পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বের তেল সমৃদ্ধ দেশ সউদী আরব। তেল বিক্রির অর্থে সউদী আরবে যে বিলাসবহুল জীবন সেটি হয়তো আর বেশি দিন টিকবে না। এ ধারণা এখন ধীরে-ধীরে জোরালো হচ্ছে। সউদী আরবের সরকারও সে বিষয়টি বুঝতে পারছে। শুধু তেল বিক্রি করে যে অর্থনীতি টিকিয়ে রাখা যাবে না সেটি এখন পরিষ্কার। সউদী আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান দেশের ভেতরে বিনোদন এবং অবকাশ যাপনের শিল্প গড়ে তুলতে হবে। এটি গড়ে তুলতে পারলে প্রতি বছর ২২ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।
আল-আরাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে এক সাক্ষাৎকারে সউদী আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স ভবিষ্যতে দেশটির অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তুলে ধরেন। মোহাম্মদ বিন সালমানকে সউদী আরবের অর্থনৈতিক সংস্কারের মূল শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়
মি: সালমান বলেন, দেশের ভেতরে অবকাশ যাপনের এবং বিনোদনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সউদী আরবের নাগরিকরা বিদেশে গিয়ে প্রতি বছর ২২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। এ অর্থ দেশের ভেতরে রাখতে পারলে তেল বিক্রির উপর নির্ভরশীলতা কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
সা¤প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যাপকভাবে কমে গেছে এবং শিগগিরই এ দাম খুব একটা বাড়বে বলে মনে হচ্ছে না। তাছাড়া ইরানের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেবার পর দেশটিও এখন তেলের বাজারে এসেছে। ফলে বিশ্ববাজারে তেলের যোগান আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জনাব সালমান বলেছেন, তেলের যাই হোক না কেন সউদী আরবের অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে যেতেই হবে।
তিনি বলেন, ‘তেলের দামের সাথে অর্থনৈতিক ভিশনের কোন সম্পর্ক নেই। তেলের দাম যদি বাড়ে তাহলে সেটি আমাদের জন্য ভালো হবে। তেলের দাম যদি কম থাকে সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে আমাদের অর্থনৈতিক ভিশনের মূল লক্ষ্য পরিচালিত হচ্ছে।
সউদী আরবের ক্রাউন প্রিন্স চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ২০২০ সালে যদি তেল বন্ধ হয়ে যায়, তাহলেও সউদী আরব চলতে পারবে। জনাব সালমান বলেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে বর্তমানে সউদী আরবের মানুষের জীবনযাত্রা পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত জীবনের মধ্যে অন্যতম।
‘সমস্যা হচ্ছে মানুষের হাতে অর্থ থাকলেও সেগুলো খরচ করার কোন জায়গা দেশের ভেতরে নেই। পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের উপার্জন সউদী আরবের চেয়ে কম হওয়া সত্তে¡ও তাদের জীবনযাত্রার মান ভালো। কারণ সেসব দেশে বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যবস্থা আছে। সেসব দেশের নাগরিকদের উপার্জন কম হলেও তারা সে অর্থ খরচ করতে পারে এবং উপভোগ করতে পারে,’ বলছিলেন জনাব সালমান।
তিনি মনে করেন জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামিক জাদুঘর গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সউদী কর্তৃপক্ষের। এ জাদুঘর যাতে ইউনেস্কো দ্বারা স্বীকৃত হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করবে তারা। জনাব সালমান বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক দেশে একটি ইসলামিক জাদুঘর নেই। এটা কীভাবে সম্ভব? যখন কোন অমুসলিম সউদী আরবে আসে তখন সে ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানতে পারে না । কারণ সে কোন জায়গা খুঁজে পায় না যেখানে গিয়ে ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে’।
তিনি জানান, সউদী আরব সরকার বর্তমানে দু’ভাবে তাদের আয় বাড়ানোর চেষ্টা করছে। একটি হচ্ছে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং অপরটি হচ্ছে তেল বিক্রির বাইরে অন্য খাত থেকে আয় করা। সউদী আরব সরকার ‘গ্রিন কার্ড’ ব্যবস্থা চালু করার বিষয়টি ভাবছে বলে জানান ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স।
‘আমাদের দেশে দেশে অনেক বিদেশী বসবাস করে। এরা মুসলিম অথবা আরব। অনেকে দশ-বিশ বছর ধরে বসবাস করছে। অনেকে সউদী আরবে স্থায়ী হয়ে গেছে। কিন্তু তারা দেশের বাইরে অর্থ পাঠিয়ে দিচ্ছে। তারা সউদী আরবের অর্থনীতি এবং সমাজের অংশীদার হতে চায়। কিন্তু তারা পারছে না। আমরা যদি তাদের সে সুযোগ দেই তাহলে আমাদের দেশে বিনিয়োগ বাড়বে,’ বলছিলেন জনাব সালমান।
তিনি বলেন, এর অর্থ বিদেশীদের সউদী আরবে নাগরিকত্ব প্রদান নয়, বরং তারা যাতে স্বাধীনভাবে থাকতে পারে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এটি চালু হবে বলে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স আশা করেন। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।