পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুলিশ বলছে আত্মহত্যা, স্বজনরা বলছে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড
কক্সবাজার অফিস : কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেল কক্ষ থেকে নাইক্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. ইসমাইল হোসেনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার নিয়ে চলছে তোলপাড়। এনিয়ে মাঠে-ঘাটে, নাইক্ষংছড়িতে শুনা যাচ্ছে নানা কথা। পুলিশ এটিকে আত্মহত্যা বললেও স্বজনরা তা মানতে নারাজ। তারা বলছেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। গতকাল কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. ইসমাইলের স্ত্রী ও মেয়েরা অভিযোগ করে বলেন, রাজনৈতিক কারণে ডা. ইসমাইলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন তারাও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। তবে তারা এজন্য কারো নাম বলেনি। তারা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
গত ৩০ এপ্রিল শহরের লালদিঘীর পাড়স্থ হোটেল পালংকির ১০৭ নম্বর কক্ষ থেকে পুলিশ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। তার বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ির মহাজন ঘোনা এলাকায়।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. কামরুল আজম জানান, গত কয়েকদিন ধরে মোহাম্মদ ইসমাইল ওই হোটেলে অবস্থান করছিলেন। সবশেষ গত ২৯ এপ্রিল রাতে হোটেলের কক্ষে ঢোকার পর ৩০ এপ্রিল বিকাল পর্যন্ত কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় কর্তৃপক্ষ। পুলিশ কক্ষটির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে। গত শুক্রবার বিকালে তিনি হোটেলে উঠেন। শনিবার দিনগত রাতের কোনো এক সময় তিনি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। তাঁর মতে প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও ময়না তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
পুলিশের ভাষ্যমতে দরজা ভেঙ্গে কক্ষে ঢুকে দেখা যায়, রুমের ইন্টারকম টেলিফোনের তার খুলে তা দিয়েই ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগান তিনি। রুমের সিঙ্গেল সোফার উপর বসার চেয়ার দিয়ে উপরে উঠে গলায় ফাঁস লাগিয়েছেন বলে পজিশন দেখে মনে হয়েছে। এসময় রুমের টেলিভিশন ও তার মুঠোফোন চালু অবস্থায় ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসমাইল মেহেদী নামে একটি একাউন্ট পরিচালনা করে আসছিলেন। ওই একাউন্টে তিনি কয়েকদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের অসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করে স্ট্যাস্টাস দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ শনিবার রাত ৮টার দিকে শফিউল্লাহ নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল বলে স্ট্যাস্টাস দেন। এই কারণে সন্দেহের তীর শফিউল্লাহর দিকে গেলেও শফিউল্লাহ বিষয়টি উড়িয়ে দিলে বলেন, এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহŸায়ক ও সদর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে ডা. ইসমাইল তাকে কল করে ২৩ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেন।
গতকাল সকালে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মূখোমূখী হন নিহত আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইলের স্বজনরা। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিহত ইসমাইলের স্ত্রী জোছনা আক্তার, বড় মেয়ে প্রাইমারী শিক্ষক উম্মে আইমান তান্নি, ছোট মেয়ে আফিফা আইমান, স্ত্রীর ভাই আখতার আহমদ ও ছালামত উল্লাহ।
লিখিত বক্তব্যে মেয়ে উম্মে আইমান তান্নি বলেন, তার বাবা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা অওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী ছিলেন। ২৭ এপ্রিল তিনি কাউন্সিলের কাজেই ঘর থেকে কক্সবাজার আসেন। তার মতে কথিত আত্মহত্যার রাতে সাড়ে এগারটায় তার বাবা তার সাথে স্বাভাবিক কথা বলেছেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন, পুলিশের সিজার লিষ্টে রুমের চাবী না থাকাসহ কয়েকটি আলামত বলছে এটি আত্ম হত্যা নয় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
তিনি আরো বলেন, হোটেলের যে কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় তার বাবার মৃত্যুদেহ পাওয়া গেছে সোনে সোফার উপর টি টেবিল এবং এর উপর চেয়ার দিয়ে তিনি ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলেছেন বলে বলা হলেও এভাবে শান্ত অবস্থায় একজন লোক ফাঁিসতে ঝুলতে পারেনা। তার দাপাদাপিতে পায়ের নিচের চেয়ার সোফা তচনচ হয়ে যেত। ফাঁদছাড়া একটি রশি গলায় আটকিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলার বিষয়টি অভিজ্ঞজনরা মেনে নিতে নারাজ। এছাড়া তার গলায় একাধিক দাগ আছে এবং তার ডান হাতের মধ্য আঙ্গুল ভাঙাছিল বেল দাবী করে মেয়ে তান্নি, এসব বিষয় আত্মহত্যা নয় বরং পরিকল্পিত হত্যার আলামত বলে দাবী করেন। সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা রুমে উঠার দিন থেকে তার লাশ বের করে আনা পর্যন্ত সিসি টিভির পোটেজ দাবী করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. ইসমাইলের স্বজনরা এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবী করলেও এজন্য সুনির্দিষ্ট কারো নাম বলেননি। তবে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলে দাবী করে নিরাপত্তার দাবী জানান।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।