Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুনামগঞ্জে দেড় লাখ হেক্টর জমির বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

| প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলার প্রায় সবক’টি হাওরের ফসল ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। অতি বৃষ্টিপাতে পানিবদ্ধতায় ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওর রক্ষাবাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ও জেলার ২ লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবশ্য এটি স্থানীয় কৃষি বিভাগের হিসাব মতে। তবে বাস্তবে এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো অনেক বেশি। ২ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হয় এ জেলায়। এবার আবাদী জমির ৮০ ভাগ ফসলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাওর-বাঁওড় বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলা। এ জেলার সম্পদই ধান, মাছ ও পাথর । বিশাল বিশাল হাওরে প্রচুর ধান ও মাছ উৎপাদন হয়। এ জেলার হাওর দেখতে সমুদ্রের মতো মনে হয়। ১১টি উপজেলার কৃষকরা এ জেলার হাওরের বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল । এ ফসল দিয়ে তাদের সারা বছরের আহার হয়। এ ফসল দিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা থেকে শুরু করে বিয়ে শাদিসহ সকল ব্যয় নির্বাহ হয়। কিন্তু এবার এ অঞ্চলের কৃষকদের কপাল পুড়েছে। তাদের নিঃস্ব করে ফেলেছে কিছুসংখ্যক অসাধু ঠিকাদার ও পিআইসির সদস্যরা। তাদের পকেট ভারী করার লক্ষ্যে কৃষকদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। তাদের মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছে। দুর্বল হাওর রক্ষাবাঁধ নির্মান করে ৩ লাখ ৩৩ হাজার কৃষিজীবী পরিবারকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। ঠিকমত বাঁধে কাজ করেনি। ফলে বাঁধ ভেঙে ভরা ফসলের সকল হাওর ডুবে গেছে। ঠিকাদার ও পিআইসির সদস্যরা প্রতিবছরই এভাবে কৃষকদের ভাগ্য নিয়ে খেলে।
এবার তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪২টি হাওরে কাজ নেয় । এ হাওরগুলো জেলার উল্লেখযোগ্য হাওর। এ হাওরে হাওর রক্ষাবাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য সরকার থেকে বরাদ্দ দেয়া হয় প্রায় ৭৯ কোটি টাকা। ৭৬টি ঠিকাদার ও ২৩৭টি পিআইসির মাধ্যমে হাওর রক্ষাবাঁধ করানো হয়। ঠিকমত ও সময়মত বাঁধে কাজ করেনি তারা। ২৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যে বাঁধে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও মার্চের ভেতর কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার ও পিআইসির সদস্যরা। ফলে অতিবৃষ্টিপাতে ঢল ও পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এক এক করে হাওর রক্ষাবাঁধ ভেঙে হাওর ডুবতে থাকে। সরকার থেকে এত টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও হাওর রক্ষা হয় না। তাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে জেলার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়তো রয়েছেই । সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহেদুল হক ইনকিলাবকে বলেন, এ জেলায় এবার ২ লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর বোরো জমি আবাদ করা হয়েছিল। যা থেকে পাওয়া যেত সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান। চাল হতো ৮ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। বাজার মূল্য ছিল ২ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। অতিবৃষ্টিপাতে ও বাঁধ ভেঙে ১ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। সম্প্রতি ডুবে যাওয়া শনির হাওর ও পাকনার হাওরের ফসলসহ ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি জানান, পুরোপুরি তলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এ হিসাব অন্তর্ভুক্ত হয় না। শনির হাওরে আবাদী জমির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৫৬০ হেক্টর এবং পাকনার হাওরে ছিল ৯ হাজর ৪৫৫ হেক্টর । এ দুটি হাওরের ফসল গত দুদিনে তলিয়ে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুনামগঞ্জ

১১ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ