Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কক্সবাজারে নামবে আন্তর্জাতিক সুপরিসর বিমান

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


আগামী শনিবার প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন এ বিমানে চড়ে : পর্যটন শিল্প বিকাশে হবে নতুন দিগন্তের সূচনা
উমর ফারুক আলহাদী : কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নয়ন করার প্রথম দফার কাজ শেষ হওয়ার পথে। ইতোমধ্যে  রানওয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী শনিবার বোয়িং কোম্পিানীর সুপরিসর উড়োজাহাজ বোয়িং-৭৩৭-৮০০ নতুন এ বিমানটি  কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে যাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের নতুন প্রজন্মের ১৬২ আসনের এ বোয়িং বিমান। কক্সবাজার বিমানবন্দরের ইতিহাসে এই প্রথম আন্তর্জজাতিক মানের কোন সুপরিসর উড়োজাহাজ অবতরণ করতে যাচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক দেড় মাস পর থেকে প্রতি সপ্তাহে সুপরিসর বোয়িং-৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ দিয়ে একটি করে ফ্লাইট ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা পরিচালনা করবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের উন্নয়নের আরো একটি মাইল ফলক কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করা। এতে করে দেশের পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্তের সুচনা হতে যাচ্ছে। বিমানবন্দরের উন্নয় প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক মানের সুপরিসর বিমান চলাচল করতে পারবে। বিদেশী পর্যটকরা সরাসরি পর্যটন নগরী কক্সবাজার আসা যাওয়া করতে পারবেন। পর্যটন খাতে আয় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গণি চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে উন্নীত করায় দেশের পর্যটন শিল্পের আরো বিকাশ ঘটবে।
তিনি বলেন, এ বছরের শেষের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে পুরোপুরিভাবে চালূ করা সম্ভব হবে। চেয়ারম্যান বলেন, ব্রিটশ শাসনামলে নির্মাণ করা হয়  কক্সবাজার বিমানবন্দর। সময়ের পরিক্রমায় পর্যটন এলাকা হিসেবে দেশী বিদেশে কক্সবাজার হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি বিমান যোগাযোগের গুরুত্বও বেড়েছে। ফলে এখানকার বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার দাবি ছিল দীর্ঘদিন ধরে। সরকার তা বাস্তবায়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতার এটি উন্নয়নের আরো একটি মাইল ফলক। দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইতিহাসে আরো একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলো কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তিনি বলেন, কক্সবাজর বিমানবন্দর থেকে মাত্র দেড় ঘন্টায় চীনের বিমান্বন্দরে যাওয়া সম্ভব হবে।  
কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল হাসিব বলেন,   রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬৭৭৫ ফুট থেকে ৯০০০ ফুট, রানওয়ের চওড়া ১৫০ ফুট থেকে ২০০ ফুট, এয়ারফিল্ড লাইটিং সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিংয়ের যন্ত্রপাতি ক্রয়, আইএলএস এবং ডিভিওআরসহ প্রায় ৯০ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তিনি আরো জানান, ২০১৮ সালে কক্সবাজার বিমান বন্দরে আন্তর্জাতিক বিমানের ফ্লাইট অবতরণ করবে। পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করা, সমুদ্রসীমা রক্ষা, কক্সবাজারের উন্নয়নসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সুবিধার্থে সুপরিসর বিমান চলাচল নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর। বাণিজ্যিক গুরুত্বের পাশাপাশি পর্যটনের প্রসারও ঘটবে।
জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আকতার হোসাইন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মানিক কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে প্রায় ৮০ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রধান অংশ হচ্ছে স্পার্ট। এটি গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়। এই প্রকল্পের মেয়াদকাল ৩০ মাস হলেও কয়েক মাস বাকি থাকতেই কাজ শেষ করার বিষয়টি মাথায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি।
এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। তৎমধ্যে ৪৪০৯টি ভূমিহীন পরিবারকে বাঁকখালী নদীর পার্শ্বে খুরুস্কুলে পুনর্বাসিত করা হবে। বাঁকখালী নদীর উপর এলজিইডি কর্তৃক নির্মিতব্য সংযোগ সড়কের জন্য ২০০ কোটি টাকা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়িত পুনর্বাসন প্রকল্পের উন্নয়নের জন্য ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ের এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৮ কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের প্রকল্পও ইতোমধ্যে একনেকের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
২০০৯ সালের অক্টোবরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ যাত্রা শুরু হয়। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ ২০১৩ সালের জুন মাসে সমাপ্তির কথা থাকলেও তখন আর হয়ে উঠেনি। সরকারের মহা-পরিকল্পনার আওতায় দ্বিতীয় ধাপের কাজের জন্য ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যা শুরুর কথা ছিল ২০১৩ সালে। ‘ডেভেলপমেন্ট অব কক্সবাজার এয়ারপোর্ট’ প্রকল্প’ নামে ৩০২ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রথম ধাপের কাজ ২০১২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নানা কারণে তাও হয়নি। তবে দেরিতে হলেও সরকার এ বিমানবন্দর আধুনিকায়নে উদ্যোগ নেয়। অবশেষে ২০১৫ সালের ২ জুলাই গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে’র মাধ্যমে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (প্রথম দফায়) স¤প্রসারণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ