন। তিনি তার প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে অনেকটাই সফল বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, সমস্যা সংকুল এই নগরীর সেবাখাতের মৌলিক প্রয়োজন মিটানোর উপর গুরুত্ব দিয়েই তিনি মেয়র পদে দায়িত্ব পালনের প্রথম দু’বছর অতিক্রম করেছেন। তার কথামত, প্রথম দু’বছরে পরিচ্ছন্নতা, যানজট নিরসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পার্ক, খেলার মাঠ দখলমুক্ত করাসহ মৌলিক নাগরিক সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ইতোমধ্যেই ১২টি খেলার মাঠ তিনি উদ্ধার করেছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বেশ কিছু সেকেন্ডারি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। মেয়র আরো জানান যে, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু, ডিজিটাল এলইডি লাইট স্থাপনসহ আরও কিছু পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। মহানগরীতে বাস্তবায়নের পথে থাকা কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কথাও জানান তিনি।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। এরপরেও আমরা কাজ করছি। আগামী জুনের মধ্যে শান্তিনগর এলাকায় ৮৫ ভাগ জলাবদ্ধতা কমবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার ওয়্যারলেস মোড়, শান্তিনগর, কাকরাইল, রাজারবাগ, গুলিস্তান, খিলগাঁও, মানিকনগর, মুগদা, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, পুরান ঢাকার চানখারপুলের নাজিমউদ্দিন রোডসহ বেশ কিছু এলাকার ড্রেনের সংস্কারকাজ চলছে। এগুলোর কাজ শেষ হলে চলতি মৌসুমেই এর সুফল পাওয়া যাবে।
ঢাকাকে স্মার্ট সিটি করার ক্ষেত্রে কতটা অগ্রসর হয়েছেন সে প্রসঙ্গে সাঈদ খোকন এলইডি বাতি স্থাপনের কথা বলেন। তিনি বলেন, অ্যাপসের মাধ্যমে সেগুলোর আলো বাড়ানো কমানোর কাজ চলছে। সিটি কর্পোরেশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর অফিসে হাজিরা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাও ডিজিটালাইজ করার চিন্তা করা হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকদের কারো কারো অভিমত যে দু’বছরের তুলনামূলক কর্মকান্ডে ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক এগিয়ে আছেন। বিশেষ করে ঢাকাকে সবুজ নগরী হিসেবে গড়ার ঘোষণা দিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাস্তাগুলোর পাশে টবে গাছের চারার ব্যবস্থা করা ও সৌন্দর্য্য বাড়াতে নগরীর বিভিন্ন দেয়ালে নানা ধরনের লতানো গাছের চারা লাগানোর ব্যবস্থা করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। কূটনৈতিক পাড়া গুলশানসহ বনানীর নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া তার আরেকটি সাফল্য।
কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হচ্ছে দু’ সিটি কর্পোরেশনের দু’ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন আলোকসজ্জাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করলেও ঢাকা উত্তর কোনো কর্মসূচি নেয়নি।
প্রাচীন আমলেও সভ্যদেশে নগরগুলোতে নগরপাল ছিলেন। একালে তাদের নাম মেয়র। শোনা যায়, আগের দিনের নগরপালদের অনেকেই সরেজমিনে নগরবাসীদের খোঁজখবর নিতেন। এখন মহানগরী ঢাকার জনসংখ্যা এত বেশি যে তাদের খোঁজ খবর নেয়া কোনো মেয়রের পক্ষেই সম্ভব নয়। নগরবাসী তা আশাও করেন না। নগরবাসীকে নানা রকম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। সেসব দুর্ভোগ থেকে যত দ্রæত পারা যায়, দুই মেয়র তাদের মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা করবেন, নাগরিক সেবাদানের মহতী দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন, এটাই নগরবাসীর প্রত্যাশা।
য় লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।